সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র থুথু মুবারক দান
সাইয়্যিদুল আউলিয়া, গাউসুল আ’যম, মাহবূবে সুবহানী, মুজাদ্দিদে যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একদা মিম্বর শরীফ উনার মধ্যে দাঁড়িয়ে বললেন, “একবার সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমার যিয়ারত মুবারক হয়। তিনি আমাকে বললেন-
لـما تتكلم
অর্থাৎ আপনি ওয়াজ শরীফ করেন না কেন? আমি আরয করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আজমী (অনারবী)। বাগদাদ শরীফ উনার আরবী ভাষাভাষি, জ্ঞানী-গুনী উনাদের সামনে কি করে ওয়াজ শরীফ করার সাহস করতে পারি। তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে মুখ মুবারক খুলতে বললেন। আমি মুখ মুবারক খুললাম। তিনি পবিত্র কালাম পাক উনার এই পবিত্র আয়াত শরীফখানা পাঠ করলেন-
ادع الى سبيل ربك بالحكمة والـموعظة الحسنة
অর্থাৎ, “হিকমতের সাথে এবং উত্তম নছীহত মুবারক দ্বারা আপনি মাহন আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় আহ্বান করুন।” অতঃপর আমার মুখ মুবারক উনার মধ্যে সাতবার উনার পবিত্র থুথু মুবারক দান করলেন। আর নির্দেশ মুবারক দিয়ে বললেন, “লোকদের কাছে মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশাবলী পৌঁছাতে থাকুন।” আমি সে দিন যুহরের নামাযের পর ওয়াজ শরীফ করতে শুরু করলাম। অনেক লোক জমায়েত হতো। তবে আমার শরীর মুবারক কাঁপছিলো। সেই সময় আমীরুল মু’মিনীন, বাবুল ইলমি ওয়াল হিকাম, সাইয়্যিদুনা হযরত আলী কাররামাল্লাহূ ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সামনে আমাকে উপস্থিত দেখলাম। তিনি আমাকে বললেন, আপনার মুখ মুবারক খুলুন। আমি মুখ মুবারক খুললে তিনি আমার মুখ মুবারকে ছয়বার থুথু মুবারক দিলেন। আমি আরয করলাম, সাতবার কেন দিলেন না? তিনি বললেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মান প্রদর্শনার্থে একবার কম দিলাম। একথা মুবারক বলার পর উনাকে আর দেখলামনা। তিনি আমার দৃষ্টি থেকে অদৃশ্য হয়ে গেছেন। (যুবতাতুল আছার, গাউসুল ওরা-৩৯)
শায়খ হযরত আবুল হাসান আলী বিন হায়তী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন- যখন গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মিম্বর শরীফ উনার উপর বসতেন এবং আলহামদুলিল্লাহ বলতেন, তখন ধরাপৃষ্ঠের সমস্ত ওলীআল্লাহ উনারা নিশ্চুপ হয়ে যেতেন। উনারা মজলিসে থাকুন বা মজলিস থেকে অনেক দূরে থাকুন সম্মান প্রদর্শন পূর্বক নিরবতা অবলম্বন করতেন। তিনি বার বার যখন আলহামদুলিল্লাহ বলে নিশ্চুপ হতেন, তখন ওলীআল্লাহ উনারা ও হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারা মজলিসে সমবেত হয়ে যেতেন। হাজার হাজার ওলীআল্লাহ ও হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা এ রকম অবস্থায় মজলিসে উপস্থিত থাকেন, যাদেরকে বাহ্যিক চোখে দেখা যেতো না। ওসব অদৃশ্য শ্রোতাদের সংখ্যা দৃশ্যমান শ্রোতেদের থেকে কয়েকগুণ বেশি হতো। সেই মজলিসে উপস্থিত শ্রোতাদের উপর মহান আল্লাহ পাক তিনি রহমতের এমন বৃষ্টি বর্ষন করতেন যা বর্ণনাতীত।
শায়েখ হযরত আবু হাফস ওমর বিন হুসাইন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন, আমাকে গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া, সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন, হে হযরত ওমর রহমতুল্লাহি আলাইহি! আমার মজলিস থেকে দূরে থাকেন কেনো? এখানে বেলায়েতের পোষাক বণ্টন হতে থাকে। সে ব্যক্তি বড় দুর্ভাগা, যে এ মজলিস থেকে বঞ্চিত থাকে। অনেক দিন যাবত আমি মজলিসে উপস্থিত থাকতে লাগলাম। একদিন মজলিসে বসাবস্থায় আমার ঘুম এসে গেলো। আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, আসমান থেকে লাল ও সবুজ পোশাক অবতীর্ণ হচ্ছে এবং মজলিসে উপস্থিত সবাইকে পরানো হচ্ছে। আমি ভীত হয়ে জেগে উঠলাম এবং চিৎকার করতে লাগলাম। এমতাবস্থায় গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আওলিয়া হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, বেটা, চুপ থাকেন, শুনাটা দেখার মতো।
হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি