انابة (ইনাবত) উনার মাক্বাম হাছিলকারী ব্যক্তিত্ব মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে সায়ির (পরিভ্রমন) করতে থাকেন। যাকে সম্মানিত ইলমে তাছাওউফ উনার পরিভাষায় سير الى الله (সাইর ইলাল্লাহ) বলা হয়। অর্থাৎ সালিক বা সাধক মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ছীফত বা গুণ মুবারকে গুণান্বিত হওয়ার প্রতি মনোযোগী হয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
صبغة الله ومن احسن من الله صبغة
অর্থ: “তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার রং বা ছীফত মুবারক গ্রহণ করো। কেননা, মহান আল্লাহ পাক উনার রং বা ছীফত মুবারকের চেয়ে উত্তম আর কে আছেন।” (পবিত্র সূরা বাক্বারাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীপ ৩৮)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
تخلقوا باخلاق الله
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার ছীফত বা গুণ মুবারকে গুণান্বিত হও।”
যখন মুরীদ বা সালিক পবিত্র ছীফত বা গুণাবলীসমূহ নিজের সেই সকল স্বভাবে বদ্ধমূল করার কোশেশ করতে থাকে, তখন তারা অত্যন্ত বিনয়ী, বিন¤্র হয়। যা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অতি প্রিয়। বিনীত বিন¤্র স্বভাবের অধিকারী ব্যক্তিত্বকে তিনি অত্যন্ত মুহব্বত করেন এবং উত্তরোত্তর তাঁর মর্যাদা-মর্তবা বাড়িয়ে দেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
من تواضع لله رفعه الله تعالى
অর্থ: “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারকের জন্য বিনয় হয় মহান আল্লাহ পাক তার মর্যাদা-মর্তবা বৃদ্ধি করে দেন।”
সে সময় সালিক বা সাধক দুনিয়াবী সব কিছুকে বিসর্জন দেয়া পছন্দ করে। নিজেকে সবকিছু থেকে খালি করে। নিজেকে অত্যন্ত তুচ্ছ জ্ঞান করে। নিজেকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট জানে। আর অত্যন্ত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি অত্যাধিক কান্নাকাটি করতেন। এ কারণে উনার চেহারা মুবারক দুটি দাগ পড়েছিল। সুবহানাল্লাহ! তিনি বলতেন হায়! যদি আমার মা আমাকে রেহেম শরীফে ধারণ না করতেন। একদিন তিনি উটের উপর আরোহন করে কোথাও যাচ্ছিলেন। পথপ্রান্তে এক গৃহে কোন একজন ব্যক্তি পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করছিলেন। এমন সময় পাঠক উচ্চারণ করলেন-
ان عذاب ربك لواقع
অর্থ: “আপনার মহান রব আল্লাহ পাক উনার শাস্তি অবশ্যম্ভাবী।” (পবিত্র সূরা তূর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
এই পবিত্র আয়াত শরীফ শুনে তিনি উটের পিঠ হতে নামলেন। পাশের এক গৃহের প্রাচীরে হেলান দিয়ে বসে পড়লেন। তিনি নিতান্ত অবসন্ন হয়ে পড়েন। লোকজন উনাকে ধরে উনার পবিত্র হুজরা শরীফে নিয়ে গেলেন। একমাস পর্যন্ত তিনি ঐ অবস্থায় রইলেন। অথচ উনার অসুস্থতার কারণ কেউ বুঝতে পারেনি।
হযরত মুসয়াব ইবনে মাখরামা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ শুনে এত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়তেন যে, পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত শুনার সামর্থ্যও থাকতো না।
একদিন এক অপরিচিত ব্যক্তি অজ্ঞাতসারে উনার সামনে এই পবিত্র আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করলেন-
يوم نحشر الـمتقين الى الرحمن وفدا. ونسوق الـمجرمين الى جهنم وردا.
অর্থ: “যেদিন পরহেযগার মুত্তাক্বী বান্দাগণকে পরম দয়ালু মহান আল্লাহ পাক উনার সমীপে প্রতিনিধি দল হিসেবে সসম্মানে তাদের একত্রিত করবো। আর পাপীদেরকে পিপাসার্ত অবস্থায় দোযখের দিকে হাকিয়ে নিয়ে যাব।” (পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫, ৮৬)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৭)
-ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার- মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৮)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৯)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩০)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩১)