দিল্লীর সম্রাট বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তাই বিলম্বকাল ক্ষেপন না করে সরাসরি শায়খুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত মাখদূম জাহানিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সাক্ষাত মুবারক করার জন্য প্রস্তুত হলেন। শায়খুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত মাখদূম জাহানিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট ঘটনাটির সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলেন।
শাইখুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত মাখদূম জাহানিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, হ্যাঁ, ঘটনাটি সত্য। আমার মুমূর্ষাবস্থার কথা শুনে সুলত্বানুল আউলিয়া, কাবীরুল আউলিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ জালালুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি পানিপথ থেকে আসলেন। আমার জন্য দোয়া করলেন। আর নিজের হায়াত থেকে দশ বছর আমাকে হাদিয়া করলেন। বিস্তারিত ঘটনা শুনে ইহার সত্যতা সম্বন্ধে সম্রাটের মনে আর কোন সন্দেহ রইলো না। তারপর শায়খুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত মাখদূম জাহানিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার অনুমতি নিয়ে সম্রাট পানিপথের দিকে রওয়ানা হলেন।
সুলত্বানুল আউলিয়া, কাবীরুল আউলিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ জালালুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে সাক্ষাত করলেন। নানা বিষয়ে আলোচনা করলেন। এক পর্যায়ে উনাকে জিজ্ঞাসা করলেন, হযরত! আপনি কি কখনো মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখেছেন? সুলত্বানুল আউলিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ জালালুদ্দীন কাবীরুল আউলিয়া রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, দুনিয়াতে চর্ম চোখ দ্বারা মহান আল্লাহ পাক উনাকে দেখা সম্ভব নয়। তবে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্রতম নূর মুবারক অবশ্যই দেখতে পেয়েছি। উনার এই জাওয়াব শুনে সম্রাট খুবই খুশি হলেন। অতঃপর হাদিয়া স্বরূপ অনেক স্বর্ণমুদ্রা উনার সামনে রাখলেন। কিন্তু তিনি তা গ্রহন করলেন না। সম্রাট স্বর্ণমুদ্রাগুলো হযরতের সন্তানগণের সামনে রাখলেন। উনারাও তা গ্রহন করলেন না। নিরুপায় হয়ে দিল্লীর সম্রাট স্বর্ণমুদ্রাগুলো গরীব দুঃখীদের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! (তাযকিরাতুল আউলিয়া-৪/২৬০)
সিয়ারুল আকতাব কিতাবে বর্ণিত আছে, সুলত্বানুল আউলিয়া, কাবীরুল আউলিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ জালালুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি কয়েকবার সম্মানিত হজ্জ করেছেন। কিন্তু লোক চক্ষুর অন্তরালে যে কতবার সম্মানিত হজ্জ সুসম্পন্ন করেছেন তার কোন হিসাব নেই। কেননা প্রত্যেক পবিত্র জুমুয়ার নামায তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফে আদায় করতেন। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য যে, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক জাহিরের প্রকাশস্থল। চোখের পলকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ পৌছা এবং পবিত্র হজ্জ সম্পন্ন করা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফে হাজির হয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফে সম্মানিত নামায আদায় করা কঠিন কোন বিষয় নয়। এমনকি এক মুহূর্তে সারা দুনিয়া সফর করা উনাদের নিকট একেবারে মামুলী ব্যাপার। সুবহানাল্লাহ!
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৭)
-ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার- মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৮)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৯)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩০)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩১)