পূর্ব প্রকাশিতের পর
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اولـئِكَ مَا يَأْكُلُونَ فِى بُطُونِهِمْ اِلَّا النَّارَ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ اللّـهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ
এরা যে হারাম খাচ্ছে, এই হারাম খাওয়ার কারণে উলামায়ে ‘সূ’দের সাথে মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্বিয়ামতের দিন কোন কথা বলবেন না, এদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র করবেন না। কারণ এরা গালিজে পরিপূর্ণ, অপবিত্র হয়ে গেছে। এরা অপবিত্র হয়ে গেছে। এদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র করবেন না।
وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
এদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে।
اولـئِكَ الَّذِينَ اشْتَرَوُا الضَّلَالَةَ بِالْهُدى وَالْعَذَابَ بِالْمَغْفِرَةِ
মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, এরা হিদায়েতের বিনিময়ে গোমরাহীকে খরিদ করেছে। ক্ষমার বিনিময়ে এরা আযাবকে গহণ করেছে।
فَمَا أَصْبَرَهُمْ عَلَى النَّار
মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, তারা এই কঠিন আযাব কি করে বরদাশ্ত করবে? এই আযাবের মধ্যে তারা কি করে ধৈর্য্যধারন করবে? কখনই করতে পারবে না।
মহান আল্লাহ পাক তিনি উলামায়ে ‘সূ’দের হাক্বীক্বত এখানে প্রকাশ করলেন। এরা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে যা নাযিল হয়েছে, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা বলেন তা তারা চুপিয়ে রাখবে। চুপিয়ে রেখে অপব্যাখ্যা করবে। অপব্যাখ্যা করে তারা দুনিয়া হাছিল করার চেষ্টা করবে এবং সেই দুনিয়া তারা গ্রহণ করবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, এ কারণে জাহান্নামের আগুন তারা গ্রহণ করবে, খাবে। এর কারণে তারা অপবিত্র হবে, গালিজযুক্ত হবে, নাপাক হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি এদের সাথে নাপাকীর কারণে পরকালে কোন কথাও বলবেন না, এদেরকে পবিত্রও করবেন না, এদের জন্য কঠিন আযাব থাকবে এবং এর কারণে কি হলো, এরা কি হলো? হিদায়েতের পরিবর্তে গোমরাহী খরিদ করলো, ক্ষমার পরিবর্তে আযাবকে তারা গ্রহণ করলো। এরা এই আযাবে কিন্তু ধৈর্য্যধারন করতে পারবেনা।
এর ব্যাখ্যায় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
عَنِ حضرت ابْنِ عَبَّاسٍ رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ إِنَّ أُنَاسًا مِنْ أُمَّتِي سَيَتَفَقَّهُونَ فِي الدِّينِ، وَيَقْرَؤُونَ الْقُرْآنَ، وَيَقُولُونَ : نَأْتِي الأُمَرَاءَ فَنُصِيبُ مِنْ دُنْيَاهُمْ، وَنَعْتَزِلُهُمْ بِدِينِنَا، وَلاَ يَكُونُ ذَلِكَ، كَمَا لاَ يُجْتَنَى مِنَ الْقَتَادِ إِلاَّ الشَّوْكُ، كَذَلِكَ لاَ يُجْتَنَى مِنْ قُرْبِهِمْ إِلاَّ الْخَطَايَا
হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উলামায়ে ‘সূ’দের সম্পর্কে বলেন-
انَّ انَاسًا مِنْ امَّتِي
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ان انَاسًا مِنْ امَّتِى
নিশ্চয়ই আমার উম্মতের মধ্যে কিছু লোক হবে
سَيَتَفَقَّهُونَ فِي الدّينِ ، وَيَقْرَؤُونَ الْقُرْآنَ
এরা দ্বীনি ইলম অর্জন করবে, শিখবে, পবিত্র কুরআন শরীফ শুদ্ধ করে তিলাওয়াত শিখবে, এরা ক্বারী হবে, হাফিয হবে, আলিম হবে, মুফতী, মুহাদ্দিছ, শায়খুল হাদীছ, মুফাস্সিরে কুরআন হবে। তারা কি বলবে?
وَيَقُولُونَ نَأْتِي الأُمَرَاءَ , فَنُصِيبُ مِنْ دُنْيَاهُمْ
এরা বলবে, এরা আমীর উমরাদের দরবারে যাবে, সেখানে যেয়ে তাদের কাছ থেকে দুনিয়ার একটা অংশ গ্রহণ করবে। অর্থাৎ সেই আমীর উমরাদের সাথে তারা তাল মিলিয়ে কি করবে? দুনিয়াবী ধন-দৌলত, টাকা-পয়সা, গাড়ী-বাড়ী তারা হাছিল করবে এবং তাদেরকে যখন বলা হয়, তোমরা আমীর-উমরাদের দরবারে গিয়ে তাদের সাথে মিশে গেলে তোমাদের দ্বীনের ক্ষতি হবে? তখন তারা কি বলে-
وَنَعْتَزِلُهُمْ بِدِينِنَا
অসুবিধা নেই আমীর উমরাদের সাথে মিলে তাদের দুনিয়াটা গ্রহণ করে দ্বীনটাকে ঠিক রেখে ফিরে আসবে। নাউযুবিল্লাহ! প্রকৃতপক্ষে তারা মানুষদেরকে ধোকা দেয়। এই ধোকা দিয়ে তারা আমীর উমরাদের দরবারে যাবে, যেয়ে দুনিয়া হাছিল করার চেষ্টা করবে। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কখনও এটা সম্ভব নয়! কখনও এটা সম্ভব নয়! তুমি ইল্ম্ নিয়ে সেই দুনিয়াদারদের, রাজা-বাদশাহর কাছে যাবে, তাদের থেকে দুনিয়া গ্রহণ করবে আর তোমার দ্বীন তুমি ঠিক রাখবে, এটা কখনও সম্ভব নয়।
وَلاَ يَكُونُ ذَلِكَ، كَمَا لاَ يُجْتَنَى مِنَ الْقَتَادِ إِلاَّ الشَّوْكُ
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কাতাদ এক প্রকার গাছ, কাটাওয়ালা গাছ, সেখান থেকে তুমি ফল পারবে অথচ কাটা তোমার হাতে বিদ্ধ হবে না, এটা কোনদিন সম্ভব নয়।
كَذلِكَ لاَ يُجْتَنَى مِنْ قُرْبِهِمْ إِلاَّ الْخَطَايَا
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কখনই সেটা সম্ভব নয় বরং এই উলামায়ে ‘সূ’ যখন দুনিয়াদারদের কাছে যাবে, রাজা-বাদশা, আমীর-উমরাদের কাছে যাবে তাদের থেকে দুনিয়া গ্রহণ করার জন্য ইলমের বিনিময় তখন তারা তাদের গোনাহখতাগুলি ছাড়া কোন কিছু লাভ করতে পারবে না। নাউযুবিল্লাহ! আমরা বাস্তবে সেটাই দেখতে পাচ্ছি। এই উলামায়ে ‘সূ’রা মুফতী মুহাদ্দিছ, শায়খুল হাদীছ, মুফাস্সিরে কুরআন, ইসলামী চিন্তবিদ অনেককিছু সেজে এদের কাছে যায়, যেয়ে কি করে? এদের সাথে মিশে হারামকে হালাল, হালালকে হারাম ফতওয়া দেয়। এরা বলে পর্দার প্রয়োজন নেই। নাউযুবিল্লাহ! অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার দ্বারা পর্দা ফরয করেছেন। আর এরা বলে পর্দার প্রয়োজন নেই। নাউযুবিল্লাহ! তাহলে গোনাহটাই সে গ্রহণ করলো। হাজার হাজার হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ছবি তোলা, রাখা, আঁকা হারাম করা হয়েছে। এরা বলতেছে বর্তমানে প্রয়োজন রয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! এরা গোনাহটা গ্রহণ করলো। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللّـهِ الْإِسْلَام
মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছেন- দ্বীন ইসলাম। অথচ তারা বলে, বর্তমানে গণতন্ত্রের প্রয়োজন রয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! এরা গোনাহটাকে গ্রহণ করলো। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার নাম দিয়ে হরতাল, লংমার্চ, কুশপত্তলিকা তৈরী করা এবং দাহ করা এগুলোও তারা করে যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে বললেন-
وَلاَ يَكُونُ ذَلِكَ
কখনই সেটা সম্ভব নয়! কোন ব্যক্তি আলিম ছূফী- দরবেশ সেজে রাজা- বাদশাদের দরবারে যাবে, তার দুনিয়া সে গ্রহণ করবে অথচ তার দ্বীন ক্ষতি হবে না; এটা কোন দিন সম্ভব নয়। অবশ্যই সে তাদের কাছে গেলে তাদের গোনাহখতাগুলি তার কাঁধে তারা চাপিয়ে দিবে এবং তাই চাপানো হচ্ছে। এরা মুফতী মুহাদ্দিছ হওয়ার পরও এখন এদের সাথে যাওয়ার পরে চুরি করতেছে, ধরা পরতেছে। এরা মাল সম্পদ আত্মসাৎ করছে, সেটা ধরা পরতেছে। অবৈধ কাজ করতেছে, বেপর্দা হচ্ছে, গান-বাজনা শুনতেছে সমস্ত হারাম কাজগুলি তারা এদের সাথে মেশার কারণে করে যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! ঠিক বালয়াম বিন বাউরা একই শ্রেণীর, সেও এটা করেছিলো। তাকে বলা হয়েছিলো তুমি নিজেই দেশটা দখল করে তোমার তর্জ-তরীক্বা তুমি জারি করে নাও। কিন্তু সেটা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। ইবলীস শয়তানের এটা ওয়াসওয়াসা, এটা মনে রাখতে হবে। (অসমাপ্ত)