-মুহম্মদ সাদী
পূর্বপ্রকাশিতের পর
সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম তিনি সকল বিষয়ে সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত হাক্বীক্বীভাবে পালনে ছিলেন একান্তভাবে আজ্ঞাবহ। মুবারক সুন্নত ও শরয়ী পর্দাপালনসহ সম্মানিত শরীয়ত উনার যাবতীয় বিধানপালনের ক্ষেত্রে তিনি অন্য সব বিষয়কেই পবিত্র বিছাল শরীফ অবধি তুচ্ছ জ্ঞান করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
দীর্ঘদিন তিনি উনার মুবারক চোখের সমস্যায় ভুগেছেন। তিনি উনার মুবারক চোখে ঝাপসা দেখতেন। পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ তিলাওয়াত করতে পারতেন না, কিতাবাদি পাঠ করতে পারতেন না। মুবারক ইচ্ছা অনুযায়ী নিয়মিতভাবে কোন মহিলাকে পাশে বসিয়ে তাকে দিয়ে তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ তিলাওয়াত করিয়ে এবং অন্যন্য কিতাবাদি পাঠ করিয়ে শুনতেন। উনার মুবারক চোখের চিকিৎসার প্রয়োজন ছিলো। প্রয়োজন ছিলো অপারেশনের।
বহুবার উনাকে সবিনয়ে জানানো হয়েছে: “চোখের চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ মহিলা ডাক্তার অপ্রতুল। দয়া করে যদি আপনি সম্মতিদান করেন, তবে মহিলা ডাক্তারই খুঁজে বের করা হবে। মহিলা ডাক্তারই আপনার চোখ মুবারক দেখবে এবং প্রয়োজনে অপারেশন করবে। আপনি দয়া করে মুবারক সম্মতি দান করুন।” কিন্তু সম্মানিত শরয়ী পর্দা রক্ষার অনিবার্য প্রয়োজনে তিনি সম্মতি দান করেননি।
মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা এবং উনার প্রিয়তম রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুবারক নির্দেশে সম্মানিত শরয়ী পর্দা হাক্বীক্বীভাবে পালনের লক্ষ্যেই সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম তিনি উনার মুবারক চোখ অপারেশন করাননি। মহিলা ডাক্তার অপারেশন করলেও ঘরের বাইরে যাওয়ার প্রশ্ন। আর বাইরে গেলেই হাক্বীক্বী পর্দার খিলাফ হওয়ার সম্ভাবনা। মুবারক জীবনের দীর্ঘদিন চোখের প্রকট সমস্যায় ভুগলেও পর্দার খিলাফের আশঙ্কায় তিনি অপারেশনে সম্মতিদান করেননি। জরুরী শারীরিক চিকিৎসায় খাছ পর্দাসহযোগে বাইরে যাওয়ার এবং ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার ক্ষেত্রে সম্মানিত শরীয়ত উনার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু সে শরয়ী সুযোগও তিনি গ্রহণ করেননি। এটি উনার চরম পর্যায়ের তাক্বওয়া। মহান আল্লাহ পাক এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের তায়াল্লুক-নিসবত ও মুহব্বত-মা’রিফাতে অনুক্ষণ মশগুল থেকে তিনি নিরবে-নিভৃতে সুন্নতী তর্জ-তরীক্বায় সংসার ধর্ম পালন করে গেছেন মুবারক জীবনব্যাপী। সুবহানাল্লাহ!
মুবারক বিলাদত শরীফের পর বুযূর্গ নানা বাড়ীতে এবং অতঃপর আপন পিতৃনিবাসের সুন্নতী আবহে তিনি পরিপূর্ণরূপে শরয়ী পর্দায় থেকেছেন। মুবারক শাদী অনুষ্ঠানের পর থেকে পবিত্র বিছাল শরীফ অবধি তিনি উনার যাওজুল মুকাররাম ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, আফদ্বালুল ইবাদ, ফখরুল আউলিয়া, মুসতাজাবুদ দা’ওয়াত, ছাহিবে ইলম ওয়াল হিকাম ওয়াল কাশফ ওয়াল কারামত, ছাহিবুল ইলহাম, ছাহিবে ইসমে আ’যম, মিছদাক্বে কুরআন ওয়াল হাদীছ, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, সাইয়্যিদুনা দাদা হুযূর ক্বিবলা হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনার মুবারক সন্নিধানে সম্মানিত সুন্নত ও সম্মানিত শরয়ী পর্দাপালনে নিয়োজিত থেকেছেন। সুবহানাল্লাহ!
প্রাণাধিক পুত্র মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম এবং অন্যান্য সন্তান উনাদের সযতœ তত্ত্বাবধান, সংসারের যাবতীয় কাজ দেখাশুনা এবং আনুষঙ্গিক দায়িত্বাবলী সুন্নতী তর্জ-তরীক্বায় ও শরয়ী পর্দায় সুষ্ঠুভাবে পালন শেষে ওলীয়ে মাদারজাদ, আওলাদে রসূল, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত আমিনা আলাইহাস সালাম, ছিদ্দীক্বায়ে কুবরা, মাহবূবায়ে ইলাহী, সাইয়্যিদাতু নিসাইল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম তিনি যে সময়টুকু পেতেন, তা’ তিনি নিয়মিতভাবে হাদিয়া করে দিয়েছেন মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তা’য়ালা, নূরে মুজাসসাম, মাশুকে মাওলা, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার যাওজুল মুকাররাম, আওলাদে রসূল, ওলীয়ে মাদারজাদ, হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলিছুর রহমান আলাইহিস সালাম উনাদের দায়িমী সংযোগে, উনাদের দায়িমী খিদমতে। (চলবে)
হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি