পূর্বপ্রকাশিতের পর
মুবারক শৈশব ও কৈশোর থেকেই সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার সুন্নত মুবারক ও শরয়ী পর্দা পালনের একনিষ্ঠ অভ্যস্ততা
পূর্বেই বলা হয়েছে ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাইয়্যিদাহ দাদী হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম তিনি পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণের পর উনার মুবারক গোসল, মুবারক কাফন, মুবারক জানাযা এবং মুবারক দাফন সম্পন্নে যে শরয়ী পর্দা পালন করা হয়, তা অভাবনীয়। উনাকে উনার যাওজুল মুকাররম ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার পাশে মাযার শরীফে শায়িত করার প্রক্কালে মাযার শরীফের উপরে এবং চারপাশ পর্দায় খাছভাবে আবৃত করা হয়। পর্দায় আবৃত মাযার শরীফের সংশ্লিষ্ট জায়গায় সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনার মাহরাম ব্যতীত অন্য কেউই উপস্থিত ছিলেন না। পূত-পবিত্র হায়াত মুবারকে যেভাবে তিনি শরয়ী পর্দাপালন করেছেন, পবিত্র বিছাল শরীফ উনার অব্যবহিত পর থেকে জিসিম মুবারক মাযার শরীফে রেখে উনার উপর মাটি বিছিয়ে দেয়া পর্যন্ত একইভাবে উনার পর্দাপালন করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
মৃত ব্যক্তির (পুরুষ অথবা মহিলা) কবরে আযান দেয়া নাজায়িয। আযান দেয়া পবিত্র কাল্লামুল্লাহ শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের খিলাফ এবং প্রকাশ্য বিদয়াতের অন্তর্ভুক্ত ও গুমরাহী। মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর তার কবরে তালক্বীন” দেয়া সুন্নত। মূলত: তালক্বীন দেয়ার বিষয়টি পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মুবারক নির্দেশ। তালক্বীন দেয়ার একাধিক পদ্ধতি রয়েছে। তবে সহজ পদ্ধতি হচ্ছে, মাইয়্যিতকে দাফন করার পর উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ থেকে একজন প্রশ্ন করবে :
؟ من ربك অন্যান্য সবাই বলবে: ربى الله। এর পর বলবে: ومن نبيك؟ অন্যান্য সবাই বলবে:
نبى محمد رسول الله صلى لله عليه و سلم অত:পর বলবে: ومادينك؟ সকলেই বলবে دينى الاسلام.
তালক্বীন দেয়ার বিষয়টি বর্তমানে চালু নেই বললেই চলে। প্রকৃতপক্ষে মুবারক এ বিষয়টি মানুষ জানেই না এবং তালক্বীন দেয়ার ফযীলতও বুঝেনা। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে যে, মাইয়্যিতকে দাফন করার পর যখন তাকে তালক্বীন দেয়া হয়, তখন মুনকার ও নকীর একে অপরের হাত ধরে বলেন: এখান থেকে আমরা চলে যাই। এর নিকট বসে থেকে কী করবো? একেতো আখিরাতের দলীল শিখিয়ে দেয়া হচ্ছে। তালক্বীন দেয়ার ফযীলত অপরিসীম। সুবহানাল্লাহ!
ওলীয়ে মাদারযাদ, আওলাদুর রসূল, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত সাইয়্যিদাহ দাদী হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনার জিসিম মুবারক মাযার শরীফে রাখার পর সুন্নত অনুসরণে উনাকেও তালক্বীন দেয়া হয়। যদিও উনার জন্য তালক্বীন আদৌ প্রয়োজন ছিলোনা। কারণ তিনি উচ্চতম মর্যাদা ও মাক্বাম বিশিষ্ট সূক্ষ্মদর্শী ও নৈকট্যধন্য ওলীআল্লাহ। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে একটি মুবারক ঘটনা এখানে দৃষ্টান্তযোগ্য। তা হলো: একজন ওলীআল্লাহ উনার বিছাল শরীফের পর উনার জিসিম মুবারক মাযার শরীফে রেখে তালক্বীন দেয়া হচ্ছে। তালক্বীন দেয়া স্থানের অদূরে অবস্থানকারী একজন বুযুর্গ ব্যক্তি মনে মনে হাসছেন আর বলছেন: æজীবিত ব্যক্তিকে মৃতরা তালক্বীন দিচ্ছে।” অর্থাৎ যাঁকে তালক্বীন দেয়া হচ্ছে, তিনিতো মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এবং উনার প্রিয়তম রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নৈকট্যধন্য মাহবূব ওলীআল্লাহ। উনাকে মাযার শরীফে কোন প্রশ্নই করা হবে না। কিন্তু যারা তালক্বীন দিচ্ছে তাদের হাক্বীক্বী ইছলাহ প্রয়োজন। অর্থাৎ এই তালক্বীন দেয়ার মাধ্যমে যারা তালক্বীন দিচ্ছে তারাই কামিয়াবী লাভ করছে এবং বিছাল শরীফ গ্রহণকৃত সংশ্লিষ্ট মাহবূব ওলীআল্লাহ উনার সঙ্গে তাদের এক নিগূঢ় তায়াল্লুক-নিছবত হাছিল হচ্ছে। (চলবে)
হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি