عِصْمَةُ الله (ইছমাতুল্লাহ) অর্থ: মহান আল্লাহ পাক উনার নিস্কলুস বান্দী। হযরত সাইয়্যিদ হাসান মাশহুদী রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি আজমীর শরীফের প্রধান শাসক ছিলেন। তিনি ভীম রাজের সাথে যুদ্ধে শহীদ হন। ভীম রাজ নতুন হিন্দু রাজা হিসেবে সিংহাসনে আরোহন করে। অল্প কিছু দিন পরেই কুতুবুদ্দীন আইবেকের সাথে তার যুদ্ধ সংঘটিত হয়। সেই যুদ্ধে ভীমরাজ পরাজিত ও নিহত হয়। আজমীর শরীফ পুনরায় মুসলমানগণের অধীনে আসে। নতুন শাসক হিসেবে মনোনীত হন সাইয়্যিদ হাসান মাশহুদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার চাচা সাইয়্যিদ ওয়াজি উদ্দীন মাশহুদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
সাইয়্যিদ ওয়াজিহ উদ্দীন মাশহুদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার বিবাহযোগ্য একজন কন্যা ছিলেন। উনার নাম মুবারক সাইয়্যিদা বিবি ইসমাতুল্লাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহা। সীরত-ছূরত মুবারকে তিনি ছিলেন অনন্যা। উনার বয়স মুবারক হয়েছে অনেক। কিন্তু উনার যোগ্য কোন পাত্র না পাওয়ার কারণে পাত্রস্থ করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে সাইয়্যিদ ওয়াজিহ উদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কিছুটা চিন্তিত ছিলেন।
একদিন রাতে তিনি স্বপ্নে দেখেন, ইমামুল মুহাক্কিকীন ইমামুছ সাদিস মিন আহলি বাইতি রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জাফর ছাদিক আলাইহিস সালাম উনাকে। তিনি উনাকে লক্ষ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, “হে আমার বংশধর, সাইয়্যিদ ওয়াজিহ উদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ মুবারক হচ্ছে যে, আপনি আপনার এই আওলাদ বা সন্তানকে সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাথে বিবাহ দিন।”
হযরত সাইয়্যিদ ওয়াজিহ উদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বপ্ন দেখার পর সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবার শরীফে হাজির হলেন। স্বপ্নটির কথা উনার খিদমত মুবারকে পেশ করেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, “যদিও আমার বয়স মুবারক অনেক হয়েছে। বিবাহের বয়স নেই। তথাপি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানার্থে আপনার প্রস্তাব কবুল করলাম।” সুবহানাল্লাহ! (খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি-১৮৭)
আওলাদ-সন্ততি
ঐতিহাসিকগণ সকলে একমত যে, সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদে যামান সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দুজন আহলিয়ারই সন্তান-সন্ততি ছিলেন।
ছেলে সন্তানগণের নাম মুবারক
(১) হযরত খাজা সাইয়্যিদ ফখরুদ্দীন আবুল খায়ের চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি
(২) হযরত খাজা সাইয়্যিদ হুস্সামুদ্দীন বা হিশামুদ্দীন চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
(৩) হযরত খাজা সাইয়্যিদ যিয়াউদ্দীন আবু সাঈদ চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
একমাত্র মেয়ে সন্তানের নাম মুবারক
Y হযরত সাইয়্যিদা বিবি হাফিযা জামাল চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহা।
উল্লেখ্য যে, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দ্বিতীয় আহলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহা উনার রেহেম শরীফে তাশরীফ মুবারক আনেন হযরত খাজা সাইয়্যিদ যিয়াউদ্দীন আবু সাঈদ রহমতুল্লাহি আলাইহি।
Y সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা ফখরুদ্দীন চিশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি কোন এক জিহাদে শহীদ হন। উনার মাযার শরীফ কাশানগড় রাজ্যের ‘সরদার’ নগরে অবস্থিত। ইহা আজমীর শরীফ হতে ষোল ক্রোশ দূরবর্তী একটি শহর। মাযার তালাবের নিকট অবস্থিত। উনার সন্তানগণ হতে সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বংশধারা অদ্যাবধি জারী আছে। সুবহানাল্লাহ! তিনি অনেক শানদার ওলীআল্লাহ ছিলেন। সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পর তিনি তিন বৎসর হায়াত ছিলেন।
একজন কুতুবুয যামান উনার দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১১৬ -মুহম্মদ সাদী