৩৩তম ফতওয়া হিসেবে
“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া”- পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
পূর্ব প্রকাশিতের পর
‘জামিউল মাসানীদ’ প্রণেতা ইমাম আবুল মুআয়িদ মুহাম্মদ বিন মাহমুদ খাওয়ারেযমী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উক্ত কিতাবের ভূমিকায় লিখেন, জেনে রাখা উচিত সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ১৫টি মুসনাদ রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, ‘মুসনাদ’ বলা হয় পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার এক বিশেষ প্রকার কিতাবকে; যেখানে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ধারাবাহিকতায় পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করা হয়। অর্থাৎ প্রথমে একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বর্ণিত সব পবিত্র হাদীছ শরীফ উল্লেখ করা হয়। এরপর অন্য হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ উল্লেখ করা হয়। এভাবে কিতাব শেষ করা হয়। মুসনাদ উনার মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ও বড় মুসনাদ শরীফ হল ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুসনাদ শরীফ। এই কিতাবে ২৭,৬৪৭ টি পবিত্র হাদিছ শরীফ বর্ণিত হয়েছে।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পনেরো জন ছাত্র উনার থেকে পনেরোটি মুসনাদ সংকলন করেছেন। প্রতিটি মুসনাদে প্রায় পাঁচশত করে পবিত্র হাদীছ শরীফ রয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
যাঁরা মুসনাদগুলো সংকলন করেছেন উনাদের নাম মুবারক নিচে উল্লখ করা হলো-
১. হযরত হাফেয আবুল কাসিম তালহা বিন মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
২. হযরত আবু আব্দুল্লাহ মুহম্মদ বিন ইয়াকুব রহমতুল্লাহি আলাইহি ।
৩. হযরত আবুল হুসাইন মুহম্মদ বিন মুজাফ্ফার রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৪. হযরত আবু নুআইম ইস্পাহানী রহমতুল্লাহি আলাইহি ।
৫. হযরত আবু বকর মুহম্মদ বিন আব্দুল বাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৬. হযরত আবু আহমদ আব্দুল্লাহ বিন আদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৭. হযরত হাসান বিন যিয়াদ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৮. হযরত উমর বিন হাসান আল আশনানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
৯. হযরত আবু বকর আহমদ বিন মুহম্মদ কিলায়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১০. হযরত আবু আব্দুল্লাহ মুহম্মদ বিন হুসাইন বলখী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১১. হযরত কাযী আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১২. হযরত মুহম্মদ বিন হাসান শায়বানী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৩. হযরত হাম্মাদ বিন ইমাম আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১৪. হযরত মুহম্মদ বিন হাসান শায়বানী রহমতুল্লাহি আলাইহি। উনার আরেকটি নুসখা যেটি কিতাবুল আছার নামে প্রসিদ্ধ ।
১৫. হযরত আবুল কাসিম আব্দুল্লাহ বিন মুহম্মদ আসসাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
স্মর্তব্য যে, কোনো কোনো মুহাক্কিক সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ১৭টি মুসনাদের কথা উল্লেখ করেছেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছাত্র ছিলেন এক লাখের বেশী যারা ব্যাপকভাবে দ্বীনী খিদমত উনার আঞ্জাম দিয়েছেন। স্বয়ং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রণীত ৯৯০ খানা কিতাব ছিল। তন্মধ্যে ৬টি কিতাবকে ‘জাহিরুর রেওয়ায়েত’ বলা হয়। এগুলোর মূল ভিত্তি ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি। কারণ মৌলিক বিষয়গুলো তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকেই শিখেছেন।
আল্লামা ইবনে হাজার শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার জীবনীগ্রন্থ ‘খাইরাতুল হিসান’ গ্রন্থে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এই পবিত্র হাদীছ শরীফখানা বর্ণনা করেন-
تُـرْفَعُ الدُّنْـيَا سَنَةَ خَمْسِيْنَ وَ مِائَةٍ
অর্থাৎ ১৫০ হিজরীতে পৃথিবীর সুন্দর অলঙ্কার উঠে যাবে।
ইমাম কারদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কেননা তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের পরই স্বীয় অগাধ ইলম ও আমল দ্বারা সম্মানিত শরীয়ত উনাকে দুনিয়াতে উজ্জ্বল করেছেন। অতঃপর ১৫০ হিজরীতে পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম বা যবান মুবারকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছানা-ছিফত মুবারক
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِيْ هُرَيْـرَةَ رَضىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اَعْظَمُ النَّاسِ نَصِيْـبًا فِى الْاِسْلَامِ اَهْلُ فَارِسٍ
অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘সম্মানিত দ্বীন অর্জনে সর্বশ্রেষ্ঠ এক ব্যক্তি হবেন পারস্যের অধিবাসী। সুবহানাল্লাহ!
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মর্যাদার প্রতিই ইঙ্গিত বহন করে। পবিত্র হাদীছ শরীফখানা ‘মুসনাদে আবু নুয়াঈম’ শরীফে ১৬ জন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের নিকট থেকে বর্ণিত হয়েছে।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট বিড়ালছানা দেখতে পেয়ে বলেছিলেন, আবু হুরায়রা! সারা দুনিয়ায় তিনি ‘আবূ হুরায়রা’ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনাকে একবার মাটিতে শুয়ে থাকা অবস্থায় দেখে ‘আবু তুরাব’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। সেই থেকে তিনি ‘আবু তুরাব’ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ!
অনুরূপভাবে আরেকজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার দুই হাত মুবারক খানিকটা লম্বা দেখে উনাকে ‘যুল ইয়াদাইন’ বলেছিলেন। মূলত সকল মানুষই ‘যুলইয়াদাইন’ তথা দুই হাত বিশিষ্ট। তথাপি ঐ ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হস্তদ্বয় খানিকটা লম্বা দেখে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে ‘যুলইয়াদাইন’ বলেছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক উনার বরকতে শুধু সেই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ‘যুলইয়াদাইন’ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেন। এমনকি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যেও উনাকে ‘যুলইয়াদাইন’ নামে সম্বোধন করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
উল্লিখিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারকে ‘আযম’ শব্দটি দ্বারা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রতিই ইঙ্গিত মুবারক করেন। ফলে তিনি ইমামে আ’যম নামে সারা দুনিয়ায় প্রসিদ্ধি লাভ করেন।
ইমাম উনাদের মধ্যে তিনি বয়সের দিক থেকে আ’যম, ইলম ও বিচক্ষণতার দিক থেকে আ’যম, ইত্তিবায়ে সুন্নাত মুবারক উনার ক্ষেত্রে আ’যম, মাসআলা ইস্তিম্বাতে আ’যম, গোটা পৃথিবীর উলামায়ে কিরামের ঐক্যমতেও তিনি ইমামে আ’যম। সুবহানাল্লাহ!
এটা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম বা মুখ মুবারক উনার বরকত। তাই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি বললে উনাকেই বোঝানো হয়, অন্য কাউকে নয়।
হাফেয ইবনু আব্দিল বার মালেকী উনার ‘জামিউ বায়ানিল ইলমি ওয়া ফাযলিহী’ কিতাবে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ভূয়সী প্রশংসাকারীদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা তুলে ধরেছেন। সেখানে তিনি আটান্নজন মুহাদ্দিছ ও ফকীহ উনাদের নাম উল্লেখ করেছেন। এই আটান্নজন সম্মিানত দ্বীন ইসলাম উনার ইলমী ইতিহাসে এমন ব্যক্তিত্বের অধিকারী যাঁদেরকে পবিত্র হাদীছ শরীফ ও ফিকহ শাস্ত্রের ইমাম বলা হয়। উক্ত কিতাবের টিকাতে শাইখ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো দুজনের নাম যুক্ত করে বলেন-
وَاَكْثَـرُ مَا حَدَّدَ بِهِ الْعُلَمَاءُ التَّـوَاتُـرَ عَدَدًا سَبْـعُوْنَ فَـقَدْ بَـلَغَ الثَّـنَاءَ عَلَى الْاِمَامِ اَبِيْ حَنِيْـفَةَ حَدَّ التَّـوَاتِرُ وَ لٰكِنْ مِـمَّنْ؟ خِيَارُ سَلَفِ هٰذِهِ الْاُمَّةِ وَعُلَمَاءُهَا الْمَشْهُوْدُ لَـهُمْ بِالدِّيْنِ وَ الْعِلْمِ وَالْوَرَعِ
অর্থ: ‘যেসকল মুহাদ্দিছ তাওয়াতুরের জন্য সংখ্যা নির্ধারণ করেছেন উনাদের অনেকেই সত্তর সংখ্যাকে নির্ধারণ করেছেন। সুতরাং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রশংসাকারীদের সংখ্যা তাওয়াতুর-এর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। তবে এ সত্তর জন কারা? উনারা হচ্ছেন, এই উম্মতের ওই সকল ব্যক্তি যাঁদের দ্বীনদারী, ইলম ও তাকওয়া চিরস্মরণীয়।’
এখানে একটি বিষয় স্মরণযোগ্য যে, ইবনে আব্দুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইন্তিকাল ৪৬৭ হিজরীতে। এজন্য উনার কিতাবে যে আটান্নজন ইমাম উনাদের নাম এসেছে উনারা সবাই ইবনে আব্দুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পূর্বযুগের। এ সকল ইমাম উনাদের অনেকেই সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সমসাময়িক বা কাছাকাছি যুগের। এজন্য ইবনে আব্দুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পরবর্তী যামানার ইমাম, মুজতাহিদ ও ইলমী ব্যক্তিত্বদের নাম উক্ত কিতাবে আসেনি। যেমন হযরত হাফেয সাখাবী, হযরত ইবনে হাজার হাইতামী শাফেয়ী, হযরত আব্দুল ওহাব শারানী, হযরত ইমাম কাসানী, হযরত ইবনু আসীর, হযরত ইমাম সুয়ূতী, হযরত হাফেয সালেহী রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারাসহ শত শত ইমাম যাঁরা ইলমের স্তম্ভ। উনারা ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
তাই কিতাবে উল্লেখ করা হয়-
اَجْمَعَتِ الْاُمَّةُ عَلٰى كَوْنَ اَبِيْ حَنِيْـفَةَ فَقِيْـهًا مُـجْتَهِدًا اِمَامًا كَبِيْـرًا فِي الْفِقْهِ
অর্থ: সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মুজতাহিদ, ফক্বীহ ও ফিকহের বড় ইমাম হওয়ার ব্যাপারে উম্মতের ইজমা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (কাওয়ায়েদ ফী উলুমিল হাদীস পৃ ৩১০)
সম্মানিত হানাফী মাযহাব অনুসরণ করার ব্যাপারে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার নির্দেশ মুবারক
মুজাদ্দিদে মিল্লাত, মুজাদ্দিদুয যামান হযরত মাওলানা শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার স্বীয় মূল্যবান গ্রন্থ ‘ফুয়ূযুল হারামাইনে’ তিনি লিখেন-
واستفدت منه صلى الله عليه وسلم ثلاثة امور خلاف ما كان عندى و ما كانذ طبعي ذميل اليه اشد میل فصارت هذه الاستفادة من براهين الحق تعالى الى قوله وثانيهما الوصاة بالتقليد بهذه المذاهب الاربعة لا أخرج منها
অর্থ: ‘হারামাইন শরীফাইন (পবিত্র মক্কা শরীফ ও পবিত্র মদীনা শরীফে) অবস্থানকালে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে আমি স্বপ্নযোগে তিনটি জিনিস অর্জন করেছি। সেগুলো সম্পর্কে আমার ধ্যানধারণা পূর্বে বিপরীত ছিল। তাই স্বপ্নে পাওয়া এ বিষয়গুলো আমার জন্য হক্ব হওয়ার অকাট্য প্রমাণ বহন করে। তন্মধ্যে দ্বিতীয়টি ছিল- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে মাযহাব চতুষ্টয়ের কোনো একটির তাক্বলীদ করা এবং এর বহির্ভূত না হওয়ার অছীয়ত মুবারক করেছেন। (ফুয়ূযুল হারামাইন পৃষ্ঠা-৬৪-৬৫)
উপরোক্ত কিতাবে মুজাদ্দিদুয যামান হযরত মাওলানা শাহ ওয়ালীউল্লাহ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো লেখেন-
و عرفنى رسول الله صلى الله عليه وسلم ان في المذهب الحنفي طريقة انيقة هى اوفق الطرق بالسنة المعروفة الذى جمعت ونقحت في زمان البخاري و اصحابه
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে হানাফী মাযহাবের পরিচয় বর্ণনা করেন যে, হানাফী মাযহাব এমন উৎকৃষ্ট পদ্ধতিতে হয়েছে, যা সুস্পষ্ট সম্মানিত সুন্নাত তরীকা উনার সঙ্গে অতি সামঞ্জস্যপূর্ণ। যেগুলো পরবর্তীতে ইমাম বুখারী ও উনার সমসাময়িকদের যুগে সুবিন্যস্ত ও আকর্ষণীয়ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। (ফুয়ূযুল হারামাইন পৃষ্ঠা- ৪৮, যাদুল মায়াদ ৫/২৫৭, ইলাউস সুনান-১১/১৯৯)
(পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন)