যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ-এর অসংখ্য স্থানে সুন্নত পালন করার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক-এর মা’রিফত-মুহব্বত ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উভয়ের রেযামন্দি হাছিলের প্রধান ও একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ‘সুন্নতে রসূল’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পরিপূর্ণ বা সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অনুসরণ-অনুকরণ করা।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী কালামুল্লাহ শরীফ-এর বরাত দিয়ে বলেন, মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহ পাককে মুহব্বত কর বা আল্লাহ পাক-এর মুহব্বত হাছিল করতে চাও, তবে তোমরা আমার অনুসরণ কর। আল্লাহ পাক তোমাদের মুহব্বত করবেন এবং তোমাদের গুনাহখাতা ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ পাক অত্যধিক ক্ষমাশীল ও দয়ালু।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, সুন্নতের বহু ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে মুহব্বত করলো, সে যেন আমাকেই মুহব্বত করলো। আর যে ব্যক্তি আমাকে মুহব্বত করলো, সে আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, এক কথায় সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পুঙ্খানুপুঙ্খ (ইতায়াত) অনুসরণ ও অনুকরণ করতে হবে। কারণ হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণ করার অর্থই হলো আল্লাহ পাক-এর অনুসরণ করা। তাই আল্লাহ পাক বলেন, “যে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণ করলো, সে আল্লাহ পাক-এরই অনুসরণ করলো।” (সুবহানাল্লাহ)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজ্জের সময়, আরাফাতের ময়দানে লক্ষ লক্ষ ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণের উপস্থিতিতে বলেন, হযরত মালিক বিন আনাস রদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, “আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি জিনিস রেখে গেলাম, যতদিন তোমরা এ দু’টি জিনিস আঁকড়িয়ে থাকবে, ততদিন তোমরা গুমরাহ্ হবেনা। একটি হলো- আল্লাহ পাক-এর কিতাব, আর দ্বিতীয়টি হলো- আমার সুন্নত।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, সুন্নতকে মুহব্বত করার অর্থ হলো সুন্নতসমূহ আমল করা। সুন্নতের আমল না করে শুধু মুখে মুখে মুহব্বত করলে এই ফযীলত অর্জন করা যাবে না। সুন্নতের ফযীলত সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “আমার উম্মতের ফেৎনা-ফাসাদের সময় (অর্থাৎ যখন উম্মত সুন্নত ছেড়ে দিবে) যদি কোন ব্যক্তি একটি সুন্নতকে আঁকড়িয়ে ধরে (অর্থাৎ আমল করে), তবে তাকে একশত শহীদের সওয়াব দান করা হবে।” (সুবহানাল্লাহ)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, উক্ত হাদীছ শরীফ-এ যদিও একশত শহীদের কথা বলা হয়েছে, মূলতঃ এটা সাধারণভাবে বুঝানোর জন্য বলা হয়েছে, নচেৎ সকলেই একমত যে, দুনিয়ার সকলের সকল আমলের চেয়েও একটি সুন্নতের ফযীলত লক্ষ কোটি গুণেরও বেশি। এক কথায় একটি সুন্নতের ফযীলত দুনিয়ার সমস্ত শহীদের ফযীলতের চেয়েও বেশি। (সুবহানাল্লাহ)।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ্ পাক-এর কিতাব ‘কুরআন শরীফকে’ অনুসরণ-অনুকরণ করা যেরূপ সকলের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য, তদ্রুপ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীছ শরীফ তথা সুন্নাহ্কে অনুসরণ-অনুকরণ করাও সকলের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, হাম্বলী মাযহাবের ইমাম ও প্রতিষ্ঠাতা, ইমামুল মুহাদ্দিসীন, ফখরুল ফুক্বাহা হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি ফতওয়া দিয়েছেন যে, “সমস্ত সুন্নতগুলোই পালন করা ফরজ।”
তিনি যখন এ ফতওয়া দিলেন, তখন সমসাময়িক সকল ইমাম-মুজতাহিদ এসে বললেন! হে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি! আমরা তো আপনাকে বড় আলিম, ফক্বীহ ও ইমাম হিসেবে জানি। আপনি এটা কি ফতওয়া দিলেন?
“সমস্ত সুন্নত পালন করা ফরয” আপনার এ ফতওয়ার পিছনে কোন দলীল আছে কি? জবাবে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন- হ্যাঁ আমার দলীল রয়েছে, কুরআন শরীফ থেকে কেৎয়ী দলীল রয়েছে। তখন তিনি এ আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করেন, “রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের যা আদেশ করেন, তা আঁকড়িয়ে ধর। আর যার থেকে বিরত থাকতে বলেন, তার থেকে বিরত থাক। আল্লাহ পাককে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠিন শাস্তিদাতা।”
আয়াত শরীফ শুনে সকলেই লা-জাওয়াব হয়ে গেলেন এবং বললেন আমরা দলীল পেয়েছি এবং বুঝতে পেরেছি যে, সুন্নত পালন করা ফরয। কারণ স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আর আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ পালন করা হচ্ছে ফরয।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আমাদের প্রত্যেকের আমলগুলো সুন্নত মোতাবেক হওয়া বাঞ্ছনীয়। সুন্নতের খিলাফ আমল করে কোনদিনও নেক আমল অর্থাৎ আমলে সালেহ-এর দাবি করা যায় না। একমাত্র সুন্নাহ্ই হলো আমলে সালেহ তথা নেক আমলের অন্তর্ভুক্ত। সুন্নতের অর্থাৎ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণ-অনুকরণ ব্যতীত আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উভয়ের সন্তুষ্টি অর্জন করা কখনো সম্ভব নয়। (০২-০২-০৯)