৩৪তম ফতওয়া হিসেবে
“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ
সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।
বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিনসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। যেমন তারা বলে থাকে যে, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!
অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-
استحلال الـمعصية كفر.
অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)
অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।
অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!
কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি” প্রকাশ করা হলো।
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন ও সময়ের গুরুত্ব, ফযীলত ও আহকাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফাতাওয়া-
মহাসম্মানিত পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার ফাযায়িল-ফযীলত ও গুরুত্ব
আস-সানাতুল্ ক্বমারিয়্যাহ তথা হিজরী বছর উনার মাসের সংখ্যা ১২টি। তন্মধ্যে মহাসম্মানিত পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস একটি বিশেষ মর্যাদাময় মাস। যেমনটি মহান আল্লাহ তায়ালা রব্বুল আলামীন তিনি উনার পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ তথা পবিত্র কুরআন মাজীদ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ عِدَّةَ الشُّهُوْرِ عِنْدَ اللهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِىْ كِتَابِ اللهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّموتِ وَالْاَرْضَ مِنْهَا اَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذلِكَ الدِّيْنُ الْقَيّمُ فَلَا تَظْلِمُوْا فِيهِنَّ اَنْفُسَكُمْ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِيْنَ كَافَّةً كَمَا يُقَاتِلُوْنَكُمْ كَافَّةً وَاعْلَمُوْا اَنَّ اللهَ مَعَ الْمُتَّقِيْنَ.
অর্থ: নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট উনার বিধানে আসমানসমূহ ও যমীনসমূহ সৃষ্টির দিন হতেই গণনা হিসেবে মাসের সংখ্যা ১২টি। তন্মধ্যে ৪টি হারাম (যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ) মাস। এটাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এ মাসগুলোর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি যুলূম করো না। তোমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে জিহাদ করবে, যেমন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ করে থাকে। আর জেনে রাখুন! মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি মুত্তাক্বীন উনাদের সঙ্গে আছেন। (পবিত্র সূরাতুত তাওবা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ-৩৬)
মহাসম্মানিত পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার কতিপয় বরকতময় ঐতিহাসিক বিশেষ রাত ও দিন
(১১)
সুমহান বরকতময় ঐতিহাসিক পবিত্র ১লা রবীউল আউওয়াল শরীফ-
সুমহান বরকতময় ঐতিহাসিক পবিত্র পহেলা রবীউল আউওয়াল শরীফ- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে পবিত্র মদীনা শরীফে ‘পবিত্র হিজরত মুবারক’ করার মহাসম্মানিত দিন। সুবহানাল্লাহ! هجرة ‘হিজরত’ শব্দটি هجرا হিজরান অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সাধারণভাবে দেশত্যাগ করাকে ‘হিজরত’ বলা হয়। সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার পরিভাষায় হিজরত বলা হয়, ফিতনা-ফাসাদের আশঙ্কায় অথবা সম্মানিত দ্বীন উনার উপর ইস্তিক্বামত থাকার উদ্দেশ্যে অথবা সম্মানিত দ্বীন উনাকে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশত্যাগ করে অন্য কোনো দেশে গমন করা। মূলত, ‘সম্মানিত দ্বীন উনার কারণে কোনো দেশত্যাগ করাও হিজরতের অন্তর্ভুক্ত।’
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দুশমন কাফির-মুশরিকরা গোপনে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্তে উপনীত হলো যে, আগামীকাল ভোরবেলা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার পবিত্র হুজরা শরীফ থেকে যখন বাইরে বের হয়ে আসবেন তখন হঠাৎ হামলা করে উনাকে শহীদ করা হবে। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! কাফির-মুশরিকদের এসব গোপন সিদ্ধান্তের কথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জানতে পারেন। কারণ তিনি তো ছহিবে মুত্তালা আলাল গইব। অতঃপর সেই প্রতিক্ষিত সময়টি এলো যখন তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে পবিত্র মদীনা শরীফ পবিত্র হিজরত মুবারক করার বিষয়ে পবিত্র ওহী মুবারক উনার মাধ্যমে নির্দেশ মুবারক পেলেন। এদিকে পবিত্র হিজরত উনার ছয় মাস পূর্ব থেকেই তিনি আফযালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনাকে জানিয়ে রাখেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকেও হিজরত করতে হবে। তাই তিনি পূর্ব থেকেই হিজরত করার জন্যে দুটি উষ্ট্রী এবং কিছু পাথেয় তৈরি করে রাখেন।
নির্দিষ্ট রাতে কাফিররা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুজরা শরীফ ঘেরাও করলো। রাত যখন গভীর হলো, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হুজরা শরীফ থেকে বের হলেন। সে সময় তিনি ‘পবিত্র সূরা ইয়াসীন শরীফ’ উনার একটি পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করছিলেন। তিনি এক মুঠো মাটি হাতে নিয়ে ‘শাহাতিল ওয়াজূহ’ (মুখমণ্ডল আচ্ছন্ন হয়ে যাক) এটা পাঠ করে কাফির-মুশরিকদের দিকে ছুঁড়ে মারলেন এবং তাদের ব্যুহ ভেদ করে নির্বিঘ্নে বেরিয়ে গেলেন। সে সময় মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক কুদরতে অবরোধকারীরা যেন তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলো; ফলে তারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বেরিয়ে যেতে দেখতে পেলো না। প্রথমে তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার গৃহে গমন করলেন এবং সেখান থেকে উনাকে নিয়ে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার বাইরে গিয়ে পবিত্র ছাওর পর্বত গুহায় তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন।
ভোরবেলা কাফির-মুশরিকরা জানতে পেলো- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ ছেড়ে চলে গেছেন। তারা উনার সন্ধানে চারদিকে ছুটাছুটি শুরু করলো। তারা খুঁজতে খুঁজতে ‘পবিত্র ছাওর’ পর্বতের কাছে গেলো। তাদের পদধ্বনি শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কাফির-মুশরিকরা যদি আমাদেরকে দেখে ফেলে?’ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন- “চিন্তার কোনো কারণ নেই। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।” মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক কুদরতে গুহামুখে এমন কতকগুলো নিদর্শন মুবারক ফুটে উঠলো যে, তা দেখে কাফির-মুশরিকরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়লো। তাদের মনে ধারণা জন্মালো যে, এ গুহার ভেতরে কেউ প্রবেশ করেননি। তাই তারা ফিরে গেলো। সুবহানাল্লাহ! তিন দিন তিন রাত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনারা সেখানে অবস্থান মুবারক করেন। চতুর্থ দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছওর পর্বত গুহা থেকে বের হয়ে এক রাত এক দিন পথ চললেন। পরদিন দুপুর বেলা রোদের তেজ প্রখর হয়ে উঠলে বিশ্রামের জন্যে একটি বৃহদাকার পাথরের ছায়ায় উনারা কিছুক্ষণ অবস্থান মুবারক করলেন। অদূরেই একটি গোয়ালা ছিল; তার বকরী থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুধ পান করলেন।
অতঃপর সেখান থেকে তিনি আবার রওয়ানা হলেন। তিনি সামনে পা মুবারক বাড়াতেই সোরাকা বিন জাশিম নামক জনৈক কুরাইশ হঠাৎ উনাকে দেখে ফেললো। সে পুরস্কারের লোভে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্ধানে বেরিয়েছিল। সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেখতে পেয়েই ঘোড়া ছুটিয়ে দিলো। কিন্তু ঘোড়াটি হোঁচট খেয়ে মাটিতে পড়ে গেল। সে আবার নিজেকে সামলে নিলো এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর হামলা করার জন্যে তৈরি হলো। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! কিন্তু এবারও সামনে এগুতেই তার ঘোড়া হাঁটু পর্যন্ত মাটিতে বসে গেল। এবার সোরাকা শঙ্কিত হয়ে উঠলো এবং বুঝতে পারলো। ব্যাপারটা মোটেই সুবিধাজনক নয়। তার পক্ষে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর হামলা করা কিছুতেই সম্ভবপর নয়। সে অত্যন্ত ভীত হয়ে পড়লো এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে আত্মসমর্পণ করে ক্ষমা ভিক্ষা চাইলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাকে ক্ষমা করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক আগমন বার্তা পূর্বেই পবিত্র মদীনা শরীফ পৌঁছেছিল। তাই গোটা পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মুবারক শুভাগমনের জন্যে প্রতীক্ষমান ছিলেন। ছোট-বড় সবাই প্রতিদিন সকালে শহরের বাইরে গিয়ে জমায়েত হতেন এবং দুপুর পর্যন্ত ইন্তেজার করে ফিরে আসতেন। অবশেষে একদিন উনাদের সেই প্রতীক্ষিত বরকতময় মুহূর্তটি এসেই পড়লো। দূর থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তাশরীফ মুবারক নেয়ার আলামত দেখে গোটা শহরটি তাকবীর ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠলো। প্রত্যেক প্রতীক্ষাকারী হৃদয় উজাড় করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বাগত জানালেন এই বলে যে, “ত্বলায়াল বাদরু আলাইনা, মিন ছানিয়াতিল বিদায়ি। ওয়াজাবাত শুকরু আলাইনা, মাদায়া লিল্লাহি দাঈ।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক করার সৌভাগ্য কে লাভ করবেন? এর সমাধান মোটেই সহজসাধ্য ছিল না। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মুবারক সমাধান দিয়ে বললেন যে, আমার সম্মানিত উষ্ট্রী যে সৌভাগ্যবান ব্যক্তির গৃহের সামনে দাঁড়াবে, এ খিদমত মুবারক করার সৌভাগ্য তিনিই লাভ করবেন।’ ঘটনাক্রমে এ সৌভাগ্যটুকু লাভ করলেন হযরত আবু আইয়ুব আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। সুবহানাল্লাহ! বর্তমানে যেখানে মসজিদে নববী শরীফ অবস্থিত, উনার নিকটেই ছিল উনার মুবারক গৃহ। গৃহ মুবারকটি ছিল দ্বিতল বিশিষ্ট। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশ্রাম মুবারকের জন্যে তিনি উপরের তলাটি পেশ করেন। কিন্তু যিয়ারতপ্রার্থীদের আসা-যাওয়ার সুবিধার্থে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিচের তলায় থাকা পছন্দ করলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি প্রায় সাত মাস এখানে মুবারক অবস্থান করেন। সুবহানাল্লাহ! এটাই হচ্ছেন- পবিত্র হিজরত মুবারক উনার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।
মূলকথা হলো- সুমহান বরকতময় ঐতিহাসিক পবিত্র পহেলা রবীউল আউওয়াল শরীফ- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে পবিত্র মদীনা শরীফে ‘পবিত্র হিজরত মুবারক’ করার সম্মানিত দিন। এ উপলক্ষে সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- পবিত্র মীলাদ শরীফ, পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ মাহফিল করে ‘পবিত্র হিজরত মুবারক’ উনার আলোচনা মুবারক করে ইবরত-নছীহত হাছিল করা। আর সরকারের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে- পবিত্র হিজরত মুবারক উনার বিষয়টি সমস্ত পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি এ পবিত্র দিবসটি পালনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
(১২)
সুমহান বরকতময় মহাপবিত্র আযীমুশ্ শান ২রা রবীউল আউওয়াল শরীফ
সুমহান বরকতময় মহাপবিত্র আযীমুশ্ শান ২রা রবীউল আউওয়াল শরীফ ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم احبوا اهل بيتى لحبى.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘আমার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো আমার পবিত্র মুহব্বত মুবারক ও সন্তুষ্টি মুবারক লাভের জন্য।’ (আল মুস্তাদরাক আলাছ ছহীহাঈন লিল হাকিম, পরিচ্ছেদ: ওয়া মিম মানাক্বিবি আহলি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা ও আলিহী ওয়া সাল্লামা ৩য় খ- ১৬২ পৃষ্ঠা, হাদীছ শরীফ নম্বর: ৪৭১৬, প্রকাশনা: দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ, বাইরূত লেবানন। আস-সুনানুল ওয়ারিদাহ ফিল ফিতান ওয়া গওয়ায়িলিহা ওয়াস সাযাহ ওয়া আশরাতিহা, লেখক: হযরত আবূ আমর উছমান বিন সাঈদ মুকরী দানী, জন্ম: ৩৭১ হিজরী, ইন্তিকাল: ৪৪৪ হিজরী, পরিচ্ছেদ: ক্বওলুন নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা লা তাযালু ত্বায়িফাতুম মিন উম্মাতী আলাল হাক্কি যাহিরীন আন্নাহা লা তাজতামিউ আলা দ্বলালাহ ওয়া আন্নাহু লা ইয়াযালু ফীহা মান ইযা সুয়িলা ওয়াফকুন ওয়া নাহনু যালিক, ৩য় খ- ৭৪৯ পৃষ্ঠা, প্রকাশনা: দারুল আছিমাহ, রিয়াদ)
প্রত্যেক মুসলমান উনাদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে- উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক বা জীবনী মুবারক জানা, উনাকে মুহব্বত মুবারক করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা ও অনুসরণ করা। আর প্রত্যেক মুসলিম অমুসলিম সরকারের জন্য ফরয হচ্ছে- উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করা এবং উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস উপলক্ষে মাহফিলের আঞ্জাম দেয়ার পাশাপাশি বাধ্যতামূলক ছুটি ঘোষণা করা।
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আছ ছানী, আশবাহুল খলক্বি বিরসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুল বাশার আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় মুবারক হচ্ছে, তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে তিনি হচ্ছেন ‘ছানী তথা দ্বিতীয়।’ উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন ঈমান। সুবহানাল্লাহ!
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশের ৯ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার ২ তারিখে ইয়াওমুল খমীস ছুবহে সাদিকের সময় মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করে সমস্ত জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসীকে অফুরন্ত রহমত, বরকত, সাকীনা ও নিয়ামত মুবারক দানে ধন্য করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী জিন্দেগী মুবারক অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৩১ বছর এবং উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৪৬ বছর। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আবনা’, সম্মানিত লখতে জিগার মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ পাওয়ার পরপরই উনার সম্মানিত নাম মুবারক রাখেন ‘সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! আর ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি যেহেতু প্রায় ৭ দিন দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করেন, তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার সম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার ৭ম দিন অর্থাৎ ৮ই রবীউল আউওয়াল শরীফ সকালে দুটি দুম্বা বা খাসি দ্বারা সম্মানিত আক্বীক্বা মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর অনেক উট ও অন্যান্য পশু যবাই করে বিশেষ মেহমানদারীর ব্যবস্থা করেন। সুবহানাল্লাহ!
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস তিনি দুনিয়ার যমীনে প্রায় ৭ দিন অবস্থান মুবারক করেন। তিনি এই ৭ দিনই উনার মহাসম্মানিত আব্বাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাদের সম্মানিত কোল মুবারক-এ বেমেছাল আদর-যতœ, স্নেহ-মমতা, মায়া-মুহব্বত মুবারক-এ লালিত-পালিত হন। সুবহানাল্লাহ!
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার প্রায় ৯ বছর বাকি থাকতে মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবে সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত বিছালী শান মুবারক হাদিয়া মুবারক করে উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ নিয়ে যান। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন মহাপবিত্র ৮ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া বাদ আছর। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজে উনার সম্মানিত লখতে জিগার ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত গোসল মুবারক করান এবং সম্মানিত কাফন মুবারক পরান এবং উনাকে উনার সম্মানিত রওযা শরীফ মুবারক-এ রাখেন। সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাদের দু’চোখ মুবারক দিয়ে অবিরত ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত হচ্ছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
মূল কথা হলো- সুমহান বরকতময় মহাপবিত্র আযীমুশ্ শান ২রা রবীউল আউওয়াল শরীফ ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। তাই প্রত্যেক মুসলমান উনাদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে- উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক বা জীবনী মুবারক জানা, উনাকে মুহব্বত মুবারক করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা ও অনুসরণ করা। আর প্রত্যেক মুসলিম অমুসলিম সরকারের জন্য ফরয হচ্ছে- উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করা এবং উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস উপলক্ষে মাহফিলের আঞ্জাম দেয়ার পাশাপাশি বাধ্যতামূলক ছুটি ঘোষণা করা।
(১৩)
সুমহান বরকতময় মহাপবিত্র আযীমুশ্ শান ৩রা রবীউল আউওয়াল শরীফ
সুমহান বেমেছাল ফযীলতপূর্ণ ৩ রবীউল আউওয়াল শরীফ সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দিবস। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وذكرهم بايام الله ان فى ذلك لايات لكل صبار شكور
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শন সম্বলিত দিবসগুলিকে স্মরণ করিয়ে দিন সমস্ত কায়িনাতকে। নিশ্চয়ই এর মধ্যে ধৈর্যশীল ও শোকরগোজার বান্দা-বান্দী উনাদের জন্য ইবরত ও নছীহত রয়েছে।” (পবিত্র সূরাহ ইবরাহীম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)
তাই এ সম্মানিত দিবস উপলক্ষে সকলের জন্য ফরয হচ্ছে- উনার পবিত্র সাওয়ানেহ উমরী মুবারক আলোচনা করার লক্ষ্যে মাহফিল করা এবং পবিত্র মীলাদ শরীফ, পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ করা। আর সরকারের জন্যও ফরয হচ্ছে- উনার পবিত্র জীবনী মুবারক শিশুশ্রেণী থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ শ্রেণী পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করা এবং উনার পবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ দিবসে মাহফিল করা ও সরকারি ছুটি ঘোষণা করা।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, অত্যন্ত স্নেহময়ী বানাত (মেয়ে) এবং উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা চার বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের একজন অর্থাৎ তৃতীয়া বানাত সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম। মূলত, তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদগণ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতমা। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত রিসালত মুবারক প্রকাশের প্রায় ৫ বছর পূর্বে ১১ই জুমাদাল ঊলা শরীফ ইয়াওমুস্ সাব্ত শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী জিন্দেগী মুবারক অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৩৫ বছর। আর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার বয়স মুবারক ছিলেন ৫০ বছর। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশ পাওয়ার পূর্বে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আক্বদ শরীফ হয়েছিলো উতাইবার সাথে। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৫ বছরের কাছাকাছি। এটি ছিল শুধু একটি আনুষ্ঠানিক আক্বদ। উনাদেরকে তাদের গৃহে যেতে হয়নি। সুবহানাল্লাহ! তার আগেই সম্মানিত সূরা ‘লাহাব শরীফ’ নাযিল হওয়ার পর আবূ লাহাব ও তার স্ত্রীর কারণে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার খিদমত মুবারক থেকে উতাইবাহ মাহরূম হয়ে যায়। অর্থাৎ মুবারক খিদমত করার ব্যাপারে অযোগ্য বলে প্রমাণিত হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার প্রায় ৬ মাস পর সাইয়্যিদুশ শুহূর মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার ৩ তারিখ লাইলাতুল জুমুয়াহ তথা জুমুয়াবার বাদ মাগরিব মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত বানাত সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সম্পন্ন করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ২০ বছর। আর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৪৯ বছর। প্রকৃতপক্ষে মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ বিশেষভাবে অনুষ্ঠান করে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করেন। তারপর তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উনাদের আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ দুনিয়ার যমীনে সুসম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ মুবারক প্রদান করেন। এই সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ابى هريرة رضى الله تعالى عنه فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم اتقول ذلك يا حضرت عثمان عليه السلام وهذا حضرت جبريل عليه الصلاة والسلام يأمرنى عن امر الله عز وجل ان ازوجك اختها ام كلثوم على مثل صداقها وعلى مثل عدتها فزوجه رسول الله صلى الله عليه وسلم ايها.
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসেছেন। অতঃপর তিনি বলেছেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে জানানোর জন্য ইরশাদ মুবারাক করেছেন যে, আপনি যেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার অনুরূপ সম্মানিত মোহরানা মুবারক অনুযায়ী হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সম্পন্ন করেন।” সুবহানাল্লাহ! (আল-মুস্তাদরাক লিল হাকিম, পরিচ্ছেদ: যিকরু উম্মি কুলছূম বিনতে রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চতুর্থ খ- ৫৪ পৃষ্ঠা, হাদীছ নম্বর: ৬৮৬০, প্রকাশনা: দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যাহ বইরূত লেবানন)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার বর্ণনা দিতে গিয়ে উম্মুল মু’মিনীন আছছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম তিনি বলেছেন, যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সম্পন্ন করেন, তখন তিনি হযরত উম্মু আইমান আলাইহাস সালাম উনাকে বলেন, আপনি আমার সম্মানিতা আওলাদ আলাইহাস সালাম উনাকে প্রস্তুত করুন এবং উনাকে হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার মধ্যে নিয়ে যান। সুবহানাল্লাহ! হযরত উম্মু আইমান আলাইহাস সালাম তিনি তাই করলেন। অতঃপর সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সম্পন্ন হওয়ার তিন দিন পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে দেখার জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হুজরা শরীফ উনার মধ্যে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। তারপর তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, “হে আমার সম্মানিতা প্রিয় আওলাদ আলাইহাস সালাম, আপনি আপনার সম্মানিত আহাল উনাকে কিরূপ পেয়েছেন? জবাবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি উনাকে সর্বোত্তম আহাল হিসেবে পেয়েছি। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাবধান! তিনি মানুষের মাঝে আপনার সম্মানিত দাদা সাইয়্যিদুনা হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সাথে এবং আপনার মহাসম্মানিত আব্বাজান নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সাথে সর্বাধিক সম্মানিত সাদৃশ্যতা মুবারক রাখেন।” সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সাথে পবিত্র নিসবাতুল আযীম শরীফ সম্পন্ন হওয়ার প্রায় সাড়ে ৬ বছর পর ৯ম হিজরী সনের ৬ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ২৬ বছর ৩ মাস ২৫ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং উনার পবিত্র জানাযা নামায পড়ান। সুবহানাল্লাহ!
মূলত উনার ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা ও বুযূর্গী সম্পর্কিত ইলম না থাকার কারণে অনেকেই উনাকে যথাযথ মুহব্বত ও অনুসরণ করতে পারছে না। যার ফলে তারা মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দি মুবারক হাছিলে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই উনার সম্পর্কে জানা সকলের জন্যই ফরয। কেননা যে বিষয়টা আমল করা ফরয সে বিষয়ে ইলম অর্জন করাও ফরয। অথচ আশ্চর্যের বিষয় হলো ৯৮ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশের মাদরাসা, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে উনার সম্পর্কে কোনো আলোচনাই নেই। নাউযুবিল্লাহ! তাহলে মুসলমানগণ কী করে হাক্বীক্বী মুসলমান হবে? তাই সরকারের জন্য ফরয হচ্ছে- শতকরা ৯৮ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশের সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সিলেবাস বা পাঠ্যপুস্তকে উনার জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করা। উনার পবিত্র নিসবাতুল আযীম মুবারক দিবস উনার সম্মানার্থে মাহফিল আয়োজন করা ও সরকারি ছুটি ঘোষণা করা।
অসমাপ্ত: পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন