[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-২৩৭), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২০৩তম সংখ্যা), ৩২. হানাফী মাযহাব মতে নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ে ‘আমীন’ অনুচ্চ আওয়াজে বা চুপে চুপে পাঠ করাই শরীয়তের নির্দেশ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১২তম সংখ্যা), ৩৩. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২২০তম সংখ্যা থেকে যা এখনো চলছে) পেশ করার পাশাপাশি-
৩৪তম ফতওয়া হিসেবে
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ
সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।
বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিনসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। যেমন তারা বলে থাকে যে, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!
অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-
استحلال الـمعصية كفر.
অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)
অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।
অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!
কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি” প্রকাশ করা হলো।
সম্মানিত ইসলামী মাস, বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় সমূহ সম্পর্কে এবং চন্দ্র ও সূর্যের গতিবিধির ব্যাপারে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার ২৬ খানা পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের তাফসীর
বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
সূর্য ও চন্দ্র এই দু’টি ইসলামী মাস, রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় নিরুপনের ব্যাপারে মানদন্ড হিসেবে বিবেচিত। অর্থাৎ সূর্য ও চন্দ্র উনাদের আবর্তনের কারণে বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময়গুলো সুচারুরূপে আগমণ করে থাকে। এজন্য আমরা ইসলামী মাস, রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় ইত্যাদীর আলোচনার পাশাপাশি চন্দ্র ও সূর্যের আবর্তন ও তাদের গতিবিধি সম্পর্কে আলোচনা করবো। যাতে করে বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়ে যায় এবং বুঝতে সহজ হয়। নি¤েœ এ সম্পর্কিত পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হলো:
পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-৮
انَّمَا النَّسِىءُ زِيَادَة فِى الْكُفْرِ يُضَلُّ بِهِ الَّذِينَ كَفَرُوْا يُحِلُّوْنَه عَامًا وَيُحَرّمُوْنَه عَامًا لِيُوَاطِئُوْا عِدَّةَ مَا حَرَّمَ الله فَيُحِلُّوْا مَا حَرَّمَ الله زُيّنَ لَهُمْ سُوءُ اَعْمَالِهِمْ وَالله لَا يَهْدِى الْقَوْمَ الْكَافِرِيْنَ. (سورة التوبة الشريفة ۳۷ الاية الاية الشريفة(
