সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ছোহবত মুবারকের তা’ছীর বা প্রভাব
পূর্ব প্রকাশিতের পর
ছূফী হামীদুদ্দীন নাগুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার নূরানী চেহারা মুবারকের তাজাল্লিয়াত সহ্য করতে পারলেন না। বেহুশ হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন।
বেশকিছু সময় এভাবে অতিবাহিত হলো। যখন হুশ ফিরলো তখন তিনি আবেদন করলেন, “হুযূর! আমাকে গোলামীর সনদ দান করুন। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত মুবারক দান করুন।” এমন আদব-ইহতিরাম, মুহব্বত ও বিনয়ের সাথে কথাগুলো বলছিলেন যে, উপস্থিত যারা ছিলেন সবাই উনার প্রতি দয়া পরবশ হলেন।
সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জওয়াবে ইরশাদ মুবারক করলেন, প্রথমে তোমার অন্তর রাজ্য থেকে গাইরুল্লাহর মুহব্বত দূর করো। যেখানে শত শত মেয়েদের মুহব্বতের বাসা সেখানে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ইশক-মুহব্বত প্রবেশ করবে কিভাবে? মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেতে হলে সবকিছুকেই বিসর্জন দিতে হবে। কারো মুহব্বত বা আকর্ষণ অন্তরে থাকতে পারবে না। অন্তরকে একেবারে খালি করতে হবে।”
ছূফী হামীদুদ্দীন নাগুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আপনার পবিত্রতম চেহারা মুবারক দেখার সাথে সাথে আমার অন্তর রাজ্য থেকে সবকিছুর আকর্ষণ দূর হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
আপনার মুহব্বত মুবারক ব্যতিত আর কোনো মুহব্বতই অনুভূত হচ্ছে না। অন্তর থেকে সবকিছুই উধাও হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ!
সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার অবস্থা দেখে উনার প্রতি দয়াদ্র হলেন। উনার কথা শুনে আরো খুশি হলেন। উনাকে বাইয়াত করালেন এবং নিজের মুরীদের দলভুক্ত করে নিলেন। সুবহানাল্লাহ!
ছূফী হামীদুদ্দীন নাগুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তওবা করতঃ বাইয়াত হয়েছেন। একথা উনার বন্ধু মহলে বিদ্যুৎ গতিতে ছড়িয়ে পড়লো। বন্ধু-বান্ধব তারা সবাই উনার দিকে ছুটে আসলো। আর উনাকে পূর্ব পাপ পথে ফিরে আসার জন্য উৎসাহ ও উদ্দীপনা দিতে লাগলো। তিনি ঘৃণাভরে সেগুলো প্রত্যাখ্যান করলেন। বললেন, আমি দুনিয়ার দিকে ফিরে যাওয়ার সব পথ ভুলে গেছি। এখন জান্নাতী ‘হূর’ও যদি আমার সামনে নাচতে থাকে তবুও আমি তোমাদের পথে ফিরে যেতে পারবো না। সুবহানাল্লাহ!
যখন মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম মা’রিফাত-মুহব্বত মুবারকের সন্ধান পাইনি, তখন তোমাদের পথে হেটেছি। আর মহাপবিত্র মা’রিফাত-মুহব্বত মুবারকের সন্ধান পাওয়ার পর ওগুলোকে আজ তুচ্ছ ও নগন্য মনে হচ্ছে।
ছূফী হামীদুদ্দীন নাগুরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি পরবর্তী জীবনে অনেক বড় ওলীআল্লাহ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। মানুষ উনাকে শায়খুল মাশায়িখ এবং সুলতানুল আরিফীন লক্বব মুবারক দ্বারা স্মরণ করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! (হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ পূর্ণাঙ্গ জীবনী-১৮০)