মূলঃ হযরত শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিছে দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি,
ভাষান্তরঃ মাওলানা মুহম্মদ ফযলুল হক
¬পূর্ব প্রকাশিতের পর
তাঁর ঐ আহলিয়ার নাম মুবারক হচ্ছে-হযরত বিবি ইছমত রহমতুল্লাহি আলাইহা। এবং দ্বিতীয় আহ্লিয়া-এর নাম মুবারক হচ্ছে- হযরত আমাতুল্লাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহা। ঘটনা হচ্ছে, সুলত্বানুল হিন্দ গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা ছাহিব রহতুল্লাহি আলাইহি বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত শাদী মুবারক করেননি। এক রাতে তিনি আল্লাহ্্ পাক-এর হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন খাতামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বপ্নে দেখলেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে বলতেছেন-æহে মুঈনুদ্দীন তুমি আমার দ্বীনের সাহায্যকারী সত্য কথাই; তবে এখনো একটি সুন্নত বাকী রয়ে গেল।
ঐ রাতে নাবীলী-এর বাদশাহ যার নাম মালিক খিতাব তিনি ঐ এলাকার কাফিরদের উপর আক্রমন করেন। সেখানকার এক রাজার মেয়ে তার হাতে বন্দী হয়। মালিক খিতাব সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মুরীদ ছিলেন। তিনি ঐ বন্দী রাজার মেয়েকে হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর খেদমতে পেশ করেন। হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তাকে কবুল করেন।
অতঃপর সাইয়্যিদ অজীহুদ্দীন মাশহাদী রহমতুল্লাহি এর একজন মেয়ে ছিলেন যিনি পরহেজগারী ও মা’ছুমিয়তের দিক থেকে পূর্ণতায় পৌছেছিলেন। যখন তিনি বালেগা হন তখন একদা তাঁর পিতা হযরত সাইয়্যিদ অজীহুদ্দীন মাশহুদী রহমতুৃল্লাহি আলাইহি স্বপ্নে হযরত ইমাম জাফর ছাদিক রহমতুল্লাহি আলাইহিকে দেখলেন। তিনি তাঁকে বললেন, হে সাইয়্যিদ সাহেব! স্বয়ং রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে নির্দেশ করেছেন, আপনার মেয়েকে সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর খিদমতে দিয়ে দেয়ার জন্য।
সাইয়্যিদ সাহেব যেহেতু খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি-এর অনুসারী ছিলেন তাই তিনি উক্ত স্বপ্ন পরিপূর্ণ ভাবে তাঁকে শুনালেন। তখন সুলত্বানুল হিন্দ গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি বললেনÑহে অজিহুদ্দীন আমি বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছি দুনিয়াবী জীন্দিগী আমার প্রায় শেষ তার পরও যেহেতু স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুবারক ফরমান তাই আমি উহাতে রাজী হলাম। সুলত্বানুল হিন্দ গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর দুজন আহ্লিয়া-এর ঘরেই সন্তান সন্ততি হয়েছিল। রাজার কন্যা যিনি ছিলেন তার ক্রোড়ে বিবি জামীলা রহমতুল্লাহি আলাইহা যিনি পবিত্র কুরআন শরীফ-এর হাফিজা ছিলেন। যিনি রাজার মেয়ে ছিলেন তাঁর নাম বিবি জামীলা নয় যেমন জন সমাজে প্রচলিত আছে। বরং বিবি জামীলা হচ্ছেন রাজার নাতœী এবং হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কন্যা। তাঁর মাজার শরীফ সুলত্বানুল হিন্দ হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর পা মুবারকের নিকটেই অবস্থিত। আর তাঁর স্বামীর নাম ছিল শায়খ রেজা রহমতুল্লাহি আলাইহি। নাগোর-এর এক গ্রামে তাঁর মাজার শরীফ অবস্থিত। হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কন্যা বিবি জামীলা রহমতুল্লাহি আলাইহা-এর ঘরে দু’জন ছেলে সন্তান জন্মগ্রহন করে। বাল্যকালেই তাঁরা বিছাল শরীফ লাভ করেন।
সুলত্বানুল হিন্দ গরীবে নেওয়াজ ইমামুল আম্মাহ্ হাবীবুল্লাহ্ হযরত খাজা সাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর তিনজন ছেলে ছিলেন তাঁরা হচ্ছেন হযরত শায়খ আবু সাঈদ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত শায়খ ফখরুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত হুস্সামুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি।
হযরত সাইয়্যিদ আবু সাঈদ রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত সাইয়্যিদ অজীহুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর নাতী। আর বাকী দুজন অর্থাৎ হযরত শায়খ ফখরুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং হযরত শায়খ হুসসামুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ব্যাপারে ইখতিলাফ রয়েছে। হযরত সাইয়্যিদ গেছু দরাজ রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং অন্যান্য কতিপয় আউলিয়ায়ে কিরাম গণের মতে ঐ দুজন হযরত বিবি ইছমত রহমতুল্লাহি আলাইহা যিনি সাইয়্যিদ অজিহুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মেয়ে তাঁর সন্তান।
আর হযরত সাইয়্যিদ শামসুদ্দীন যাহির রহমতুল্লাহি আলাইহি সহ অন্য কতিপয়ের মতে ঐ দুজন হযরত বিবি আমাতুল্লাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহা যিনি রাজার মেয়ে ছিলেন তাঁর সন্তান। সঠিক বিষয় আল্লাহ্ পাক অধিক অবগত। (চলবে)