অর্থ: নিশ্চয়ই নাসী করা অর্থাৎ মাসকে আগে পিছে করাটা কুফরীর মাত্রাকে বৃদ্ধি করে, যার ফলে কাফিররা গুমরাহীতে পতিত হয়। এরা হালাল করে নেয় একে এক বছর এবং হারাম করে নেয় অন্য বছর, যাতে তারা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার হারামকৃত মাসগুলোকে সংখ্যা হিসেবে পূর্ণ করে। অতঃপর তারা হালাল করে যা মহান আল্লাহ পাক তিনি হারাম করেছেন। তাদের মন্দ কাজগুলো তাদের জন্যে শোভনীয় করে দেয়া হয়। মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি কাফির সম্প্রদায়কে হিদায়াত দান করেন না। (পবিত্র সূরাতুত্ তাওবাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং-৩৭)
অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ তাফসীর
বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
{اِنَّمَا النسيء زِيَادَةٌ فِى الكفر} يقول تأخير المحرم الى صفر معصية زيادة مع الكفر {يُضَلُّ بِهِ} يغلط بتأخير المحرم الى صفر {الذين كَفَرُوْا يُحِلُّوْنَه} يعنى المحرم {عَامًا} فيقاتلون فيه {وَيُحَرِّمُونَه} يعنى المحرم {عَامًا} فلا يقاتلون فيه فاذا اَحلوا المحرم حرموا صفر بدله {لِّيُوَاطِئُوْا} ليوافقوا {عِدَّةَ مَا حَرَّمَ الله} اربعا بالعدد {فَيُحِلُّواْ مَا حَرَّمَ الله} يعنى المحرم {زُيِّنَ لَهُمْ} حسن لهم {سوء أَعْمَالِهِمْ} قبح اعمالهم {والله لاَ يَهْدِى} لا يرشد الى دينه {القوم الكافرين} من لم يكن اهلًا لذلك وكان الذى يفعل هذا رجلًا يقال له نعيم بن ثعلبة. (تنوير المقباس من تفسير ابن عباس رضى الله عنهما المتوفى ৬৮ هجرى سورة التوبة الشريفة ۳۷ الاية الاية الشريفة جمعه محمد بن يعقوب الفيروز آبادى رحمة الله عليه المتوفى ৮১৭ هجرى)
অর্থ: (নিশ্চয়ই নাসী করা অর্থাৎ মাসকে আগে পিছে করাটা কুফরীর মাত্রাকে বৃদ্ধি করে,) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা তিনি বলেন, মুহাররম মাসকে ছফর মাসের পরে পিছিয়ে নেয়া পাপ ও কুফরীকে বৃদ্ধি করে (যার ফলে গুমরাহীতে পতিত হয়) মুহাররম মাসকে ছফর মাসের পরে পিছিয়ে দেয়া মারাত্মক ভুল (কাফিররা একে হালাল করে নেয়) অর্থাৎ মুহাররমুল হারাম মাসকে (এক বছর) অতঃপর তারা এ মাসে যুদ্ধ করে। (এবং একে হারাম করে নেয়) অর্থাৎ মুহাররমুল হারাম মাসকে (অন্য বছর,) তাই তারা এ মাসে যুদ্ধ করা থেকে বিরত থাকে, যখন তারা মুহাররমুল হারাম মাসকে হালাল করে তখন তার বদলে ছফর মাসকে হারাম করে নেয়। (যাতে তারা পূর্ণ করতে পারে) হিসাব পূর্ণ করে (মহান আল্লাহ তায়ালা উনার হারামকৃত মাসগুলোকে সংখ্যা হিসেবে) চারটি মাসের সংখ্যাকে (অতঃপর তারা হালাল করে যা মহান আল্লাহ পাক তিনি হারাম করেছেন।) অর্থাৎ মুহাররমুল হারাম মাসকে (তাদের জন্য শোভনীয় করে দেয়া হয়) তাদের জন্য আকর্ষনীয় করা হয়েছে (তাদের মন্দ কাজগুলোকে।) তাদের খারাপ কাজগুলোকে (মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি হিদায়াত দান করেন না) উনার সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দিকে পথ প্রদর্শন করেন না (কাফির সম্প্রদায়কে।) যারা হিদায়াত পাওয়ার যোগ্য নয়। যে ব্যক্তি মাস আগ-পিছ করার কাজ করতো তার নাম নুয়াঈম বিন ছা’লাবাহ। (তানবীরুল মাক্ববাস মিন তাফসীরি ইবনি আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা ওয়াফাত মুবারক: ৬৮ হিজরী পবিত্র সূরাতুত্ তাওবাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং-৩৭ সংকলক: হযরত মুহাম্মাদ বিন ইয়া’কূব ফিরোজাবাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৮১৭ হিজরী)
وقد تكلم الامام محمد بن اسحاق على هذا فى كتاب “السيرة” كلامًا جيدًا ومفيدًا حسنًا، فقال: كان اول من نسأ الشهور على العرب، فاحل منها ما حرم الله وحرم منها ما احل الله عز وجل “القَلمَّس”، وهو: حذيفة بن عبد مُدْرِكة فُقَيم بن عدى بن عامر بن ثعلبة بن الحارث بن مالك بن كنانة بن خُزَيمة بن مدْرِكة بن الياس بن مُضَر بن نزار بن مَعدَّ بن عدنان، ثم قام بعده على ذلك ابنه عَبَّاد ثم من بعد عباد ابنه قَلَع بن عباد، ثم ابنه امية بن قلع، ثم ابنه عوف بن امية، ثم ابنه ابو ثمامة جنادة بن عوف، وكان اٰخرهم، وعليه قام الاسلام. فكانت العرب اذا فرغت من حجها اجتمعت اليه، فقام فيهم خطيبًا فحرم رجبا وذا القعدة وذا الحجة ويحل المحرم عاما، ويجعل مكانه صفر، ويحرمه عاما ليواطئ عدة ما حرم الله، فيحل ما حرم الله يعنى ويحرم ما احل الله. (تفسير القران العظيم اى تفسير ابن كثير سورة التوبة الشريفة ۳۷ الاية الاية الشريفة المؤلف: ابو الفداء اسماعيل بن عمر بن كثير القرشى الدمشقى الشافعى الاشعرى رحمة الله عليه الولادة ۷۰۰ هجرى الوفاة ۷۷۴ هجرى)
অর্থ: হযরত মুহাম্মাদ ইব্ন ইসহাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বীয় সীরাত গ্রন্থে জাহিলী যুগে মুশরিকদের হারাম মাসকে হালাল এবং হালাল মাসকে হারাম বানাবার বিষয়ে একটি তথ্যপূর্ণ মনোজ্ঞ বর্ণনা প্রদান করেছিলেন। উক্ত গ্রন্থে তিনি বলেছেন: জাহিলী যুগে যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম নিষিদ্ধ মাসকে পিছিয়ে দিয়েছিল তথা হারাম মাসকে হালাল এবং হালাল মাসকে হারাম বানিয়েছিল তার নাম হচ্ছে কালাম্মাস। তার আরেক নাম হচ্ছে হুযাইফা বিন আব্দু মুদরিক ফুক্বাইম বিন আদী বিন আমির বিন ছা’লাবাহ বিন হারিছ বিন মালিক বিন কিনানাহ বিন খুযাইমাহ বিন মুদরিকাহ বিন ইলইয়াস বিন মুদ্বার বিন নাযার বিন মায়াদ বিন আদনান। কালাম্মাসের মৃত্যুর পর তার পুত্র আব্বাদ উহাতে নেতৃত্ব দিয়েছিল। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র কালা’ বিন আব্বাদ, তার মৃত্যুর পর তার পুত্র উমাইয়াহ বিন কালা’, তার মৃত্যুর পর তার পুত্র আওফ বিন উমাইয়াহ এবং তার মৃত্যুর পর তার পুত্র আবূ ছুমামাহ জুনাদাহ বিন আওফ উহাতে নেতৃত্ব দিয়েছিল। শেষোক্ত ব্যক্তির সময়েই ইসলাম কায়িম হয়ে জাহিলী যুগের উপরোক্ত ব্যবস্থাকে তুলে দিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্ধারিত ব্যবস্থাকে প্রবর্তিত করেছে।
জাহিলী যুগে লোকেরা হজ্জ সম্পন্ন করে উক্ত আবূ ছুমামাহ জুনাদা ইবনে আওফের নিকট সমবেত হত। সে তাদের সামনে বক্তৃতা প্রদান করত। বক্তৃতায় সে রজব, যুল ক্বা’দাহ ও যুল হিজ্জাহ এই তিন মাসকে হারাম মাস বলে ঘোষণা করত। মুহাররম মাসকে সে এক বছর হালাল মাস বলে এবং এক বছর হারাম মাস বলে ঘোষণা করত। সে যে বছর উহাকে হালাল মাস বলে ঘোষণা করত, সে বছর সে উনার পরিবর্তে ছফর মাসকে হারাম মাস বলে ঘোষণা করত। যাতে করে বছরে হারাম মাস চারটিই থাকে। এরূপে সে মহান আল্লাহ তায়ালা কর্তৃক নির্ধারিত হারাম মাসকে হালাল এবং হালাল মাসকে হারাম বানাতো। (তাফসীরুল কুরআনিল আযীম অর্থাৎ তাফসীরে ইবনে কাছীর পবিত্র সূরাতুত্ তাওবাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং-৩৭ লেখক: হযরত আবুল ফিদা ইসমাঈল বিন উমর বিন কাছীর কুরাশী দামেশকী শাফিয়ী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বিলাদত: ৭০০ হিজরী ওয়াফাত: ৭৭৪ হিজরী)
উল্লেখিত পবিত্র আয়াত শরীফ এবং উনার তাফসীর থেকে প্রমাণিত হলো যে, নাসী বা মাসকে আগ-পিছ করা, হারাম মাসকে হালাল মাস হিসেবে এবং হালাল মাসকে হারাম করা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। আর এ কাজটি চলছিল নবম হিজরীতে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার হজ্জ পালন করার আগের বছর পর্যন্ত।
পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-৯
هُوَ الَّذِىْ جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَاءً وَالْقَمَرَ نُوْرًا وَقَدَّرَه مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوْا عَدَدَ السّنِينَ وَالْحِسَابَ مَا خَلَقَ الله ذلِكَ الَّا بِالْحَقّ يُفَصّلُ الْايَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُوْنَ. (سورة يونس شريف ۵ الاية الشريفة(
অর্থ: তিনিই মহান সত্তা, যিনি সূর্যকে উজ্জ্বল আলোকময় বানিয়েছেন এবং চন্দ্রকে ¯িœগ্ধ আলো বিতরণকারীরূপে, অতপর নির্ধারিত করেছেন তার জন্য মানযিল সমূহ, যাতে করে তোমরা বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব জানতে পারো। মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি এগুলোকে অযথা সৃষ্টি করেননি। তিনি এই প্রমাণাদি বা নিদর্শনসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন সেই সকল লোকদের জন্য যারা সমঝদার। (পবিত্র সূরাতু ইঊনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ৫)
অত্র পবিত্র আয়াত উনার বিশুদ্ধ তাফসীর
বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
قال ابو جعفر الطبرى رحمة الله عليه: يقول تعالى ذكره: ان ربكم الله الذى خلق السموت والارض (هو الذى جعل الشمس ضياء) بالنهار (والقمر نورًا) بالليل. ومعنى ذلك: هو الذى اضاء الشمسَ وانار القمر (وقدّره منازل) يقول: قضاه فسوّاه منازلَ لا يجاوزها ولا يقصر دُونها على حالٍ واحدةٍ ابدًا. (جامع البيان فى تأويل القران اى تفسير الطبرى سورة يونس شريف ۵ الاية الشريفة المؤلف: محمد بن جرير بن يزيد بن كثير بن غالب الاملى ابو جعفر الطبرى رحمة الله عليه المتوفى ۳۱۰ هجرى(
অর্থ: হযরত আবূ জা’ফর ত্ববারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: তোমাদের রব তায়ালা মহান আল্লাহ পাক! তিনি আকাশসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। (তিনিই মহান সত্তা, যিনি সূর্যকে উজ্জ্বল আলোকময় বানিয়েছেন) দিনের বেলার জন্য
(এবং চন্দ্রকে ¯িœগ্ধ আলো বিতরণকারীরূপে,) রাতের বেলার জন্য, এর অর্থ হলো: তিনিই সূর্যকে উজ্জ্বল আলোকময় করেছেন এবং চন্দ্রকে ¯িœগ্ধ আলোকময় করেছেন। (অতপর নির্ধারিত করেছেন তার জন্য মানযিল সমূহ) বিভিন্ন স্তরে তার গতিপথ বিন্যস্ত করেছেন, যা সে অতিক্রম করতে পারে না এবং তার চেয়ে কমও চলে না। সর্বদা একই গতিতে বিচরণ করে। (জামিউল বয়ান ফী তা’বীলিল কুরআন অর্থাৎ তাফসীরুত ত্ববারী পবিত্র সূরাতু ইঊনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ৫ লেখক: হযরত মুহাম্মাদ বিন জারীর বিন ইয়াযীদ বিন কাছীর বিন গালিব আমালী আবূ জা’ফর ত্ববারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৩১০ হিজরী)
قال ابن قتيبة رحمة الله عليه: منازل القمر ثمانية من اول الشهر الى ثمانى وعشرين ليلة ثم يستسرُّ. وهذه المنازل هى النجوم التى كانت العرب تنسب اليها الانواء، واسماؤها عندهم: الشِّرَطَان والبُطَيْن والثُّرَيَّا والدَّبَرَان والهَقْعة والهَنْعة والذِّراع والنَّثْرة والطَّرْفُ والجبهة والزُّبْرة والصَّرْفة والعَوَّاء والسِّماك والغَفْر والزُّبَانَى والاِكليل والقلب والشَّوْلَة والنعائم والبلدة وسعد الذَّابح وسعد بُلَعْ وسعد السُّعود وسعد الاَخبية وفَرْغ الدَّلو المقدَّم وفرغ الدلو المؤخَّر والرِّشاء وهو الحوت. (زاد المسير فى علم التفسير اى تفسير الجوزى سورة يونس شريف ۵ الاية الشريفة المؤلف: الامام جمال الدين عبد الرحمن بن علي بن محمد الجوزى الحنبلى الاشعرى رحمة الله عليه المتوفى ۵۹۷ هجرى)
অর্থ: হযরত ইবনু কুতাইবাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: মাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ২৮ রাত্রে চন্দ্রের মানযিল বা গতিপথ ২৮টি। অতঃপর চাঁদটি গোপন থাকে। এই মানযিলগুলো আরবদের নামকরণ কৃত কতক তারকার নামে। আরবদের নিকট সেই মানযিলের নামগুলো হলো: আশ-শিরাত্বান (বা আশ-শিরাত্বীন), আল-বুত্বাইন, আছ-ছুরাইয়া, আদ-দাবারান, আল-হাক্য়াহ, আল-হানয়াহ, আয-যিরা’, আন-নাছরাহ (বা আন-নাস্র), আত-র্ত্বফ (বা আত-ত্বওফ), আল-জাবহাহ, আয-যুবরাহ, আছ-ছরফাহ, আল-আওওয়াহ, আস-সিমাক (বা আস-সিমাকুল আ’যাল), আল-গফ্র (বা আল-গফরাহ), আয-যুবানা, আল-ইকলীল, আল-ক্বল্ব, আশ-শাওলাহ, আন-নায়ায়িম, আল-বুলদাহ, সা’দুয্ যাবিহ, সা’দু বুলা’, সা’দুস্ সুঊদ, সা’দুল আখবিয়াহ, ফারগুদ্ দালবিল মুক্বাদ্দাম (বা ফারউদ্ দালবিল মুক্বাদ্দাম), ফারগুদ্ দালবিল মুয়াখ্খার (বা ফারউদ্ দালবিল মুয়াখ্খার বা আল-ফারগুল মুয়াখ্খার) ও আর-রিশা (বা হূত্ বা বাতনুল্ হূত্)। (যাদুল মাসীর ফী ইলমিত তাফসীর অর্থাৎ তাফসীরুল জাওযী পবিত্র সূরাতু ইঊনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ৫ লেখক: হযরত ইমাম জামালুদ্দীন আব্দুর রহমান বিন আলী বিন মুহাম্মাদ জাওযী হাম্বলী আশয়ারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৫৯৭ হিজরী)
ومنازل القمر ثمانية وعشرون منزلا واسماؤها: الشرطين والبطين والثرياء والدبران والهقعة والهنعة والذراع والنسر والطوف والجبهة والزبرة والصرفة والعواء والسماك والغفر والزبانى والاِكليل والقلب والشولة والنعايم والبلدة وسعد الذابح وسعد بلع وسعد السعود وسعد الاَخبية وفرع الدلو المقدم وفرع الدلو المؤخر وبطن الحوت.
وهذه المنازل مقسومة على البروج، وهى اثنا عشر بُرْجًا: الحمل والثور والجوزاء والسرطان والاَسد والسنبلة والميزان والعقرب والقوس والجدى والدلو والحوت.
ولكل برج منزلان وثلث منزل، فينزل القمر كل ليلة منزلا منها، ويستتر ليلتين اِن كان الشهر ثلاثين، واِن كان تسعا وعشرين فليلة واحدة، فيكون تلك المنازل ويكون مقام الشمس فى كل منزلة ثلاثة عشر يوما. (معالم التنزيل اى تفسير البغوى سورة يونس شريف ۵ الاية الشريفة المؤلف: محيى السنة ابو محمد الحسين بن مسعود البغوى الشافعى رحمة الله عليه المتوفى ۵۱۰ هجرى)
অর্থ: চন্দ্রের মানযিল বা গতিপথ ২৮টি। মানযিলের নামগুলো হলো: আশ-শিরাত্বীন (বা আশ-শিরাত্বান), আল-বুত্বাইন, আছ-ছুরাইয়া, আদ-দাবারান, আল-হাক্য়াহ, আল-হানয়াহ, আয-যিরা’, আন-নাস্র (বা আন-নাছরাহ), আত-ত্বওফ (বা আত-র্ত্বফ), আল-জাবহাহ, আয-যুবরাহ, আছ-ছরফাহ, আল-আওওয়াহ, আস-সিমাক (বা আস-সিমাকুল আ’যাল), আল-গফ্র (বা আল-গফরাহ), আয-যুবানা, আল-ইকলীল, আল-ক্বল্ব, আশ-শাওলাহ, আন-নায়ায়িম, আল-বুলদাহ, সা’দুয্ যাবিহ, সা’দু বুলা’, সা’দুস্ সুঊদ, সা’দুল আখবিয়াহ, ফারউদ্ দালবিল মুক্বাদ্দাম (বা ফারগুদ্ দালবিল মুক্বাদ্দাম), ফারউদ্ দালবিল মুয়াখ্খার (বা ফারগুদ্ দালবিল মুয়াখ্খার বা আল-ফারগুল মুয়াখ্খার) ও বাতনুল্ হূত (বা হূত্ বা আর-রিশা)।
অত্র মানযিল বা গতিপথগুলো কতক বুরূজ বা রাশিতে বিভক্ত। আর তা হচ্ছে ১২টি র্বুজ বা রাশি: আল-হামাল বা মেষরাশি, আছ-ছাওর বা বৃষরাশি, আল-জাওযা বা মিথুনরাশি, আস-সারাত্বান বা কর্কটরাশি, আল-আসাদ বা সিংহরাশি, আস-সুম্বুলাহ বা কন্যারাশি, আল-মীযান বা তুলারাশি, আল-আক্বরব বা বৃশ্চিকরাশি, আল-ক্বাওস বা ধনুরাশি, আল-জাদ্ই বা মকররাশি, আদ-দাল্ও বা কুম্ভরাশি ও আল-হূত্ বা মীনরাশি। প্রত্যেক র্বুজ বা রাশির জন্য দুই থেকে তিনটি মানযিল রয়েছে। চাঁদ প্রত্যেক রাতে উক্ত মানযিল সমূহের কোন একটিতে অবস্থান করে। মাস ত্রিশ দিনে হলে চাঁদ দুই দিন গোপন থাকে। আর যদি মাস ঊনত্রিশ দিনে হয় তাহলে চাঁদ এক দিন গোপন থাকে। আর সূর্য প্রত্যেক মানযিলে ১৩ দিন অবস্থান করে। (মায়ালিমুত তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল বাগবী পবিত্র সূরাতু ইঊনুস শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর ৫ লেখক: মুহইস সুন্নাহ আবূ মুহাম্মাদ হুসাঈন বিন মাসঊদ বাগবী শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ৫১০ হিজরী)
অসমাপ্ত
পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন