সুওয়াল: ই’তিকাফের আহকাম সম্বন্ধে জানালে কৃতজ্ঞ হবো?
জাওয়াব: ই’তিকাফের আভিধানিক অর্থ হলো গুণাহ হতে বেঁচে থাকা, অবস্থান করা, নিজেকে কোন স্থানে আবদ্ধ রাখা, কোণায় অবস্থান করা।
আর শরীয়তের পরিভাষায় রমযান মাসের শেষ দশ দিন দুনিয়াবী যাবতীয় কার্যকলাপ ও পরিবার-পরিজন হতে ভিন্ন হয়ে, আলাদাভাবে পুরুষের জন্য জামে মসজিদে ও মহিলাদের জন্য ঘরে ইবাদত কার্যে মশগুল থাকাকে ই’তিকাফ বলে।
ই’তিকাফ তিন প্রকার- (১) ওয়াজিব, (২) সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ, (৩) নফল। যিনি ই’তিকাফ করেন, তাকে বলে মু’তাকিফ। রমযানের শেষ দশ দিন ই’তিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ কিফায়া। প্রতি মসজিদে এলাকার তরফ হতে একজন মুতাকিফ হলেই সকলের পক্ষ হতে আদায় হয়ে যাবে, আর যদি কেউই ই’তিকাফ না করে, তাহলে সকলেরই সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ তরক করার গুণাহ হবে।
ই’তিকাফের শর্ত তিনটি- (১) পুরুষের জন্য মসজিদে, মহিলাদের জন্য ঘরের মধ্যে। (২) ই’তিকাফের জন্য নিয়ত করা, হদছে আকবর হতে পাক হওয়া। (৩) রোযা রাখা। তবে সাধারণভাবে ই’তিকাফের জন্য বালিগ হওয়া শর্ত নয়। ই’তিকাফ অবস্থায় জাগতিক ফায়দাদায়ক কাজ করা অবস্থাভেদে হারাম ও মাকরূহ্ তাহরীমী।
মু’তাকিফ ব্যক্তি মসজিদে এসে কোন বেহুদা কথা বা কাজ করবে না বা চুপ করে বসে থাকবে না। বরং ঘুম ব্যতীত বাকি সময় ইবাদত কার্যে মশগুল থাকতে হবে। যেমন- নফল নামায, কুরআন শরীফ তিলাওয়াত, যিকির, ইলম অর্জন ইত্যাদি। ই’তিকাফকারী বাইরে বের হওয়ার দু’টি জরুরত হতে পারে- (১) শরয়ী, (২) তবয়ী।
শরয়ী জরুরত হলো- যে মসজিদে ই’তিকাফ করছে, সেখানে জুমুয়া হয় না, অন্য কোন মসজিদে যেখানে জুমুয়া হয়, সেখানে জুমুয়ার নামায পড়তে যাওয়া এবং নামায পড়ে চলে আসা। মু’তাকিফ যদি অহেতুক এক সেকেন্ডের জন্য মসজিদের বাইরে অবস্থান করে, তাহলে ই’তিকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
তবয়ী জরুরত হলো- পায়খানা-প্রস্রাব ইত্যাদির জন্য বের হওয়া এবং কাজ সেরে চলে আসা।