৩৬তম ফতওয়া হিসেবে
“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার ও উনার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে এবং বিশেষ করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক উনার সম্মানিত আদব মুবারক-
১৮. মহিলাদের জামা‘য়াতে উপস্থিত না হওয়া
পূর্ব প্রকাশিতের পর
হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার আওলাদ হযরত আবূ সালামাহ্ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
(৮৩৩)
مَا رَاَيْتُ اَحَدًا اَعْلَمَ بِسُنَنِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلاَ اَفْقَهَ فِـىْ رَاْىٍ اِنِ احْتِيْجَ اِلـٰى رَاْيِهٖ وَلَا اَعْلَمَ بِاٰيَةٍ فِيْمَا نَزَلَتْ وَلَا فَرِيْضَةٍ مِّنْ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْـنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কিতাব কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, ফিকহ এবং ফারায়েযের ইলিম বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে আমি সবচেয়ে জ্ঞানী দেখেছি।” সুবহানাল্লাহ! (আত্ ত্ববাক্বাতুল কুবরা ২/৩৭৫)
হযরত জুবাইর ইবনে আওয়াম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার আওলাদ বিশিষ্ট তাবেয়ী হযরত উরওয়াহ্ ইবনে যুবাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
(৮৩৪-৮৩৫)
مَا رَاَيْتُ اَحَدًا اَعْلَمَ بِالْـحَلَالِ وَالْـحَرَامِ وَالْعِلْمِ وَالشِّعْرِ وَالطِّبِّ مِنْ اُمِّ الْـمُؤْمِنِيْـنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ لِصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ.
অর্থ: “হালাল-হারাম, ইলম, কবিতা, চিকিৎসা ইত্যাদি বিষয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনাকে আমি সর্বাধিক জ্ঞানী দেখেছি।” সুবহানাল্লাহ! (আদ্ র্দুরুল মানছূর লিস সুয়ূত্বী ১০/৭০১, আল মুস্তাদরাক ৪/১২)
কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার কোনো ফায়সালা মুবারক, কোনো মতামত মুবারক, কোনো বিষয়ে সত্যায়ন, কিংবা সমর্থনের খিলাফ বা বিরোধী বক্তব্য দেয়া, মন্তব্য করা, আমল করা সবকিছুই কাট্টা হারাম ও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। না‘ঊযুবিল্লাহ!
একইভাবে হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের ফায়সালার বিপরীত ফায়সালা গ্রহণ করাটাও হারাম ও কুফরী।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ইরশাদ মুবারক করেন-
(৮৩৬)
لِيَغِيْظَ بِـهِمُ الْكُفَّارَ.
অর্থ: “একমাত্র কাফিররাই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করে বা বিরোধিতা করে।” নাঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ফাত্হ্ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৯)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
(৮৩৭-৮৪১)
عَنْ حَضْرَتْ عِرْبَاضِ بْنِ سَارِيَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَيْكُمْ بِسُنَّتِـىْ وَسُنَّةِ الْـخُلَفَاءِ الرَّاشِدِيْنَ الْمَهْدِيِّــيْـنَ تَـمَسَّكُوْا بِـهَا وَعَضُّوْا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ.
অর্থ: “হযরত ইরবায বিন সারিয়াহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের জন্য আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক এবং হযরত খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের সুন্নত মুবারক পালন করা অপরিহার্য। কাজেই তোমরা তা মাড়ির দাঁত দিয়ে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরো।” সুবহানাল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাজাহ্ শরীফ, মিশকাত শরীফ, মুসনাদে আহমাদ ৪/১২৬, মিরক্বাত শরীফ ১/২৫১ ইত্যাদি)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, মহিলাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক-এ যাওয়ার অর্থই হলো সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের হুকুমকে অস্বীকার করা। যা কাট্টা কুফরী। না‘ঊযুবিল্লাহ!
আর এমন অনেক বিষয় রয়েছে, যা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় ছিলনা; কিন্তু হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের সময় তা উৎপত্তি লাভ করে। যেমন জুমুয়ার ছানী আযান- তা আমীরুল মু’মিনীন, খলীফায়ে ছালিছ, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সময় উৎপত্তি লাভ করে। এমনিভাবে হযরত মহিলা ছাহাবিয়াহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুন্না উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক-এ যেতেন; কিন্তু আমীরুল মু’মিনীন, খলীফায়ে ছানী, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সময় তা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
অতএব, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ফতওয়া মুবারক এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার তাছদীক্ব মুবারক বা সত্যায়ন এবং মুবারক ফায়ছালার পর এবং এ বিষয়ে সমস্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের সমর্থনের পর আর কারো কোনো বর্ণনা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কাজেই, মহিলাদের জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক-এ এবং ঈদগাহে যাওয়া নিষেধ; এ ফতওয়াই গ্রহণ করতে হবে এবং আমল করতে হবে। এর বিপরীত ফতওয়া গ্রহণ করা ও আমল করা কাট্টা কুফরী এবং ঈমান ও আমল নষ্ট হওয়ার কারণ। না‘ঊযুবিল্লাহ!
কাজেই, মহিলাদের জন্য জামা‘য়াতে যাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহিত করার অর্থই হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের, হযরত খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের বিরোধিতা করা, যা কাট্টা হারাম ও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। না‘ঊযুবিল্লাহ!
আর তাই প্রত্যেক মুসলমান মহিলার জন্য কর্তব্য হচ্ছে নামায আদায়ের জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক-এ বা ঈদগাহে না যাওয়া; বরং নিজের প্রকোষ্ঠেই নামায আদায় করে নেয়া। অন্যদিকে পুরুষদের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে অধীনস্ত মহিলারা যাতে ঘরের প্রকোষ্ঠেই নামায আদায় করে, সেই ব্যাবস্থা করে দেওয়া এবং কোনভাবেই যাতে জামা‘য়াতের উদ্দেশ্যে বাইরে বের হতে না পারে সে ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
১৯. মাস্ক ব্যবহার করে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক-এ প্রবেশ না করা এবং সম্মানিত ছলাত আদায় না করা:
যিনি খ¦লিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
(৮৪২)
اِنَّ شَانِئَكَ هُوَ الْاَبْتَرُ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই আপনার যারা শত্রু রয়েছে, তারা নির্বংশ এবং নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা কাওছার শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩)
কাফির-মুশরিকরা যখন তাদের অবাধ্যতার সীমা অতিক্রম করে ব্যাপক আকারে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান মুবারক উনার খিলাফ নানা ব্যঙ্গচিত্র, কার্টুন ও সিনেমা প্রকাশ করাসহ নানা কুরুচি সম্পন্ন লেখালেখি শুরু করে দেয় এবং বিভিন্ন স্থানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ জ্বালিয়ে দিতে থাকে, মহাসম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে যমীন থেকে মুছে দেয়ার, মিটিয়ে দেয়ার সর্বপ্রকার চক্রান্ত বাস্তবায়ন করতে থাকে, তখনই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহাসম্মানিত ১০ম খলীফা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিস সালাম তিনি কঠিন বদদো‘আ মুবারক করেন। ফলে তাদের প্রতি খোদায়ী গযব হিসেবে করোনা নামক মহাগযব নাযিল হয়। এই মহাগযব করোনা প্রথমে চীনে শুরু হয়, তারপর সারা বিশ্বের ইহুদী-খ্রিষ্টান, হিন্দু-বৌদ্ধ, মজূসী-মুশরিক ও তাদের গোলামদের মাঝে ছড়িয়ে যায়। সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
করোনা কোনো মহামারিও নয়, রোগও নয়। এটা কাফির-মুশরিকদের জন্য এবং তাদের গোলামদের জন্য একটা কাট্টা কঠিন মহাগযব। মুসলমানদের করোনা হয়নি এবং কখনও করোনা হবে না। করোনা হবে কাফির-মুশরিকদের এবং তাদের গোলামদের। সুবহানা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
করোনার অজুহাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে জামা‘য়াত নিষিদ্ধ করা, মহাসম্মানিত আযান পরিবর্তন করা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে যেতে নিরুৎসাহিত করা এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ নিয়ে কটুক্তি করা কুফরী, হারাম ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ। না‘ঊযুবিল্লাহ!
খ¦লিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
(৮৪৩)
لَيْسَ عَلَى الْاَعْمٰى حَرَجٌ وَّلَا عَلَى الْاَعْرَجِ حَرَجٌ وَّلَا عَلَى الْمَرِيْضِ حَرَجٌ
অর্থ: “(তোমরা) অন্ধের সাথে, ল্যাংড়ার সাথে এবং অসুস্থদের সাথে খাবার খেতে পারো, তাতে কোনো অসুবিধা বা বিপদ নেই।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নূর শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
‘মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ্ শরীফ’ উনার মধ্যে ‘আল আকলু মা‘আল মাজযূম বা কুষ্ঠরোগীর সাথে খাবার খওয়া’ নামক অধ্যায়ে উল্লেখ রয়েছে-
(৮৪৪)
كَانُوْا يَتَّقُوْنَ اَنْ يَّاْكُلُوْا مَعَ الْاَعْمٰى وَالْاَعْرَجِ وَالْمَرِيْضِ حَتّٰـى نَزَلَتْ هٰذِهِ الْاٰيَةُ { لَيْسَ عَلَى الْاَعْمٰى حَرَجٌ وَّلَا عَلَى الْاَعْرَجِ حَرَجٌ وَّلَا عَلَى الْمَرِيْضِ حَرَجٌ}
অর্থ: “লোকজন অন্ধ, ল্যাংড়া এবং অসুস্থ লোকদের সাথে খাবার খেতে ভয় পেতো। তখন (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নূর শরীফ উনার ৬১ নং) এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল হন-
لَيْسَ عَلَى الْاَعْمٰى حَرَجٌ وَّلَا عَلَى الْاَعْرَجِ حَرَجٌ وَّلَا عَلَى الْمَرِيْضِ حَرَجٌ
‘(তোমরা) অন্ধের সাথে, ল্যাংড়ার সাথে এবং অসুস্থদের সাথে খাবার খেতে পারো, তাতে কোনো অসুবিধা বা বিপদ নেই।” সুবহানাল্লাহ! (মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ্ শরীফ ৫/১৪২)
কাজেই, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার ফতওয়া অনুযায়ী ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলতে কিছু নেই। ছোঁয়াচে রোগ বিশ্বাস করা কাট্টা হারাম, কুফরী এবং শিরকীর অন্তর্ভুক্ত। এ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
(৮৪৫-৮৪৬)
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَليْهِ وسَلَّمَ لَا عَدْوٰى وَلَا طِيَرَةَ وَلَا هَامَةَ وَلَا صَفَرَ.
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছু নেই, অশুভ বলতে কিছু নেই, পেঁচার মধ্যে কোনো কুলক্ষণ নেই এবং সম্মানিত ছফর শরীফ মাসে কোনো খারাপী নেই।” সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ্ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৩৫৩৯, হাশিয়াতুস সিন্দী ২/৩৬৩)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
(৮৪৭-৮৫১)
عَنْ حَضْرَتْ ثَعْلَبَةَ بْنِ يَزِيْدَ الْـحِمَّانِـىِّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ سَـمِعْتُ اِمَامَ الْاَوَّلَ سَيِّدَنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا صَفَرَ وَلَا هَامَةَ وَلَا يُعْدِىْ سَقِيْمٌ صَحِيْحًا قُلْتُ اَنْتَ سَـمِعْتَ هٰذَا مِنْ رَّسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ نَعَمْ سَـمِعْتُ اُذْنِـىْ وَبَصَرْتُ عَيْنِـىْ. اِبْنُ جَرِيْرٍ وَصَحَّحَهٗ.
অর্থ: “হযরত ছা’লাবাহ্ ইবনে ইয়াযীদ হিম্মানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে বলতে শুনেছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, সম্মানিত ছফর শরীফ মাসে অশুভ বলতে কিছুই নেই, পেঁচার মধ্যে কুলক্ষণ নেই এবং অসুস্থ ব্যক্তি সুস্থ ব্যক্তিকে সংক্রামিত করতে পারে না। (রাবী বলেন,) আমি বললাম, আপনি কি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছ থেকে শুনেছেন? জবাবে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমি আমার নিজ কান মুবারক-এ শুনেছি এবং নিজ চোখ মুবারক-এ দেখেছি। হযরত ইবনে জারীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা বর্ণনা করেছেন এবং ছহীহ বলেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (কানযুল উম্মাল ১০/১২৬ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ নং ২৮৬৩৬, তাহ্যীবুল আছার ৩/৪২৪, আল মাক্বছাদুল ‘আলী ৪/২৯৮, নুখাবুল আফকার ১৪/৭৮, আল ঈমা’ ৫/১২১ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
(৮৫২-৮৫৩)
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَامَ فِيْنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ لَا يُعْدِىْ شَىْءٌ شَيْئًا لَا يُعْدِىْ شَىْءٌ شَيْئًا لَا يُعْدِىْ شَىْءٌ شَيْئًا فَقَامَ اَعْرَابِـىٌّ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلنُّقْبَةُ مِنَ الْـجَرَبِ تَكُوْنُ بِـمِشْفَرِ الْبَعِيْـرِ اَوْ بِذَنَبِهٖ فِـى الْاِبِلِ الْعَظِيْمَةِ فَتَجْرَبُ كُلُّهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَمَا اَجْرَبَ الْاَوَّلَ لَا عَدْوٰى وَلَا هَامَةَ وَلَا صَفَرَ خَلَقَ اللهُ كُلَّ نَفْسٍ فَكَتَبَ حَيَاتَـهَا وَمُصِيْبَاتِـهَا وَرِزْقَهَا.
অর্থ: “ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের সামনে দন্ডায়মান হয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, “কোনো কিছু কোনো কিছুকে সংক্রামিত করতে পারে না। কোনো কিছু কোনো কিছুকে সংক্রামিত করতে পারে না। কোনো কিছু কোনো কিছুকে সংক্রামিত করতে পারে না (অর্থাৎ তিন বার বললেন)। তখন একজন বেদুঈন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) এক বিশাল উট পালের মধ্যে প্রথমে একটি উটের ঠোঁট বা চোয়ালে অথবা লেজে খুঁজলি-পাঁচড়ার সূচনা হলো। তারপর উক্ত বিশাল উট পালের সমস্ত উটগুলো খুঁজলি-পাঁচড়া যুক্ত হয়ে গেলো। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তাহলে প্রথম উটটিকে খুঁজলি-পাঁচড়া যুক্ত করলো কে? ছোঁয়াচে বা সংক্রামক রোগ বলে কিছু নেই, পেঁচার মধ্যে কুলক্ষণ নেই এবং সম্মানিত ছফর শরীফ মাসে অশুভ বলতে কিছুই নেই। মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত প্রাণী সৃষ্টি করেছেন। তারপর তার হায়াত, তার বালা-মুছীবত, বিপদ-আপদ, রোগ-বালাইসমূহ এবং তার রিযিক্ব নির্ধারণ করে দিয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ১/৪৪০, ত্বহাবী ২/৩৭৮ ইত্যাদি)
(৮৫৪)
ওহাবীদের গুরুও তার ‘ছহীহুল জামিয়িছ ছগীর’-এ এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফখানা উনাকে ছহীহ বলে মেনে নিয়েছে। (ছহীহুল জামিয়িছ ছগীর ২/১২৭৮)
অসমাপ্ত-
(পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন)