(৩৬তম ফতওয়া হিসেবে)
“মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যারা ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবে বা সমর্থন করবে তাদের প্রত্যেকের শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খেদমত মুবারক-এ বেশুমার শুকরিয়া আদায় করছি। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করা ফরয:
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
এদের প্রসঙ্গেই যিনি খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
(১০৫৭)
وَمَنْ اَظْـلَمُ مِـمَّنْ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللهِ اَنْ يُّذْكَرَ فِـيْـهَا اسْـمُهٗ وَسَعٰى فِـىْ خَرَابِـهَا اُولٰٓئِكَ مَا كَانَ لَـهُمْ اَنْ يَّدْخُلُوْهَا اِلَّا خَآئِـفِـيْـنَ لَـهُمْ فِـى الدُّنْـيَا خِزْىٌ وَّلَـهُمْ فِى الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِـيْمٌ
অর্থ: “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম আর কে? যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার যিকির মুবারক করতে, উনার সম্মানিত নাম মুবারক উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে বিরাণ বা উজাড় করতে চেষ্টা করে। (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ বন্ধ করে রাখে, হক্ব আদায় করে না, তা’যীম-তাকরীম করে না) তাদের জন্য ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় অর্থাৎ খালিছ তওবা-ইস্তিগফার করা ব্যতীত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে প্রবেশ করা জায়িয নেই। তাদের জন্য রয়েছে ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি।” (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১১৪)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় ‘তাফসীরে জালালাইন এবং তাফসীরে মাযহারী শরীফ’ উনাদের মধ্যে উল্লেখ রয়েছেন,
(১০৫৮-১০৫৯)
لَا اَحَدَ اَظْـلَمُ مِـمَّنْ مَّنَعَ مَسٰجِدَ اللهِ اَنْ يُّذْكَـرَ فِـيْـهَا اسْـمُهٗ
অর্থ: “ওই ব্যক্তিই সবচেয়ে বড় যালিম, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার যিকির মুবারক করতে, উনার সম্মানিত নাম মুবারক স্মরণ করতে বাধা দেয়। (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ বন্ধ করে রাখে, হক্ব আদায় করে না তা’যীম তাকরীম করে না)।” (তাফসীরে জালালাইন ১/২৪, তাফসীরে মাযহারী ১/১১৬)
(১০৬০-১০৬২)
‘তাফসীরে সমরকন্দী, তাফসীরে খাযিন ও তাফসীরে বাগবী’ উনাদের মধ্যে وَمَنْ اَظْــلَمُ “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় যালিম আর কে?” এই অংশের ব্যাখ্যায় উল্লেখ রয়েছেন, وَمَنْ اَكْفَرُ “ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় কাফির আর কে?
অর্থাৎ ওই ব্যক্তিই সবচেয়ে বড় কাট্টা কাফির, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার যিকির মুবারক করতে, উনার সম্মানিত নাম মুবারক স্মরণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে বিরাণ বা উজাড় করতে চেষ্টা করে। (অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ বন্ধ করে রাখে, হক্ব আদায় করে না, তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করে না)।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে সমরকন্দী ১/৮৬, তাফসীরে খাযিন ১/৭২, তাফসীরে বাগবী ১/১৫৭)
আল্লামা কাযী ছানাউল্লাহ পানিপথী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে মাযহারী’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছেন,
(১০৬৩)
لَـهُمْ فِـى الدُّنْـيَا خِزْىٌ قَـتْلٌ وَسَبْـىٌ وَّذِلَّـةٌ بِضَرْبِ الْـجِزْيَةِ وَّلَـهُمْ فِـى الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيْمٌ. اَلنَّارُ الْـمُؤَبَّدَةُ بِكُفْرِهِمْ وَظُـلْمِهِمْ
অর্থ: “তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়ার যমীনে লাঞ্ছনা। (অর্থাৎ) ক্বতল (মৃত্যুদণ্ড), বন্দিত্ব (জেল-হাজত) এবং জিযিয়া কর প্রদানের অবমাননা। আর পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। (অর্থাৎ পরকালে) তাদের জন্য রয়েছে তাদের কুফরী ও যুলুমের কারণে চিরস্থায়ী জাহান্নাম।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে মাযহারী ১/১১৬)
দশম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত ও সর্বজনমান্য তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে জালালাইন’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছেন,
(১০৬৪)
{لَـهُمْ فِـى الدُّنْـيَا خِزْىٌ}هَوَانٌ بِالْقَتْلِ وَالسَّبْـىِ وَالْـجِزْيَةِ {وَّلَـهُمْ فِـى الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيْمٌ} هُوَ النَّارُ
অর্থ: “তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়ার যমীনে লাঞ্ছনা। (অর্থাৎ) শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, বন্দিত্ব (জেল-হাজত) এবং জিযিয়া কর প্রদানের মাধ্যমে অবমাননা। আর পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। (অর্থাৎ পরকালে) তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে জালালাইন ১/২৪)
বিশ্বখ্যাত মুফাসসির ও ইমাম আল্লামা আবূ জা’ফর মুহম্মদ ইবনে জারীর ত্ববারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ৩১০ হিজরী শরীফ) উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত ও সর্বজনমান্য তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে ত্ববারী’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছেন,
(১০৬৫)
وَتَاْوِيْلُ الْاٰيَةِ لَـهُمْ فِـى الدُّنْـيَا الذِّلَّةُ وَالْـهَوَانُ وَالْقَتْلُ وَالسَّبْـىُ عَلـٰى مَنْعِهِمْ مَسَاجِدَ اللهِ اَنْ يُّذْكَرَ فِـيْـهَا اسْـمُهٗ وَسَعْـيُـهُمْ فِـىْ خَرَابِـهَا وَلَـهُمْ عَلـٰى مَعْصِيَـتِهِمْ وَّكُفْرِهِمْ بِرَبّـِهِمْ وَسَعْيِهِمْ فِـى الْاَرْضِ فَسَادًا عَذَابُ جَهَنَّمَ وَهُوَ الْعَذَابُ الْعَظِيْمُ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে উনার যিকির মুবারক করতে, উনার সম্মানিত নাম মুবারক উচ্চারণ করতে বাধা দেয়ার কারণে এবং সেগুলোকে উজাড় বা বিরান করার কোশেশ করার কারণে অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহকে হাক্বীক্বীভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ না করার কারণে তাদের জন্য দুনিয়ার যমীনে রয়েছে অবমাননা, লাঞ্ছনা, শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, জেল-হাজত, গ্রেফতারী। আর তাদের পাপাচার, মহান আল্লাহ পাক উনার ব্যাপারে কুফরী করা এবং দুনিয়ার যমীনে ফিতনা-ফাসাদ সৃষ্টি করে দেয়ার কোশেশ করার কারণে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব বা শাস্তি। এটাই হচ্ছে اَلْعَذَابُ الْعَظِيْمُ অর্থাৎ কঠিন আযাব বা শাস্তি।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে ত্ববারী ২/৪৪৮)
বিশ্বখ্যাত মুফাসসির ও ইমাম আল্লামা আবুল হাসান আলী ইবনে মুহম্মদ ইবনে মুহম্মদ ইবনে হাবীব বছরী বাগদাদী মাওয়ারদী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ৪৫০ হিজরী শরীফ) উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত ও সর্বজনমান্য তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে মাওয়ারদী’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছেন,
(১০৬৬)
{وَّلَـهُمْ فِـى الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيْمٌ} هُوَ اَشَدُّ مِنْ كُلِّ عَذَابٍ لِاَنَّـهُمْ اَظْـلَمُ مِنْ كُلِّ ظَالِـمٍ
অর্থ: “আর পরকালে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন আযাব বা শাস্তি। (অর্থাৎ) তা হচ্ছে সমস্ত আযাব বা শাস্তি হতে সবচেয়ে কঠিন আযাব বা শাস্তি। কেননা তারা হচ্ছে সমস্ত যালিমদের থেকে সবচেয়ে বড় যালিম। কারণ তারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদেরকে হাক্বীক্বীভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করেনি।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে মাওয়ারদী ১/১৭৪)
বিশ্বখ্যাত মুফাসসির ও ইমাম আল্লামা কাযী নাছিরুদ্দীন আবূ সাঈদ আব্দুল্লাহ ইবনে উমর ইবনে মুহম্মদ সীরাজী বায়যাভী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ ৬৮৫ হিজরী শরীফ) উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত ও সর্বজনমান্য তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে বায়যাভী’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছেন,
(১০৬৭)
لَـهُمْ فِى الدُّنْـيَا خِزْىٌ قَـتْلٌ وَسَبْـىٌ اَوْ ذِلَّـةٌ بِضَرْبِ الْـجِزْيَةِ وَّلَـهُمْ فِـى الْاٰخِرَةِ عَذَابٌ عَظِـيْمٌ بِكُـفْرِهِمْ وَظُـلْمِهِمْ
অর্থ: “তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়ার যমীনে লাঞ্ছনা। (অর্থাৎ) শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, বন্দিত্ব (জেল-হাজত) অথবা জিযিয়া কর প্রদানের লাঞ্ছনা। আর পরকালে তাদের জন্য রয়েছে তাদের কুফরী ও যুলুমের কারণে কঠিন আযাব বা শাস্তি। কারণ তারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদেরকে হাক্বীক্বীভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করেনি।” না‘ঊযুবিল্লাহ! (তাফসীরে বায়যাভী ১/১০১)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত যিকির মুবারক করতে, উনার সম্মানিত নাম মুবারক উচ্চারণ করতে বাধা দেয়ার কারণে এবং সেগুলোকে উজার বা বিরান করে দেয়ার কোশেশ করার কারণে অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদেরকে হাক্বীক্বীভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ না করার কারণে সবচেয়ে বড় কাট্টা কাফির, চির মাল‘ঊন ও চির জাহান্নামী হতে হয় এবং দুনিয়ার যমীনে অবমাননা, লাঞ্ছনা, জেল-হাজত, গ্রেফতার ও শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের শিকার হতে হয়, তাহলে যারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙবে, ভাঙ্গার কাজে সাহায্য-সহযোগীতা করবে এবং সমর্থন করবে তাদের ফায়ছালা কী? মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, মহাসম্মানিত ইজমা এবং মহাসম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের সম্মানিত ফতওয়া মুবারক অনুযায়ী- “নিঃসন্দেহে তারা সবচেয়ে বড় কাট্টা কাফির, চির মাল‘ঊন ও চির জাহান্নামী তো হবেই সাথে সাথে তাদের প্রত্যেককেই অবশ্যই অবশ্যই গ্রেফতার করে জেল-হাজতে প্রবেশ করাতে হবে। অতঃপর তওবা করার জন্য তিন দিন সময় দিতে হবে। যদি তারা তওবা করে ভালো; অন্যথায় তাদের প্রত্যেককেই মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে।
৬ষ্ঠ নির্দেশ মুবারক হচ্ছেন- কেউ যদি নিজেকে ঈমানদার দাবি করতে চায়, তার জন্য ফরযে আইন হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিবাদ করা এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক হিফাযতে অর্থাৎ হাক্বীক্বীভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণ করার ব্যাপারে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা:
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
(১০৬৮-১০৬৯)
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحَبَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ فَـلْيُحِبَّـنِـىْ وَمَنْ اَحَـبَّـنِـىْ فَـلْيُحِبَّ اَصْحَابِـىْ وَمَنْ اَحَبَّ اَصْحَابِـىْ فَـلْـيُحِبَّ الْقُرْاٰنَ وَمَنْ اَحَبَّ الْقُرْاٰنَ فَـلْـيُحِبَّ الْمَسَاجِدَ فَاِنَّـهَا اَفْـنِيَةُ اللهِ اَبْـنِـيَـتُهٗ
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করে, সে যেন আমাকে মুহব্বত করে। আর যে ব্যক্তি আমাকে মুহব্বত করে, সে যেন আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে মুহব্বত করে। আর যে ব্যক্তি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে মুহব্বত করে, সে যেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে মুহব্বত করে। আর যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে মুহব্বত করে, সে যেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদেরকে মুহব্বত করে। (মুহব্বতের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণের সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অর্থাৎ যাতে কেউ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গতে না পারে বা কোনো প্রকার ক্ষতি করতে না পারে এবং মুসল্লীদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক কেন্দ্রিক কোনো ইবাদতে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে। সুবহানাল্লাহ!) কেননা নিঃসন্দেহে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার আঙ্গিনা, মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে কুরতুবী ১২/২৬৬, শরহুল বুখারী ১/৪১৪)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার থেকে যেই বিষয়টি অত্যন্ত সুস্পষ্ট তা হচ্ছে- যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে মুহব্বত করে, তার জন্য ফরযে আইন হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদেরকে মুহব্বত করা। মুহব্বতের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণের সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অর্থাৎ যাতে কেউ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গতে না পারে বা কোনো প্রকার ক্ষতি করতে না পারে এবং মুসল্লীদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক কেন্দ্রিক কোনো ইবাদতে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে। আর যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদেরকে মুহব্বত করে না, সে মূলত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং মহান আল্লাহ পাক উনাকে অর্থাৎ উনাদেরকে মুহব্বত করে না। না‘ঊযুবিল্লাহ! অর্থাৎ সে ঈমানদার নয় বরং কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
(১০৭০-১০৭৬)
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ سَعِـيْدِن الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَـنْهُ عَنْ رَّسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ رَاٰى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَـلْيُـغَـيِّـرْهُ بِيَدِهٖ فَاِنْ لَّـمْ يَسْتَطِعْ فَبِـلِسَانِهٖ فَاِنْ لَّـمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهٖ وَذٰلِكَ اَضْعَفُ الْاِيْـمَانِ
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের কেউ যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শরীয়ত মুবারক উনার খিলাফ কোনো কাজ দেখবে, তখন সে যেন তা হাত দিয়ে বাধা দেয়। যদি হাত দিয়ে বাধা দিতে সক্ষম না হয়, তাহলে সে যেন তা মুখ দিয়ে বাধা দেয়। যদি তাতেও সক্ষম না হয়, তাহলে যেন তা অন্তরে বাধা দেয়। অর্থাৎ অন্তরে খারাপ জেনে সেখান থেকে দূরে সড়ে যায়। এটা হচ্ছে সম্মানিত ঈমান মুবারক উনার সর্বনিম্ন স্তর।” (মুসলিম শরীফ, নাসাঈ শরীফ, মুসনাদে আহমদ, শরহুস সুন্নাহ, শু‘য়াবুল ঈমান, ছহীহ ইবনে হিব্বান, হিলইয়াতুল আউলিয়া ইত্যাদি)
অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন।