[সমস্ত প্রশংসা খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য এবং অশেষ-অসীম সম্মানিত ছলাত ও সালাম মুবারক সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ। মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের খাছ রহমত, বরকত, সাকীনাহ, দয়া-দান, ইহসান মুবারক উনাদের কারণে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ” উনার ফতওয়া বিভাগ উনার তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের অকাট্ট দলীলের আলোকে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩.নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬.মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯.ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪.প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন উনার শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কের্ ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮.নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০.শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) ২২.হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪.হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস উনাদের দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-২৩৭), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২০৩তম সংখ্যা), ৩২. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে “হানাফী মাযহাব মতে নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ে ‘আমীন’ অনুচ্চ আওয়াজে বা চুপে চুপে পাঠ করাই শরীয়ত উনার নির্দেশ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২১২তম সংখ্যা), ৩৩. “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২২০তম সংখ্যা-চলমান), ৩৪. “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ ও মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২৩৮-চলমান), ৩৫. “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ ও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নাহ শরীফ অর্থাৎ মহাসম্মানিত শরীয়ত উনার আলোকে খাছ সুন্নতী বাল্যবিবাহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২৬৪-চলমান), ৩৬. মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ও উনার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে এবং বিশেষ করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২৬৫-চলমান), পেশ করার পাশাপাশি-
৩৭তম সম্মানিত ফতওয়া মুবারক হিসেবে
‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা’ শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তারা নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে আখাছ্ছুল খাছ সম্মানিত বিশেষ ফতওয়া মুবারক’ পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি।
পূর্ব প্রকাশিতের পর
২নং সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ এবং উনার তাফসীর বা ব্যাখ্যা
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالَّذِيْنَ يُـؤْذُوْنَ رَسُوْلَ اللهِ لَـهُمْ عَذَابٌ اَلِـيْمٌ
অর্থ: “আর যারা মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
আলোচ্য সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যারা কষ্ট দিবে তাদেরকে কঠিন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রদানের কথা বর্ণনা মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
স্বাভাবিকভাবে সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার বিধান হচ্ছেন, ক্বতলের পরিবর্তে ক্বতল। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বানাত (মেয়ে) আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যারা কষ্ট দিয়েছিলো, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের বিরুদ্ধে সারিয়্যাহ (সৈন্যদল) প্রেরণ করেছেন। শুধু তাই নয়, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন, তাদেরকে পেলেই আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য। সুবহানাল্লাহ! যেমন ‘বুখারী শরীফ’সহ আরো অন্যান্য কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুরাইশদের দু’জন ব্যক্তির নাম ধরে ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنْ لَقِيْـتُمْ فُلَانًا وَّفُلَانًا لِّرَجُلَـيْـنِ مِنْ قُـرَيْشٍ سَـمَّاهُـمَا فَحَـرِّقُـوْهُـمَا بِالنَّارِ
অর্থ: “যদি আপনারা অমুক এবং অমুককে পান, তাহলে তাদেরকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলবেন।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, সুনানে দারিমী, সুনানে সা‘ঈদ ইবনে মানছূর, মুসনাদে বাযযার, আস সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, ছহীহ ইবনে হিব্বান ইত্যাদি)
অপর বর্ণনায় রয়েছেন,
اِنْ ظَفِرْتُـمْ بِـهَبَّارِ بْنِ الْاَسْوَدِ وَالرَّجُلِ الَّذِىْ سَبَـقَ مَعَهٗ اِلـٰى سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ خَـيْـرِ وَاَفْضَلِ بَـنَاتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَـيْهِ وَسَلَّمَ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ زَيْـنَبَ عَلَـيْـهَا السَّلَامُ) فَحَـرِّقُـوْهُـمَا بِالنَّارِ
অর্থ: “যদি আপনারা হাব্বার ইবনে আসওয়াদকে এবং তার সাথে যে লোকটি উম্মু আবীহা, আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে এগিয়ে গিয়েছিলো তাদের উপর বিজয়ী হন, তাহলে তাদেরকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলবেন।” সুবহানাল্লাহ!
অপর বর্ণনায় রয়েছেন,
اِنْ وَّجَدْتُّـمُوْهُ فَاجْعَلُوْهُ بَــيْـنَ حُزْمَتَـىْ حَطَبٍ ثُـمَّ اَشْعِلُوْا فِـيْهِ النَّارَ
অর্থ: “আপনারা যদি তাকে পান, তাহলে তাকে লাকড়ির দুই আঁটির মাঝে রেখে তাতে আগুন জ্বালিয়ে দিবেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুনানে সা‘ঈদ ইবনে মানছূর ২/২৮৬)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পরবর্তীতে ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنْ وَّجَدْتُّـمُوْهُ فَاقْطَعُوْا يَدَهٗ ثُـمَّ اقْطَعُوْا رِجْلَهٗ ثُـمَّ اقْطَعُوْا يَدَهٗ ثُـمَّ اقْطَعُوْا رِجْلَهٗ
অর্থ: “যদি আপনারা তাকে পান, তাহলে প্রথমে তার ডান হাত কাটবেন। তারপর ডান পা কাটবেন। অতঃপর বাম হাত কাটবেন। তারপর বাম পা কাটবেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ তাকে পেলে কঠিন যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে ক্বতল করবেন, কঠিন যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিবেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুনানে সা‘ঈদ ইবনে মানছূর ২/২৮৬)
যদি আন নূরুল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত খইরু ওয়া আফযালু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়ার কারণে এরূপ যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিতে হয়, তাহলে সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দিলে কতটুকু যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা কল্পনার উর্ধ্বে।
কাজেই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের যারা মানহানী করবে, সেটা সরাসরি হোক বা ইশারা ইঙ্গিতেই হোক- তাদের একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড। অবশ্যই অবশ্যই তাদেরকে শরঈ শাস্তিস্বরূপ দৃষ্টান্তমূলকভাবে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। তা শরীয়তের অন্যান্য বিধান অমান্য করার কারণে যেরূপ কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তার চেয়ে আরো অত্যধিক কঠিন তর্য-তরীক্বায় যন্ত্রণাদায়ক ও লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি দিয়ে ক্বতল করতে হবে অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। সুবহানাল্লাহ!
এ বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়ে যায় অন্যান্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মাধ্যমে। সুবহানাল্লাহ! যেমন- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন, একজন হযরত নবী-রসূল আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করার কারণে, এর কাফফারা বাবদ সত্তর হাজার লোককে ধ্বংস করে দেয়া হয় অর্থাৎ হয়েছে। আর একজন খলীফা উনাকে শহীদ করা হলে, এর কাফফারা বাবদ পঁয়ত্রিশ হাজার লোককে ধ্বংস করে দেয়া হয় অর্থাৎ হয়েছে। আর ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাত মুবারক উনার সাথে যারা জড়িত, তাদের কমপক্ষে এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে, ধ্বংস করে দেয়া হবে। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ سَلَامٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ مَا قُتِلَ نَبِـىٌّ قَطُّ اِلَّا قُتِلَ بِهٖ سَبْـعُوْنَ اَلْـفًا مِّنْ اُمَّتِهٖ وَلَا قُتِلَ خَلِـيْـفَةٌ قَطُّ اِلَّا قُتِلَ بِهٖ خَـمْسَةٌ وَّثَـلَاثُـوْنَ اَلْـفًا
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এমন কোনো হযরত নবী আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করা হয়নি যে, উনার কাফফারা বাবদ উনার উম্মতের সত্তর হাজার লোককে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়নি। সুবহানাল্লাহ! আর এমন কোনো খলীফা উনাকে শহীদ করা হয়নি যে, উনার কাফফারা বাবদ পঁয়ত্রিশ হাজার লোককে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়নি।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ ১৫/২২৩, মুছান্নাফে আব্দির রাজ্জাক্ব ১১/৪৪৫, আল মাত্বালিবুল আলিয়াহ ১৮/৫২, আছ ছওয়াইকুল মুহ্রিক্বহ ১/৩২৯, ত্ববাক্বতে ইবনে সা’দ ৩/৮৩, ইযালাতুল খফা’ ৬/৩১৯, তাফসীরে রূহুল বয়ান ৮/১৪৬, খাযিন ৩/৩০৩, বাগভী ৬/৫৯, আত তামহীদ ওয়াল বায়ান ১/১৮১, তারীখুল খুলাফা ১/১২৮, আর রিয়াদুন নাদ্বরাহ ফী মানাক্বিবে আশারাহ ১/২২৮, আখবারুল মদীনা ২/২২৫, আল মুহাদ্বারাত ওয়াল মুহাওয়ারাত ১/৭১ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَـبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ اَوْحَى اللهُ تَـعَالـٰى اِلـٰى سَيِّدِنَا حَبِيْـبِنَا شَفِيْعِنَا مَوْلَانَا مُـحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنِّـىْ قَـتَـلْتُ بِـيَحْيَـى بْنِ زَكَرِيَّا عَلَـيْهِمَا السَّلَامُ سَبْعِيْـنَ اَلْـفًا وَّاِنِّـىْ قَاتِلٌ بِـاِبْنِ ابْـنَتِكَ سَبْعِـيْـنَ اَلْفًا وَّسَبْعِـيْـنَ اَلْـفًا
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক করেন যে, নিশ্চয়ই আমি হযরত ইয়াহইয়া ইবনে যাকারিয়া আলাইহিমাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাত মুবারক উনার সাথে সংশ্লিষ্ট সত্তর হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি, ধ্বংস করে দিয়েছি। সুবহানাল্লাহ! আর নিশ্চয়ই আমি আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আওলাদ, আন নূরুর রবি‘য়াহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার যিনি মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাত মুবারক উনার সাথে যারা জড়িত থাকবে, তাদের সত্তর হাজার এবং সত্তর হাজার অর্থাৎ এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোককে কাফফারা বাবদ নিশ্চিহ্ন করে দিবো, ধ্বংস করে দিবো।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম শরীফ ৩/১৯৫, খছায়িছুল কুবরা শরীফ ২/২১৪, ইমতা‘উল আসমা’ ১২/২৩৭, শরহুয যারক্বানী ‘আলাল মাওয়াহিব ১০/১৫২ ইত্যাদি)
অসমাপ্ত-
পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন