৩৪তম ফতওয়া হিসেবে
“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট
বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ
সম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরকী ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের অকাট্ট দলীলের আলোকে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত মুহব্বত-মা’রিফত, নিসবত-ক্বুরবত, রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের সর্বোত্তম ওসীলা মুবারক এবং মানুষের সম্মানিত আক্বীদাহ মুবারক এবং সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক। সুবহানাল্লাহ!
বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে সম্মানিত মুসলমান উনাদের সম্মানিত ঈমান এবং সম্মানিত আমল উনাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে সম্মানিত মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিন মুবারকসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে সম্মানিত মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। না‘ঊযুবিল্লাহ! যেমন তারা বলে থাকে যে, সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! সম্মানিত ও পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!
অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নি‘য়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে খবীছ উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নি‘য়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
তাদের উপরোক্ত বক্তব্য চরম বিভ্রান্তিকর, সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত এবং আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নি‘য়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। এ সম্পর্কে কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-
اِسْتِحْلَالُ الْـمَعْصِيَةِ كُفْرٌ.
অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” নাউযুবিল্লাহ! (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)
অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে ‘সূ’দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের সম্মানিত আক্বীদাহ্ মুবারক ও সম্মানিত ঈমান উনাদের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।
অনুরূপ উলামায়ে ‘সূ’দের এই কুফরীমূলক বক্তব্য সম্মানিত মুসলমান উনাদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা, যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ফালইয়াফরহূ শরীফ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!
কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা এবং হক্বপন্থি ও সমঝদার মুসলমানগণ উনারা যেন উনাদের সম্মানিত ঈমান ও সম্মানিত আমল মুবারক হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ মোতাবেক বিশুদ্ধ আক্বীদাহ্ মুবারক পোষণ করে এবং সঠিক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের হাক্বীক্বী রিযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিন মুবারক উনাদের সম্মানিত আমল মুবারকসমূহ উনাদের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি” প্রকাশ করা হলো।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন ও সময়ের গুরুত্ব, ফযীলত ও আহকাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফাতাওয়া-
পূর্ব প্রকাশিতের পর
সম্মানিত রবী‘উছ ছানী শরীফ মাসে প্রকাশিত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আইয়্যামুল্লাহ শরীফসমূহ
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ দিবস মুবারক = ৫টি
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আইয়্যামুল্লাহ শরীফ = ৬টি
(৩) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১১ই রবী‘উছ ছানী শরীফ:
গ্বাউছুল আ’যম, বড়পীর হযরত শায়েখ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত ও পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস, যা পবিত্র ‘ফাতিহায়ে ইয়াযদাহম’ শরীফ নামে মশহূর। সুবহানাল্লাহ!
একবার এক লোক গ্বাউছুল আ’যম হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে জিজ্ঞাসা করলো, হুযূর! আপনি কি মুজাদ্দিদে যামান? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারপর বললো, আপনি কি সুলত্বানুল আরিফীন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আবার বললো, আপনি কি কুতুবুল আলম? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আবার বললো, আপনি কি গ্বাউছুল আ’যম? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন সে নিশ্চুপ হয়ে গেল। তিনি বললেন, তোমার কি আর কোনো লক্বব মুবারক জানা নেই? লোকটি বললো, জ্বি-না, আমার আর কিছু জানা নেই। তখন গ্বাউছুল আ’যম হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন- ‘আমার মর্যাদা তারও উপরে, তারও উপরে, তারও উপরে।’ সুবহানাল্লাহ!
মূলকথা, নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের পর একজন মানুষের পক্ষে যত মাক্বাম অর্জন করা সম্ভব মহান আল্লাহ পাক তিনি গ্বাউছুল আ’যম হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে তা হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এটা উনার এক বিশেষ মর্যাদা মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ। সুবহানাল্লাহ!
যখন হযরত গাউছুল আ’যম বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত ও পবিত্র বিছালী শান মুবারক উনার সময় নিকটবর্তী হলো, তখন উনার ছোট ইস্তিঞ্জা মুবারক উনার পরিবর্তে রক্ত প্রবাহিত হতে লাগল। শুধু তাই নয়, ইস্তিঞ্জা থেকে আতর গোলাপের ঘ্রাণ বের হচ্ছিল এবং তার মধ্য থেকে যিকিরও হচ্ছিল। সুবহানাল্লাহ! উনার মুরীদান যাঁরা ছিলেন উনারা বললেন, হুযূর! আপনি অসুস্থ, চিকিৎসা করানো দরকার। হযরত গাউছুল আ’যম বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি প্রথমে বললেন, দেখ চিকিৎসা করে কি হবে, এই অসুস্থতা দূর হওয়া স্বাভাবিক নয়। আমার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানের সময় প্রায় শেষ। তখন মুরীদান উনারা বললেন, হুযূর! আপনি যদি অনুমতি দেন, তাহলে আমরা চিকিৎসা করি। কারণ আপনি যতদিন জমিনে অবস্থান মুবারক করবেন ততদিন জমিনবাসী আপনার উছিলায় মহাসম্মানিত রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও সাকীনা লাভ করবে। তখন তিনি চিন্তা করলেন এবং বললেন, চিকিৎসা করাতো সুন্নত, অসুবিধা নেই, ঠিক আছে। তখন উনার ইস্তিঞ্জা মুবারক এক বিধর্মী ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো। সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম সম্বন্ধে সেই ডাক্তারের তেমন জানাশোনা নেই, হয়তো সামান্য কিছু জানে। যখন গ্বাউছুল আ’যম হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইস্তিঞ্জা মুবারক সেই বিধর্মী ডাক্তারের কাছে পেশ করা হলো, প্রথমে বুঝতেই পারলো না এটা যে ইস্তিঞ্জা মুবারক। ডাক্তার জিজ্ঞেস করল, আপনারা এটা কি নিয়ে এসেছেন, এটা থেকে আতর-গোলাপের ঘ্রাণ বের হচ্ছে এবং মনে হচ্ছে এখান থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার যিকির হচ্ছে। তখন গ্বাউছুল আ’যম শায়েখ সাইয়্যিদ মুহীউদ্দিন হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদান উনারা বললেন, ডাক্তার সাহেব! মূলত এটা গ্বাউছুল আ’যম শায়েখ সাইয়্যিদ মুহীউদ্দিন হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইস্তিঞ্জা মুবারক। শুনে ডাক্তার সাহেব আশ্চর্য হয়ে বলল, চিকিৎসা পরে হবে। তার আগে আমাদেরকে তওবা করান। প্রথমে মুসলমান করান। সেই মহল্লায় ছিল চারশত বিধর্মী লোক। তারা তওবা করে মুসলমান হয়ে গেল। সুবহানাল্লাহ!
ফিরে এসে তারা গাউছুল আ’যম শায়েখ সাইয়্যিদ মুহীউদ্দিন হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে জিজ্ঞেস করলেন, হে গাউছূল আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি! কী কারণে আপনার এই অবস্থা এবং ইস্তিঞ্জা মুবারকের এই হাল? তখন গাউছুল আ’যম শায়েখ সাইয়্যিদ মুহীউদ্দিন হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার একখানা সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ- যেটা তিলাওয়াত করার কারণে আমার ভিতরের কলিজা-গুর্দা সব চূর্ণবিচূর্ণ ও তছনছ হয়ে গিয়েছে। যেগুলো ইস্তিঞ্জা মুবারক উনার রাস্তা দিয়ে রক্ত আকারে বের হয়ে যাচ্ছে। উনারা জিজ্ঞাসা করলেন, কোন সেই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ যা আপনার কলিজা-গুর্দা তছনছ করে দিয়েছে? গাউছুল আ’যম হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
یٰۤاَیُّہَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ حَقَّ تُقٰتِهٖ وَلَا تَـمُوْتُنَّ اِلَّا وَاَنْتُمْ مُسْلِمُوْنَ.
অর্থ: “হে ইমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ্ পাক উনাকে ভয় করার মতো ভয় করো অর্থাৎ হাক্বীক্বীভাবে ভয় করো এবং তোমরা মুসলমান না হওয়া পর্যন্ত মারা যেও না।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১০২)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করার পর আমার ভয় হচ্ছিল- আমি প্রকৃত মুসলমান হতে পেরেছি কিনা? সেটা চিন্তা ফিকিরের কারণে আমার ভিতরের কলিজা, গুর্দা আর যা কিছু আছে সব তছনছ হয়ে রক্ত আকারে আমার ইস্তিঞ্জার রাস্তা দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে।’ সুবহানাল্লাহ!
১১ই রবী‘উছ ছানী শরীফ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (ইছনাইনিল আযীম শরীফ) রাতে হযরত গ্বাউছুল আ’যম বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি গোসল করে পবিত্র ইশা উনার নামায পড়েন। তারপর তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতগণের গুনাহখতা মাফের জন্য ও তাদের উপর খাছ রহমত নাযিলের জন্য দোয়া করলেন। এরপর গায়েব হতে আওয়াজ আসল-
یٰۤاَیَّتها النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ ارْجِعِـىْۤ اِلـٰى رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً فَادْخُلِـىْ فِـىْ عِبٰدِىْ وَادْخُلِـىْ جَنَّتِـىْ.
অর্থ: “হে প্রশান্ত নফ্স! আপনি প্রসন্ন ও সন্তুষ্টচিত্তে এবং সন্তুষ্টি প্রাপ্ত হয়ে নিজ প্রতিপালকের দিকে প্রত্যাবর্তন করুন। আপনি আমার নেককার বান্দা উনাদের মধ্যে শামিল হয়ে যান এবং সম্মানিত বেহেশতে প্রবেশ করুন।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফজ্র শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৭-৩০)
এরপর তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করে তা‘আয্যাযা (অর্থ বিজয়ী হওয়া) উচ্চারণ করতে লাগলেন এবং ‘আল্লাহ আল্লাহ আল্লাহ’ বললেন। এরপর জিহ্বা মুবারক তালুর সাথে লেগে গেল। এভাবে ৫৬১ হিজরী শরীফ উনার পবিত্র রবীউছ ছানী মাসের ১১ তারিখে হযরত গ্বাউছুল আ’যম বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সম্মানিত ও পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৪) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৮ই রবী‘উছ ছানী শরীফ:
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ দিবস মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম প্রকাশ পাওয়ার পূর্বে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার আক্বদ মুবারক হয়েছিলো আবূ লাহাবের পুত্র উতবার সাথে এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার আক্বদ মুবারক হয়েছিলো উতাইবার সাথে। তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৭ বছরের কাছাকাছি আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার দুনিয়াবী দৃষ্টিতে সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৫ বছরের কাছাকাছি। এটি ছিল শুধু একটি আনুষ্ঠানিক আক্বদ মুবারক। উনাদেরকে তাদের গৃহে যেতে হয়নি। সুবহানাল্লাহ! তার আগেই সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ‘মাসাদ শরীফ’ নাযিল হওয়ার পর আবূ লাহাব ও তার স্ত্রীর কারণে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে উতবাহ মাহরূম হয়ে যায় অর্থাৎ সম্মানিত খিদমত মুবারক করার ব্যাপারে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়। না‘ঊযুবিল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক থেকে উতাইবাহ মাহরূম হয়ে যায় অর্থাৎ সম্মানিত খিদমত মুবারক করার ব্যাপারে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়। না‘ঊযুবিল্লাহ!
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া থেকে উতবাহ যখন মাহরূম হয়ে যায়, তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ও পবিত্র ওহী মুবারক নাযিল করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলে দেন যে, আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি (মহান আল্লাহ পাক) বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ সুসম্পন্ন মুবারক করেছি। সুবহানাল্লাহ! আপনিও উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ দুনিয়ার যমীনে সুসম্পন্ন মুবারক করুন। সুবহানাল্লাহ! তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দুনিয়াতে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সুসম্পন্ন মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
এই সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْـنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ اَوْحٰى اِلَـىَّ اَنْ اُزَوِّجَ كَرِيـْمَتَـىَّ مِنْ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ ذِى النُّوْرَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ) سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلنُّوْرَ الثَّانِيَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ رُقَيَّةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) وَسَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اَلنُّوْرَ الثَّالِثَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتَنَا حَضْرَتْ اُمَّ كُلْثُوْمٍ عَلَيْهَا السَّلَامُ)
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল করেছেন, আমি যেন আমার মহাসম্মানিত দুই আওলাদ আলাইহিমাস সালাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সুসম্পন্ন মুবারক করি।” সুবহানাল্লাহ! (মা’রিফাতুছ ছাহাবা-লি আবী নাঈম ২২/২২৪)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَمَرَنِـىْ رَبِّـىْ اَنْ اُزَوِّجَ كَرِيْـمَتَـىَّ مِنْ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ ذِى النُّوْرَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ).
অর্থ: “হযরত ইবনে ‘আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে সম্মানিত ওহী মুবারক করেছেন, আমি যেন আমার মহাসম্মানিত দুই আওলাদ আলাইহিমাস সালাম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সুসম্পন্ন মুবারক করি।” সুবহানাল্লাহ! (জামি‘উল আহাদীছ ৩৫/৪৬৪, ইবনে ‘আসাকির ৩৯/৪১)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرُ الشَّفِيْعِ لِـسَيِّدِنَا حَضْرَتْ ذِى النُّوْرَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدِنَا حَضْرَتْ عُثْمَانَ عَلَيْهِ السَّلَامُ) مَا اَنَا اُزَوِّجُ بَنَاتِىْ وَلٰكِنَّ اللهَ تَعَالـٰى يُـزَوِّجُـهُـنَّ.
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার জন্য সর্বোত্তম সুপারিশকারী রয়েছেন। আমি আমার মহাসম্মানিত বানাত আলাইহিমাস সালাম উনাদের (সাথে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সুসম্পন্ন মুবারক করিনি; বরং মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং নিজেই সেটা সুসম্পন্ন মুবারক করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৪/৪৯)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ সম্পর্কে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার আঙ্গিনায় কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে বসেছিলাম। এমন সময় জনৈক ব্যক্তি হঠাৎ উপস্থিত হয়ে জানায় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনাকে আবূ লাহাবের পুত্র উতবার সাথে সম্মানিত আক্বদ মুবারক দিয়েছেন। রূপ-সৌন্দর্য এবং বেমেছাল গুণ-বৈশিষ্ট্যের জন্য সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি মশহুর ছিলেন। এ কারণে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য আমার প্রবল ইচ্ছা ছিলো। এ খবর শুনে আমি বিচলিত হয়ে পড়ি এবং সোজা ঘরে চলে যাই। ঘরে ছিলেন আমার সম্মানিতা খালা সু’দা বিনতে কুরাইয রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা। তিনি পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবের ইলম রাখতেন। সুবহানাল্লাহ!
আমাকে দেখেই তিনি বলেন-
اَبْشِرْ وَحُـيِّـيْتَ ثَلَاثًا تَتْرَا … ثُـمَّ ثَلَاثًا وَّثَلَاثًا اُخْرٰى
ثُـمَّ بِاُخْرٰى كَىْ تَتِمَّ عَشْرَا … اَتَاكَ خَيْـرٌ وَّوُقِـيْتَ شَرَّا
اُنْكِحَتْ وَاللهِ حَصَانًا زَهْرَا … وَاَنْتَ بِكْرٌ وَّلَقِيْتَ بِكْرَا
وَافَيْتَهَا بِنْتَ عَظِيْمٍ قَدْرَا…بَنَيْتَ اَمْرًا قَدْ اَشَادَ ذِكْرَا.
অর্থ: “(হে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম!) আপনার জন্য সুসংবাদ। আপনাকে তিনবার সালাম। এরপর তিনবার, আবার তিনবার আপনাকে সালাম। এরপর একবার। এমনিভাবে দশবার সালাম পূর্ণ হোক। সুবহানাল্লাহ! আপনি কল্যাণ মুবারক লাভ করেছেন এবং অমঙ্গল ও অকল্যাণ থেকে রক্ষা পেয়েছেন। মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ! আপনি এমন একজন মহাসম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুবারক উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবতে ‘আযীম শরীফ করবেন, যিনি হবেন ফুলের মতো নিষ্কুলষ তথা মহাপবিত্র এবং বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! আপনিও অবিবাহিত আর আপনার মহাসম্মানিত যাওজাতুম মুকাররমাহ আলাইহাস সালাম তিনিও বাকিরাহ অর্থাৎ কোনো জিন-ইনসানের স্পর্শ মুবারক-এ আসেননি। তিনি হবেন এক মহান মর্যাদাবান ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার মহাসম্মানিত বানাত আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আপনি এমন এক মহাসম্মানিত কাজ মুবারক উনার ভিত্তি স্থাপন করেছেন, যা আপনার সুমহান মর্যাদা-মর্তবা মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ ঘটাবেন।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
فَعَجِبْتُ مِنْ قَوْلـِهَا حَيْثُ تُبَشِّرُنِـىْ بِامْرَاَةٍ قَدْ تَزَوَّجَتْ بِغَيْـرِىْ فَقُلْتُ يَا خَالَةُ مَا تَقُوْلِيْـنَ
অর্থ: “আমি উনার মুখে এসব কথা শুনে বিস্মিত হলাম, আশ্চর্যান্তি হলাম। কারণ তিনি আমাকে এমন এক মহাসম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার সুসংবাদ মুবারক দিচ্ছেন, যেই মহাসম্মানিত ব্যক্তিত্ব মুবারক উনার সম্মানিত আক্বদ মুবারক সম্পন্ন মুবারক হয়েছেন, আমি ছাড়া অন্য একজনের সাথে। তখন আমি বললাম, খালাজান আপনি কী বলছেন?”
জবাবে তিনি বললেন-
عُثْمَانُ يَا عُثْمَانُ يَا عُثْمَانُ … لَكَ الْـجَمَالُ وَلَكَ الشَّانُ هٰذَا نَبِـىٌّ مَّعَهُ الْبُرْهَانُ… اَرْسَلَهٗ بِـحَقِّهِ الدَّيَّانُ. وجَاءَهُ التَّنْزِيْلُ وَالْفُرْقَانُ … فَاتْبَعْهُ لَا تَغْتَالُكَ الْاَوْثَانُ.
অর্থ: “হে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম! হে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম! হে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম! আপনার রয়েছে বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক এবং সীমাহীন মর্যাদা মুবারক। আর তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার সাথে রয়েছেন বুরহান। মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সত্য-সঠিক দ্বীনসহ প্রেরণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি ‘আত তানযীল এবং আল ফুরক্বান’ তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ নিয়ে এসেছেন। সুবহানাল্লাহ! অতএব, আপনি উনাকে অনুসরণ করুন। মূর্তি যেন আপনাকে ভুল পথে নিয়ে না যায়।”
অসমাপ্ত
(পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন)