-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ শুয়াইব আহমদ
আরবী পঞ্চম মাস হচ্ছে জুমাদাল উলা এবং ষষ্ঠ মাস হচ্ছে জুমাদাল উখরা। এ উভয় মাসই হচ্ছে হযরত আহলে বাইত ও আওলাদে রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাওয়ানেহে উমরী মুবারক আলোচনার বিশেষ মাস।
স্মরণীয় যে, মাহে জুমাদাল উলা মুবারক মাস উনার ৯ তারিখ দিনটি হচ্ছে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লক্ষ্যস্থল আওলাদ এবং যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার সুমহান মুজাদ্দিদ ও ইমাম, মুজাদ্দিদ আ’যম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং যামানার লক্ষ্যস্থল মহিলা ওলীআল্লাহ, আওলাদে রসূল, উম্মুল উমাম, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাদের মনোনীত, পছন্দনীয়, কবুলকৃত, ¯েœহধন্য শাহদামাদ ছানী ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার বিলাদত শরীফ-এর দিন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত শাহদামাদ ছানী ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি আখাছছুল খাছ মুরাদ শ্রেণীর ওলীআল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! মুরাদ শ্রেণীর ওলীআল্লাহ উনাদের মধ্যে তিনি আখাছছুল খাছ এইজন্য যে, তিনি হযরত মুজাদ্দিদ আ’যম আলাইহিস সালাম এবং হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাদের শাহ দামাদ হওয়ার সৌভাগ্য লাভে ধন্য হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
এ নিয়ামত এমন এক নিয়ামত যা বর্ণনার ভাষা কারো নেই। এ নিয়ামতের বর্ণনা কেবল জান্নাতের নিয়ামতরাজির বর্ণনার সাথে সাদৃশ্য হতে পারে; যা কোন কান শ্রবণ করেনি, কোন চোখ দেখেনি এবং কোন অন্তর উপলব্ধি করেনি। সুবহানাল্লাহ! আরো একটু ব্যাখ্যা করে বলা যায়, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় আত্বায়ী গুণে এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ক্বাসিমী গুণে শাফিউল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহদামাদ আউওয়াল ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং হাদিউল উমাম সাইয়্যিদুনা হযরত শাহদামাদ ছানী ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাদেরকে দুনিয়াতেই জান্নাতের সমস্ত নাজ-নিয়ামতের অধিকারী করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
উনারা এমন মর্যাদা-মর্তবার অধিকারী উনাদের উদাহরণ মেলে শুধুমাত্র আসাদুল্লাহিল গালিব হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সাথে। সুবহানাল্লাহ! কাজেই উনাদের মুহব্বত, তা’যীম-তাকরীম, ইত্তিবা, খিদমত কায়িনাতবাসীর জন্য ফরয-ওয়াজিব।
আর জুমাদাল উখরা মাসটি অনেক কারণে ফযীলতপূর্ণ। তন্মধ্যে অন্যতম হলো, এ মাসেই হযরত আহলু বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের মূল ব্যক্তিত্ব সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, বিদ্ব্আতুম মিন রসূলিল্লাহ, শাবীহাতু রসূলিল্লাহ, উম্মু আবীহা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেন। বিশুদ্ধ বর্ণনা মতে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়াবী ৩৭ বৎসর বয়স মুবারক-এ অর্থাৎ উনার আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াত প্রকাশের প্রায় তিন বৎসর পূর্বে ২০শে জুমাদাল উখরা জুমুয়ার দিন ছুবহি ছাদিকের সময় তিনি যমীনে আগমন করেন। সুবহানাল্লাহ!
উনার ফযীলত বর্ণনার অপেক্ষা রাখেনা। কেননা উনার মাধ্যমেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নূরানী বংশ মুবারক জারি রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! পবিত্র নূরানী বংশদ্ভূত সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, ইজ্জত-সম্মান করা, খিদমত করা কায়িনাতবাসীর জন্য ফরয-ওয়াজিবের অন্তর্ভুক্ত।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
قل لا اسئلكم عليه اجرا الا الـمودة فى القربى
অর্থ : “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি (উম্মতকে) বলুন, আমি তোমাদের নিকট কোন বিনিময় চাই না। (উম্মতের পক্ষে বিনিময় দেয়াটাও কখনই সম্ভব নয়)। তবে তোমাদের দায়িত্ব হচ্ছে আমার আপনজন- অর্থাৎ হযরত আহলু বাইত ও আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি মুহব্বত রাখবে।” (পবিত্র সূরা শূরা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, রঈসুল মুফাসসিরীন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক উনাকে তোমরা মুহব্বত করো। কেননা, তিনি তোমাদের প্রতি খাওয়া-পরার মাধ্যমে অনুগ্রহ করে থাকেন। আর আমাকে তোমরা মুহব্বত করো মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত পাওয়ার জন্য। আর আমার আহলে বাইত-আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করো আমার মুহব্বত পাওয়ার জন্য।” (তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
প্রতিভাত হলো, কেউ যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত, সন্তুষ্টি পেতে চায় তাহলে অবশ্যই তাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলু বাইত ও আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত এবং সন্তুষ্ট করতে হবে।
মাহে রজব ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা
মাহে শা’বান ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা
সম্মানিত রজবুল হারাম শরীফ, সম্মানিত শা’বান শরীফ ও সম্মানিত রমাদ্বান শরীফ মাস এবং প্রাসঙ্গিক আলোচনা