সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদ যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-৪১ (বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)

সংখ্যা: ২৭১তম সংখ্যা | বিভাগ:

আজমীর শরীফে আগমন-২

পূর্ব প্রকাশিতের পর

পৃথ্বিরাজ শাদি দেওকে ডেকে আনলো। পুরোহিতদের অভিযোগের সমস্ত কথা তাকে বললো। তাকে এটাও বললো, প্রতিকার কি করে করা যায়? শাদি দেও খুব বিচক্ষণ লোক ছিলো। সে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে ভাবলো, তারপর পৃথ্বিরাজকে বললো, আপনি একটা মহাসভার আয়োজন করুন। সেখানে ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে বিতর্ক হবে। সেই বিতর্কে ঐ মুসলমান দরবেশ উনাকে মঞ্চে আহ্বান করুন। আমি আমার ধর্মের বাণী যাদুর সাথে এভাবে পেশ করবো যে, তিনি আমার একটি কথারও উত্তর দিতে পারবেন না। বিতর্কের জন্য শর্ত থাকবে যে, যদি তিনি পরাজিত হন তাহলে তিনি এদেশ থেকে চলে যাবেন। কোনোদিন ফিরে আসবেন না। আর তিনি যদি আমাকে পরাস্ত করতে পারেন, যদিও তা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়, তাহলে তিনি এদেশে থেকে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। যদিও আমরা উনাকে সে সুযোগ দিব না। নাঊযুবিল্লাহ! আর একটি কাজ করতে হবে, ঐ বিতর্কের বিষয়বস্তু কার সঙ্গে কার বিতর্ক হবে, কোথায় হবে, কখন হবে, তা সমস্ত রাজ্যে প্রচার করে দিতে হবে। যাতে হিন্দু ধর্মের লোকেরা উপস্থিত থেকে তাদের ধর্মের বিজয় প্রত্যক্ষ করতে পারে। আর ভবিষ্যতে তারা যেনো কখনো অন্য ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট না হয়। নাউযুবিল্লাহ!

শাদি দেওয়ের প্রস্তাব পৃথ্বিরাজের খুবই মনপূতঃ হলো। মন্ত্রীকে ডেকে বিতর্ক সভার আয়োজন করতে বললো। দিন, তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করে শাদি দেওকে তৈরী হতে বললো। কুতুবুল মাশায়িখ, সুলত্বানুল হিন্দ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বিষয়টি জানানো হলো। তিনি তাদের বাহাছ বা বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে সম্মতি দান করলেন।

রাজ্যময় একটা হৈ চৈ পড়ে গেলো। হিন্দুরা লাফালাফি ও আস্ফালন করতে লাগলো। নির্দিষ্ট দিন, সময়, স্থান এবং বিতর্ক অনুষ্ঠিত হওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা সুচারুরূপে সুসম্পন্ন হলো।

শাদী দেও-এর সম্মানিত ইসলাম গ্রহন

আজমীর শরীফ উনার সব মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ছিল শাদীদেও। কেউ কেউ তাকে শাদীদেব বলে উল্লেখ করেছেন।

ঐ সময় হিন্দু শাস্ত্রের সে ছিলো পরম পূজনীয় ব্যক্তি। জ্ঞান-গরীমা ও যাদু বিদ্যায় তৎকালীন হিন্দুস্থানের বিশেষ লোকদের অন্যতম। রাজপুতরাও তাকে খুবই মানতো ও সম্মান করতো।

নির্ধারিত দিনে শাদীদেও নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই তার লোকজনকে সাথে নিয়ে মঞ্চে উপস্থিত হলো। বিতর্কের স্থানটি ছিল লোকে লোকারণ্য। নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত প্রায়। কিন্তু সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি তখনও হাজির হননি। হিন্দুরা চিৎকার করে বলছে যে, প্রতিপক্ষ কোথায়?

শাদী দেও মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলো, “মুসলমানগণ হয়তো ভয়ে পালিয়ে গেছে।” নাউযুবিল্লাহ! তোমরা দু একজন গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে আস। এমতাবস্থায় দেখা গেল দু তিনজন লোক মঞ্চের দিকে এগিয়ে আসছেন। একটু নিকটে আসতে বুঝা গেল উনারাই বিতর্কের বিপক্ষ দল।

সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি দু’ তিনজন খাদিমসহ মঞ্চে উঠলেন। শাদীদেও বাধ্য হয়ে সম্মান প্রদর্শনার্থে দাঁড়িয়ে গেল। সভাস্থল একেবারে নিরব, নিস্তব্ধ। কি ঘটবে তা দেখার জন্য সকলে উৎসুক চিত্তে অপেক্ষমান।

সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি মঞ্চে বসে মুবারক দৃষ্টি দিলেন শাদীদেও এর দিকে। দৃষ্টি মুবারক দেয়ার সাথে সাথে শাদীদেব উনার দিকে মুখ ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে গেলো। উনার নূরানী চেহারা মুবারকের দিকে পলকহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। সে থর থর করে কাঁপছে। সব যাদু বিদ্যা ভুলে গেল। তার সব ক্ষমতা খর্ব হলো। সে নিথর, নিস্তব্দ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। সুলত্বানুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি তাকে কাছে ডেকে নিলেন। চোখে চোখ মুবারক রেখে উচ্চ স্বরে বললেন, শাদী দেও! আমি লওহে মাহফূযে তোমার নাম ঈমানদারগণের তালিকায় দেখতে পাচ্ছি।

জযবা ও হালের সাথে তিনি বললেন, হে শাদী! পবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করো-

لَا إلٰهَ إلَّا اللهُ مُـحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَليْهِ وَسَلَّمَ

সাথে সাথে শাদীদেও সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ক্বদম মুবারক জড়িয়ে ধরে অঝোর নয়নে কাঁদতে লাগলো। আর জোরে জোরে পাঠ করলো-

لَا إلٰهَ إلَّا اللهُ مُـحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَليْهِ وَسَلَّمَ

অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোন মা’বুদ নেই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহা সম্মানিত রসূল, হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। মুসলমান হওয়ার পর তার নাম মুহম্মদ সাদী রাখলেন।

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইসমে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদুর রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে- একজন কুতুবুজ্জামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- ৬৪

 ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলার্দু রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুজ্জামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- ৬৪

ক্বায়িম মাক্বামে আবূ রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাখ্দূমুল কায়িনাত, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মহাসম্মানিত হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-৪০

উম্মু মুর্শিদিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আমাদের- মহাসম্মানিত হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনার সীমাহীন ফাদ্বায়িল-ফদ্বীলত, বুযূর্গী-সম্মান, মান-শান, বৈশিষ্ট্য এবং উনার অনুপম মাক্বাম মুবারক সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত-৯০

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-৮৬ (বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)