পূর্ব প্রকাশিতের পর
অন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বলেছেন-
قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: حُجُّوْا
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা হজ্জ সম্পাদন করো যাদের হজ্জ ফরয হয়েছে। কেন?
فَإِنَّ الْـحَجَّ يَغْسِلُ الذُّنُـوْبَ
নিশ্চয়ই হজ্জ সমস্ত গুনাহগুলিকে ধুয়ে পরিস্কার করে দেয়, মা’ছূম নিস্পাপ করে দেয়।
كَمَا يَغْسِلُ الْمَاءُ الدَّرَنَ
যেমন পানি ময়লাগুলি দূর করে দেয়। ঠিক একইভাবে হজ্জ মানুষের সমস্ত গুনাহখাতাগুলি দূর করে মা’সূম নিস্পাপ করে দেয়। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই বান্দার দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে যাদের হজ্জ ফরয হবে তাদের হজ্জ যথাযথ সম্পাদন করা। এতে কোন ত্রুটি না করা। যেহেতু এর অনেক খুছূছিয়াত, অনেক ফাযায়িল-ফযীলত, সম্মান রয়েছে। বিশেষ করে হজ্জের সময় আরাফার ময়দানে, মুজদালাফাতে এবং অন্যান্য হুকুম আহকামগুলো পালন করার সময় যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাদের জিন্দেগীর সমস্ত গুনাহখাতাগুলো ক্ষমা করে দেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ طَلْحَةَ بْنِ عُبَـيْدِ اللهِ بْنِ كَرِيْزٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ
হযরত ত্বালহা ইবনে উবাইদিল্লাহ ইবনে কারীয রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে একটা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। তিনি বলেন-
أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَا رُئِيَ الشَّيْطَانُ يَـوْمًا هُوَ فِيْهِ أَصْغَرُ وَلَا أَدْحَرُ وَلَا أَحْقَرُ وَلَا أَغْيَظُ مِنْهُ فِيْ يَـوْمِ عَرَفَةَ وَمَا ذَاكَ إِلَّا لِمَا يَـرَى مِنْ تَـنَـزُّلِ الرَّحْمَةِ وَتَجَاوُزِ اللهِ عَنِ الذُّنُـوْبِ الْعِظَامِ
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, ইবলিস শয়তানকে আরাফার দিনের মতো এতো লাঞ্ছিত, অপমানিত, ধিকৃত, এতো গোস্সা অন্য কোন দিন দেখা যায় না।
مَا رُئِىَ الشَّيْطَانُ يَـوْمًا هُوَ فِيْهِ أَصْغَرُ
সেদিন শয়তানকে সবচেয়ে বেশী লাঞ্ছিত দেখা যায়
وَلاَ أَدْحَرُ
ধিকৃত
وَلاَ أَحْقَرُ
অপমানিত
وَلَا أَغْيَظُ مِنْهُ
এবং সবচাইতে তাকে গোস্সা দেখা যায়।
فِىْ يَـوْمِ عَرَفَةَ
আরাফার দিন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এটা বললেন যে, এটা কেন?
وَمَا ذَاكَ إِلَّا لِمَا رَأَى
কারণ ইবলিস সেদিন দেখতে পায়, এটা তাকে দেখানো হয়। সে কি দেখতে পায়?
مِنْ تَـنَـزُّلِ الرَّحْمَةِ
সে দেখতে পায়, সেদিন অসংখ্য অগণিত লক্ষ কোটি রহমত মুবারক বর্ষিত হতে থাকে। সুবহানাল্লাহ!
وَتَجَاوُزِ اللهِ عَنِ الذُّنُـوْبِ الْعِظَامِ
যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাদের সমস্ত বড় বড় গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেন। সুবহানাল্লাহ!
إِلَّا مَا رُئِيَ يَـوْمَ بَدْرٍ. فَقِيْلَ : مَا رُئِيَ يَـوْمَ بَدْرٍ؟ قَالَ: فَإِنَّهٗ قَدْ رَأَى جِبْرِيْلَ يَـزَعُ الْمَلَائِكَةَ
বলা হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন যে, বদরের দিন। বদরের জিহাদের দিন ইবলিস যা দেখেছিল। জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল
فَقِيْلَ : مَا رُئِيَ يَـوْمَ بَدْرٍ؟
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো। তিনি জিজ্ঞাসিত হলেন। ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইবলিস বদরের দিন কি দেখেছিল?
قَالَ: فَإِنَّهٗ قَدْ رَأَى حَضْرَتْ جِبْرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَـزَعُ الْمَلَائِكَةَ
ইবলীস দেখেছিল বদর জিহাদের দিন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে কাতারবন্দি করতেছিলেন, মুসলমানদেরকে সাহায্য করার জন্য, খিদমত করার জন্য। সে বিষয়টাই ইবলীস দেখতে পায় আরাফার দিন। মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে অসংখ্য অগণিত রহমত মুবারক বর্ষিত হচ্ছে, গুনাহখাতাগুলো ক্ষমা করে দেয়া হচ্ছে যেমন ক্ষমা করা দেয়া হয়েছিল বদরী যারা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে। উনাদের প্রতি রহমত মুবারক বর্ষণ করা হয়েছিল ঠিক তদ্রুপ সে দেখতে পায়। সেটাই বলা হচ্ছে যে, আরাফার দিন ইবলীস যতটুকু লাঞ্ছিত হয়, অপমানিত হয়, ধিকৃত হয় এবং গোস্সা করে সেটা অন্য কোন সময় সে করে না। মহান আল্লাহ পাক তিনি সেই বান্দা-বান্দি, উম্মতদের জন্য খাছ করে রহমত মুবারক নাযিল করেন যেটা অন্য কোন সময় সেরকম রহমত মুবারক বর্ষণ করা হয় না। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই সে রহমত মুবারক দেখে, বান্দাদের গোনাহ খাতা ক্ষমা করা দেখে সে গোস্সা করে। সে লাঞ্ছিত হয়, অপমানিত হয়, ধিকৃত হয়। সে নিজেকে লা’নত দিতে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফে এ বিষয়টা স্পষ্ট করে বলে দেয়া হয়েছে।
وَمَا ذَاكَ إِلَّا لِمَا رَأَى مِنْ تَـنَـزُّلِ الرَّحْمَةِ وَتَجَاوُزِ اللهِ عَنِ الذُّنُـوْبِ الْعِظَامِ إِلَّا مَا رُئِيَ يَـوْمَ بَدْرٍ
যেটা বদরের জিহাদে সরাসরি হয়ে ছিলো তার সেরকম অবস্থা হয়ে থাকে। আর বদর জিহাদের আরেকটা খুছূছিয়ত মুবারক হচ্ছে, যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বলে দিয়েছিলেন, যারা বদরী ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যা কিছু করেন না কেন উনাদেরকে ক্ষমা করে দেয়া হলো। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই কেউ যদি হজ্জে মাবরূর করতে পারে তাহলে তার জিন্দিগীর গুনাহখাতাগুলো ক্ষমা হয়ে যাবে এবং সে মকবুল বন্দা হিসেবে পরিগণিত হবে। সুবহানাল্লাহ!
(অসমাপ্ত)