মূলঃ হযরত শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিছে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি,
ভাষান্তরঃ মাওলানা মুহম্মদ ফযলুল হক
হযরত শায়খ শরফুদ্দীন আহমদ
রহমতুল্লাহি আলাইহি ৬৮৫-৭৫৬হি:
ইতোমধ্যে প্রায় বিশ বছর অতিবাহিত হয়েছে। শারীরিক দুর্বলতা এসেছে। রাত্রি জাগরণের ব্যাপারেও দুর্বল হয়ে গিয়েছি তখন আমি বারগাহে ইলাহিতে আরযী পেশ করলাম, হে রব্বুল আলামীন আল্লাহ পাক! আমি কোন ওসীলায় বা কিসের বদৌলতে পূর্বোক্ত সেই নিয়ামতরাজী লাভ করতে পারবো? যার মাধ্যমে উভয় জাহানে কামিয়াবী লাভ করা যাবে, আর আমার গোলাম বা অধীন হয়ে দূরত্বের গৃহে অবস্থান করে দাঁড়িয়ে থাকবে এবং বন্ধুত্ব জাহির করে (অন্য কিছুর সাথে) সম্পর্কহীনতা অবলম্বন করে আরামের সাথে বসে থাকবে। যেটা প্রকৃতপক্ষে মুহব্বতের বা বন্ধুত্বের আলামত নয়।
শে’র:
بیچا رہ دلم شکستہ تاکے باشد+ وززخم فراق خستہ تاکے باشد درأرز وے کسی کس بے اوخوش نیست+ بر خیزد وبگونشتہ تاکے باشد.
আমার অন্তর কবে বা কখন থেকে টুটা ফাটা হবে, আর জুদায়ীর জখমে আমার অন্তর কখন ভগ্ন হৃদয় হবে? আমার দিল তার কোন আরজু পুরা হলেও সে খুশি হবে না। আর তার কোন কাজে স্থির থাকাকেও সে বলবে এভাবে (এ মাক্বামে) কতদিন বসে থাকবে?
পরিশেষে তিনি হযরত সা’দী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ন্যায় জঙ্গলের পথ অবলম্বন করলেন। যার মাথায় তার মত মাশুকের খেয়াল বদ্ধমূল রয়েছে।
মাকতূব: নতুন মাকতূবসমুহ যা শায়খের খিদমতে পশ্চিম দেশের ব্যাপারে লিখা হয়েছিল। উহাতে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, এ এলাকার কোন কাজে আমি কিভাবে অংশগ্রহণ করবো? যতক্ষণ আমি আরব জাহানে থাকবো ততক্ষণ আমি কি করবো? আমার অন্তরে এহেন চিন্তাই রয়েছে এবং যখন তথা হতে ফিরে আসব তখনই বা কি করবো? আমার পদশক্তি এর উত্তর দিল যে, এখন অপরাগতাবশতঃ হিন্দুস্থানেই অবস্থান করো। অর্থাৎ পুনরায় চলার মত শক্তি হলে আবারো আরব জাহানে এসো।
হযরত শায়খ ফজলুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তথায় চল্লিশ বছর অবস্থান করেন। কিন্তু কোন কাজই তথায় তিনি করেননি। পুনরায় উনাকে নির্দেশ দেয়া হলো যে, আবারো আরব জাহানে গমন কর। (শায়খের নির্দেশে) সেখানে পৌঁছার পর উনার এমনসব নিয়ামতরাজী হাসিল হয়েছে যা বর্ণনাতীত। আমি শায়খ হযরত মুজাফফর রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর হায়াতে থাকতেই তাঁর ছোহবত থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিলাম। একদা আমি আবার উনার খিদমতে হাজির হলাম। তখন তিনি বললেন, মাওলানা সাহেব! মাশরাব এবং তাছাউফের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। সেজন্য বর্তমানে আমার থেকে আলাদা থাকলেও কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু আমি যখন উনার সাথে আরব জাহান থেকে ফিরে আসছিলাম তখনই তিনি আমার থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন।
একদা তিনি আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বপ্নে দেখলেন। মুবারক সেই যিয়ারতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললেন, তুমি এখন চলে যাও! আবার পুনরায় তোমার সন্তান-সন্ততিসহ ফিরে আসবে। কিন্তু দ্বিতীয়বার চাচাজান আমাদের সকলকেই উনার সঙ্গী হিসেবে নিয়ে গেলেন। আমি মক্কা শরীফে অবস্থানকালীন চাচাজানকে বলেছিলাম যে, আমি পবিত্র মক্কা শরীফ এবং মদীনা শরীফ-এর ফযীলত সম্পর্কিত একখানা কিতাব প্রণয়ন করতে চাই। কিন্তু এখন মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ-এর ফযীলত কে বুঝবে? চাচাজান যদি আজ জীবিত থাকতেন তবে অচিরেই কিতাবখানা লিখে ফেলতাম। (অসমাপ্ত)