-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ শুয়াইব আহমদ
আরবী মাসের চতুর্থ মাস রবীউছ ছানী। এ মাসটি ওলীআল্লাহগণের সাওয়ানেহ উমরী বা জীবনী মুবারক বর্ণনার খাছ মাস। কারণ এ মাসটিতে আল্লাহ পাক-উনার লক্ষ্যস্থল ওলী হিজরী ষষ্ঠ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ও ইমাম সাইয়্যিদুল আওলিয়া, গওছুল আ’যম, আওলাদুর রসূল, বড়পীর হযরত শায়খ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুল ক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বিছাল শরীফ লাভ করেন। আবার এ মাসেরই ঊনিশ তারিখ দিনটিতে আল্লাহ পাক-উনার এক মহান আশিকাহ ওলীআল্লাহ এবং আল্লাহ পাক-উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার এক লক্ষ্যস্থল আওলাদ বর্তমান পঞ্চদশ হিজরী শতাব্দীর মহান মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-উনার লখতে জিগার, উনার ছানী আওলাদ, সাইয়্যিদাহ, ছিদ্দীক্বা, আতিক্বাহ, হুমায়রা, ত্বাহিরা, তইয়িবাহ, জামীলাহ, হাজীবাহ, হাবীবাতুল্লাহ, উম্মুল ওয়ারা, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত শাহজাদী ছানী ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহাল আলী-উনার বিলাদত শরীফ। সুবহানাল্লাহ! সঙ্গতকারণে রবীউছ ছানী মাসটি আরো সম্মানে সম্মানিত হয়।
স্মরণীয় যে, ইসলামের পঞ্চ বুনিয়াদের পরে পুরুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি আবশ্যিকভাবে পালনীয় তাহলো হালাল রুযী উপার্জন করা আর মেয়েদের জন্য হলো পর্দা করা।
গওছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পিতা ও মাতা উভয়ের ক্ষেত্রেই উল্লিখিত বিষয় দুটির বাস্তব প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই। একদিকে উনার পিতা ফখরুল আওলিয়া হযরত আবু ছালিহ মূসা জঙ্গি দোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি হালাল খাদ্য গ্রহণের ব্যাপারে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম তাহকীক করেছেন। আরেকদিকে উনার মাতা উম্মুল ওয়ারা আমাতুল জাব্বার হযরত ফাতিমা রহমতুল্লাহি আলাইহা অতি সূক্ষ্ম ও খাছ পর্দা পালনে অভ্যস্ত ছিলেন। ফলশ্রুতিতে সেই বুযর্গ পিতা ও মাতার ঘরে আল্লাহ পাক সাইয়্যিদুল আওলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনাকে প্রেরণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল আওলিয়া হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার সাওয়ানেহ উমরী বা জীবনী মুবারক আলোচনা করলেই উনার আম্মাজান রহমতুল্লাহি আলাইহা-উনার পর্দা পালনের বিষয়টি এসে থাকে। যদিও সে সময় পর্দা পালনের বিষয়টি এখনকার তুলনায় অনেক গুণে সহজসাধ্য ছিল। কিন্তু আজ সমাজে যে অবস্থা যে আবহ যে প্রেক্ষাপট বিরাজ করছে তাতে শরয়ী খাছ পর্দা পালনকারিনী মহিলা খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
কিন্তু আল্লাহ পাক এবং উনার প্রিয় হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের রহম ও ইহসান যে, যামানার মহান মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী উনার এবং উনার পূতঃপবিত্র আহলিয়া, ক্বায়িম-মক্বামে হযরত উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না, হাবীবাতুল্লাহ, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহাল আলী-উনাদের ওসীলায় এমন দু’জন পূতঃপবিত্রা সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত শাহযাদী ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুমাল আলী যমীনে তাশরীফ এনেছেন যাঁদেরকে কখনও কোন পরপুরুষ দেখেনি, যাঁদের কণ্ঠস্বর পর্যন্ত কোন পরপুরুষ শুনেনি। অর্থাৎ উনাদেরকে আল্লাহ পাক যেভাবে মা’ছূম ও মাহফূয করে যমীনে পাঠিয়েছেন উনারা সেভাবেই যমীনে অবস্থান করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ!
ফার্সীতে একটা প্রবাদ আছে
شنیدہ کی بود ما نندہ دیدہ
অর্থাৎ- শুনাটা কখনই দেখার মতো হয় না।
কাজেই, আজকের ফিৎনাবেষ্টিত, পর্দাহীনতা যুগ সন্ধিক্ষণে কুল-মুসলিমাকে আহ্বান জানাচ্ছি, একবারের জন্য হলেও আপনারা ‘রাজারবাগ শরীফ’-এ আসুন। এসে দেখুন, ওলীআল্লাহগণের ছোহবতে কিভাবে পাপী ও জাহান্নামী মানুষগুলি নেককার ও জান্নাতী হয়ে যায়।
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-
الشيخ لقومه كالنبى فى امته
অর্থাৎ- শায়খ বা ওলীআল্লাহগণ উনার ক্বওম বা যামানার লোকদের নিকট ঐরূপ মুহব্বতের পাত্র ও অনুসরণীয় যেরূপ মুহব্বতের পাত্র ও অনুসরণীয় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের নিকট। (দায়লামী শরীফ)
এ হাদীছ শরীফ দ্বারা এ বিষয়টি সুস্পষ্টরূপে প্রতিভাত হয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার বিছাল শরীফ-এর পর উনার যারা খাছ নায়িব তথা হক্কানী-রব্বানী ওলীআল্লাহ উনাদেরকে মুহব্বত করা, উনাদের খিদমত করা এবং উনাদের অনুসরণ করা যামানার প্রতিটি মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরয-ওয়াজিব এবং যে মুসলমান নর-নারী সেটা করবে কেবল তাদের পক্ষে আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বত-মা’রিফাত, তায়াল্লুক-নিসবত, নৈকট্য ও সন্তুষ্টি হাছিল করা সম্ভব হবে।
বলার অপেক্ষা রাখেনা, যামানার মহান মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী এবং উনার পবিত্র আহলে বাইত ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুমুল আলী উনারা প্রত্যেকেই আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব পাক উনাদের মনোনীত, খাছ নিসবতপ্রাপ্ত ও ছিদ্দীক্ব পর্যায়ের ওলীআল্লাহ। উনাদের সাথে যে কেউ কোনরূপ নিসবত স্থাপন করতে পারলেই তার যিন্দিগী কামিয়াব। আল্লাহ পাক উনাদের খিদমতে আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন।
মাহে যিলক্বদ ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা
মাহে যিলহজ্জ ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা
মাহে মুহররমুল হারাম ও তার প্রাসঙ্গিক আলোচনা