বিবাহের পূর্বে মেয়ে ও ছেলের যে
সকল গুণ তালাশ করা সুন্নত (৩)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি কোন নারীকে রূপ সৌন্দর্য ও অর্থের মোহে মোহিত হয়ে বিবাহ করে সে রূপ সৌন্দর্য ও মাল সম্পদ থেকে বঞ্চিত হয়। আর যে ব্যক্তি পরহেযগার মুত্তাক্বী হওয়ার জন্য বিবাহ করে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে রূপ-সৌন্দর্য ও অর্থ-সম্পদের মধ্যে বরকত দান করেন।
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, কোন নারীকে শুধু রূপ-সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে বিবাহ করো না। কেননা এরূপ সৌন্দর্যই পরবর্তী জীবনে হয়তো মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে। আর শুধু অর্থ সম্পদ দেখেই বিবাহ করবে না। হয়তো তার সম্পদই তাকে অবাধ্য করে তুলবে। শুধু দ্বীনদারীকেই প্রাধান্য দিবে। কারণ, এরূপ আহলিয়া (স্ত্রী) আহাল (স্বামীর) দ্বীনদারীর কাজে সহায়ক হয়। আর যদি দ্বীনদার পরহেযগার না হয় আহালকে দ্বীনদারী থেকে দূরে রাখতে নানা ফন্দি-ফিকির করে। নাউযুবিল্লাহ! (ইহইয়াউ উলূমিদ্দীন-১/৪১০)
(৩) খুব ছূরত বা সৌন্দর্য: বিবাহের ক্ষেত্রে খুব ছূরত বা সৌন্দর্যতার প্রতি লক্ষ্য রাখা। খুব ছূরত বা সৌন্দর্যতা একটি আপেক্ষিক বিষয়। ইহা ব্যক্তিবিশেষ ভিন্নতর হয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গে খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মানুষ বাজারে যায়। প্রয়োজনীয় কেনা-কাটা করে। প্রথম যিনি দোকানে যান তিনি বেছে বেছে ভালোটা কিনে নিয়ে আসেন। শেষে যিনি যান তিনিও বেছে বেছে ভালোটাই কিনে আনেন। সবাই ভালোটাই কিনে আনেন। কাজেই যার নিকট যেটা ভালো তিনি সেটাই কিনে নেন। বিবাহের ক্ষেত্রেও এমনটাই হয়ে থাকে। সবাই পছন্দ করেই বিবাহ করে থাকে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও বিবাহ করার পূর্বে দেখতে বলেছেন। আর দেখার দ্বারা উভয়ের মধ্যে যেমন মুহব্বত পয়দা হয় তেমনি মুহব্বত বৃদ্ধিও পায়। সাংসারিক জীবন সুখ ও শান্তিময় হয়।
তাছাড়া ছেলে ও মেয়ে খুব ছূরত হলে মনের মধ্যে কুমন্ত্রণা থাকে না। দ্বীনের সহায়ক হয়। ব্যাভিচার হতে রক্ষা পাওয়া যায়। আর খুব ছূরত বা সৌন্দর্যতা না থাকলে আহাল-আহলিয়ার মন ভরে না। ইতমিনান (শান্তি) পায় না। অনেক সময় আকৃতি ও প্রকৃতি দুটোই মন্দ হয়। তখন আর দুঃখের সীমা থাকে না। কোন কোন ক্ষেত্রে পারিবারিক জীবনে দুঃখের ছায়া নেমে আসে। সংসার ভেঙ্গে যাওয়ার মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
বর্ণিত আছে যে, সময়টি ছিল সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকাল। সে সময় এক ব্যক্তি স্বীয় চুল ও দাঁড়িতে খেজাব ব্যবহার করে। কিছুদিন পর তার খেজবের রং উঠে যায়। তখন আহলিয়ার পক্ষের লোকজন এসে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিকট অভিযোগ পেশ করেন যে, আমরা তাকে যুবক মনে করেছিলাম। আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে বেত্রাঘাত করেন। বললেন যে, তুমি তাদের সাথে প্রতারণা করেছ।