যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, মুহইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেছেন, “আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা হলো- ‘কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম কখনও ভুল করেননি। ইচ্ছাকৃত তো নয়ই, অনিচ্ছাকৃতও নয়।’ অর্থাৎ নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ কোন ভুলই করেননি। (‘শরহে আক্বাইদে নসফী, ফিক্বহে আকবর, তাকমীলুল ঈমান, আক্বাইদে হাক্কাহ)। অর্থাৎ সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণই হলেন আল্লাহ্ পাক-এর খাছ ও মনোনীত বান্দাহ্গণের অন্তর্ভুক্ত। তাঁরা প্রত্যেকেই ওহীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।”
পবিত্র আশুরা সম্পর্কিত এক আলোচনা প্রসঙ্গে গতকাল রাজারবাগ শরীফ-এ তিনি এসব কথা বলেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, কুরআন শরীফ-এর একাধিক স্থানে ইরশাদ হয়েছে, “আমি তাঁদের (নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণের) প্রতি ওহী পাঠাতাম।” (সূরা ইউসূফ-১০৯, নহল-৪৩, আম্বিয়া-৭)। অর্থাৎ নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের যাবতীয় কার্যাবলীই ওহীর দ্বারা (আল্লাহ পাক কর্তৃক) পরিচালিত হতো।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আক্বাঈদের কিতাবে বর্ণিত হয়েছে, “সকল আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালাম মা’ছূম বা নিষ্পাপ।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আরো বলেন, “সকল আম্বিয়া আলাইহিমুস্ সালাম ছগীরা, কবীরা, কুফরী, শিরকী এবং অপছন্দনীয় কাজ হতেও পবিত্র।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের ভুল সম্পর্কে যারা বলে থাকে, আক্বাঈদ সম্পর্কে অজ্ঞতা ও সঠিক ইতিহাস না জানার কারণেই তারা তা বলে থাকে। যেমন আশুরা উপলক্ষে আলোচনা করতে গিয়ে কেউ কেউ বলে থাকে যে, ‘আল্লাহ পাক-এর নবী হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ ব্যতীতই হিজরত করেছেন এবং গাছের নিকট আশ্রয় চেয়েছেন। তাই তিনি গযব স্বরূপ গাছের মধ্যে করাত দ্বারা করাত দ্বারা দ্বিখণ্ডিত হয়েছেন।’ (নাঊযুবিল্লাহ্)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মূলতঃ তাদের একথা সঠিক নয় বরং কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। সঠিক ও প্রকৃত ঘটনা হলো- আল্লাহ পাক এর নবী হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম যখন তাঁর কওমের মধ্যে দ্বীন প্রচার করতে লাগলেন, তখন তাঁর কওমের দুষ্ট লোকেরা মনে করলো যে, হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম যদি এভাবে দ্বীন প্রচার করতে থাকেন তবে তাদের কোন অস্তিত্বই যমীনে থাকবে না। তাদের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতাও শেষ হয়ে যাবে। তাই তারা আল্লাহ পাক-এর নবী হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালামকে শহীদ করার পরিকল্পনা করলো।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ পাক হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালামকে ওহী করলেন যে, আপনি হিজরত করে অন্যত্র চলে যান। আল্লাহ পাক-এরই নির্দেশে হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম অন্যত্র হিজরত করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন।
তাঁর ক্বওম এটা জানতে পেরে তাঁর পিছনে পিছনে ছুটতে লাগল। এদিকে আল্লাহ পাক-এর নবী হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম যখন যাচ্ছিলেন তখন পশু-পাখি, গাছ-পালা, সকলেই হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম-এর নিকট আরজু করছিল যে, হে হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম আপনি আমাদের নিকট আসুন আমরা আপনার বিশ্রামের ব্যবস্থার মাধ্যমে খিদমত করে ধন্য হতে চাই।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, আল্লাহ পাক-এর নবী হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহ পাক-এর নির্দেশের অপেক্ষায় রইলেন। কারণ তিনি আল্লাহ পাক-এর নবী, কস্মিনকালেও তিনি মাখলুকাতের কথা অনুযায়ী কাজ করতে পারেন না।
হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম চলতে লাগলেন হঠাৎ সামনে একটি বিশাল আকৃতির গাছ পড়লো, গাছটি দুই ভাগ হয়ে গেল এবং বললো হে আল্লাহ পাক-এর সম্মানিত নবী হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম আপনি আমার ভিতরে প্রবেশ করুন।
আল্লাহ পাক-এর পক্ষ থেকেও নির্দেশ হলো, হে আমার নবী হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম আপনি এ গাছের ভিতরে প্রবেশ করুন, তিনি সেই গাছের ভিতর প্রবেশ করলেন, গাছটি জোড়া লেগে গেল। ইবলিস করলো কি- উনার কোর্তা মুবারক বাহির থেকে কিছু অংশ ধরে রেখেছিল যার ফলে উনার কোর্তা মুবারকের কিছু অংশ বাহির থেকে দেখা যাচ্ছিল।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, তাঁর ক্বওমের লোকেরা খুঁজতে খুঁজতে যখন সেখানে এসে পৌছল তখন ইবলিস মানুষের ছুরত ধারণ করে এসে বললো তোমরা যাঁকে খুঁজছ তিনি এ গাছের ভিতরেই আছেন। তারা বললো এর কি প্রমাণ রয়েছে? ইবলিস বললো, এই দেখুন তাঁর কোর্তা মুবারকের কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে।
তখন তারা বললো তাহলে এখন কি করা যায়? ইবলিস বললো এক কাজ করো, করাত এনে গাছটিকে উপর থেকে চিড়ে দিখণ্ডিত করে ফেল। তাহলেই হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম শহীদ হয়ে যাবেন। তখন তারা তাই করলো। করাত দিয়ে গাছের উপর থেকে চিড়তে চিড়তে যখন করাত হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম-এর মাথা মুবারক স্পর্শ করলো, তখন তিনি একটু ‘উহ’ শব্দ করেছিলেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মূলতঃ তিনি ‘উহ’ শব্দ করেছিলেন এভেবে যে হাদীছ শরীফ-এ রয়েছে কারো অসুখ হলে সে যদি উহ আহ করে তবে তার সেই উহ আহ তাসবীহ তুল্য হবে। অর্থাৎ অসুস্থতার সময় ‘উহ’ আহ করা মর্যাদা বৃদ্ধির কারণ। এ কারণেই তিনি ‘উহ’ শব্দ উচ্চারণ করেছিলেন। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক যখন বলেন যে, হে আমার নবী হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম আপনি আমার নবী; উহ শব্দ করা আপনার শানের খেলাফ! আল্লাহ পাক শুধু এতটুকু বললেন।
নবী রসূল আলাইহিমুস সালামগণ আল্লাহ পাক-এর আদেশ নির্দেশের প্রতি কতটুকু ইস্তিকামত! করাত দিয়ে মাথা মুবারক থেকে পা মুবারক পর্যন্ত সম্পূর্ণ শরীর মুবারক দ্বিখণ্ডিত করে ফেলা হলো অথচ তিনি টু শব্দও করলেন না। (সুবহানাল্লাহ)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মূলতঃ উক্ত ঘটনার মাধ্যমে আল্লাহ পাক প্রমাণ করে দিলেন যে, আল্লাহ পাক-এর নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ আল্লাহ পাক-এর আদেশ-নির্দেশ কতটুকু দৃঢ়তার সাথে পালন করেন। উনারা যে আল্লাহ পাক-এর আদেশ নির্দেশ ছাড়া কিছুই বলেন না ও করেন না এ ঘটনাই তার বাস্তব প্রমাণ। যদি তাই হয়; তাহলে একথা বলা কি করে জায়িয ও শরীয়ত সম্মত হতে পারে যে, আল্লাহ পাক-এর নবী হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ ব্যতীতই হিজরত করেছেন এবং গাছের নিকট আশ্রয় চেয়েছেন। তাই তিনি গযব স্বরূপ গাছের মধ্যে করাত দ্বারা দ্বিখণ্ডিত হয়েছেন। (নাঊযুবিল্লাহ) বস্তুতঃ এরূপ বলা বা এরূপ আক্বীদা পোষণ করা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন, মুল কথা হলো- যারা আশুরা উপলক্ষে আলোচনা করতে গিয়ে বলে থাকে যে, আল্লাহ পাক-এর নবী হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ ব্যতীতই হিজরত করেছেন এবং গাছের নিকট আশ্রয় চেয়েছেন। তাই তিনি গযব স্বরূপ গাছের মধ্যে করাত দ্বিখণ্ডিত হয়েছেন। (নাঊযুবিল্লাহ)
আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের দৃষ্টিতে তাদের এ বক্তব্য ও আক্বীদা সম্পূর্ণভাবেই কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। এরূপ কুফরী আক্বীদা থেকে তওবা করা সংশ্লিষ্ট সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিব।