-মুহম্মদ সাদ
পূর্বপ্রকাশিতের পর
মুবারক শৈশব ও কৈশোর থেকেই সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার সুন্নত মুবারক ও শরয়ী পর্দা পালনের একনিষ্ঠ অভ্যস্ততা
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মুবারক বর্ণনা মতে বাতিনী ইলম হলো ইলমুন ফীল ক্বলব। এই ইলম উনাকে ইলমুন নাফে’, ইলমুল মা’রিফাত, ইলমুত তাছাওউফ, ইলমুল হাক্বীক্বতও বলা হয়। সর্বনিকৃষ্ট উলামায়ে ‘সূ’ ও বাতিলপন্থীদের অর্জিত জাহিরী ইলম-এর পরিমাণ একেবারে কম নয়। কিন্তু ইলমে বাতিন, অর্থাৎ ইখলাছ উনার অভাবে তাদের যাবতীয় আমলই নিষ্ফল।
বিশুদ্ধ ঈমান, আক্বীদা ও ইখলাছ উনাদের অভাবে সম্পাদিত আমল-এর ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে রহমতুল্লিল আলামীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন:
الناس كلهم هلكى الا الـمؤمنون والـمؤمنون كلهم هلكى الا العالـمون والعالـمون كلهم هلكى الا العاملون والعاملون كلهم هلكى الا الـمخلصون والـمخلصون على خطر عظيم
অর্থ: “সমস্ত-মানুষ হালাক (ধ্বংসপ্রাপ্ত), শুধু মু’মিন-মুসলমানগণ উনারা ব্যতীত। মু’মিন-মুসলমানগণও হালাক, কেবল আলিমগণ উনারা ব্যতীত। আবার আলিমগণও হালাক, শুধু আমলকারীগণ (সম্মানিত সুন্নত মুতাবিক) উনারা ব্যতীত। আবার মুখলিছগণ ছাড়া আমলকারীরাও হালাক। আর মুখলিছগণ উনারা সর্বক্ষণ চিন্তা ও পেরেশানীর মধ্যে নিপতিত।” (মিরক্বাত শরীফ)
মানুষের অভীষ্ট লক্ষ্য হলো মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত-মা’রিফাত, রিযামন্দি-সন্তুষ্টি, তায়াল্লুক-নিসবত হাছিল করা। এ জন্য সম্মানিত শরীয়ত উনার বিধানে প্রবর্তিত হয়েছে ইবাদত-বন্দেগী, যিকির-ফিকির, মুরাক্বাবা, মুশাহাদা ইত্যাদি নানাবিধ নেক আমল। ইবাদত-বন্দেগী কবুল হওয়ার অবধারিত শর্ত হলো, পরিপূর্ণ ইখলাছসহযোগে সব আমল সম্পাদিত হওয়া। ইখলাছ উনার বসত হলো অন্তরে, অর্থাৎ নিয়তে।
রিযামন্দি-সন্তুষ্টি হাছিলের লক্ষ্যে অনিবার্য শর্ত হলো পরিশুদ্ধ অন্তর। এ মর্মে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি তিনি ইরশাদ মুবারক করেন:
ان فى الجسد مضعة فاذا صلحت صلح الجسد كله واذا فسدت فسد الجسد كله الا وهى القلب
অর্থ: “মানুষের শরীরে এক টুকরা গোশত রয়েছে, তা পরিশুদ্ধ হলে গোটা শরীর পরিশুদ্ধ হয়ে যায় এবং তা’ বিনষ্ট হলে বা ধ্বংস হলে গোটা শরীর ধ্বংস হয়ে যায়। সাবধান! ওই গোশতের টুকরাটি হলো ক্বলব বা অন্তর।” (বুখারী শরীফ)
মহান আল্লাহ পাক তিনি মানুষের যাবতীয় কার্যাবলীর মধ্যে শুধু তাদের নিয়তের প্রতিই লক্ষ্য করে থাকেন। কারণ মানুষের আমল তার নিয়তের অনুরূপ হতে বাধ্য। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে:
ان الله لا ينظر الى صوركم واموالكم ولكن ينظر الى قلوبكم ونيتكم
অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তোমাদের আকার-আকৃতি ও ধন-সম্পদের প্রতি লক্ষ্য করেন না, বরং তোমাদের ইখলাছ-সমৃদ্ধ অন্তরের দিকে দৃষ্টিপাত করে থাকেন।” (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ) (চলবে)
হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি