সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদ যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-৩৯ (বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)

সংখ্যা: ২৬৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

আজমীর শরীফে আগমন

পূর্ব প্রকাশিতের পর

পৃথ্বীরাজের উট পালকেরা উটের বাথানে অবস্থান মুবারক করতে না দেয়ায় সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সেখান থেকে চলে আসেন। আনা সাগর নামক নদীর তীরে একটি উচু স্থানে অবস্থান মুবারক করছিলেন। এ আনা সাগরের উভয় তীরে হিন্দুদের বহু মন্দির ছিল। এর মধ্যে একটি মন্দির ছিল অনেক বড় ও তাদের দৃষ্টিতে জাঁকজমকপূর্ণ। স্বয়ং পৃথ্বিরাজ নিজে এ মন্দিরে আসতো। তাদের এ মন্দিরটির ব্যয় নির্বাহের জন্য কয়েকটি গ্রামও ওয়াকফ করা ছিল। কথিত আছে যে, আনা সাগরের উভয় তীরের মন্দিরগুলোতে প্রতি রাতে ১৬০০ মন তেল খরচ হতো এবং কয়েক হাজার পূজারী সবসময় এ মন্দিরগুলোর সেবায় নিয়োজিত থাকতো।

বলা বাহুল্য, হিন্দু স্বাস্ত্রের কেন্দ্রস্থল ছিল আনা সাগর। সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার মুরীদগণকে নিয়ে সেখানে অবস্থান মুবারক গ্রহণ করলেন। হিন্দুরা কোনক্রমেই তা বরদাশত করতে পারছিলো না। সুতরাং হিন্দু পুরোহিতদের একটি প্রতিনিধিদল পৃথ্বিরাজের দরবারে আসলো। আবেদন জানালো যে, মুসলমান দরবেশ উনাদের অবস্থানের কারণে মন্দিরের কথিত পবিত্রতা ক্ষুণœ হচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! তাদের কাজ-কর্মে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। অতএব, যেকোনো প্রকারেই হোক উনাদেরকে মন্দির এলাকা থেকে বিতাড়িত করা উচিত। নাউযুবিল্লাহ! কেননা, উনারা যদি কিছুকাল এখানে অবস্থান করতে পারে, তবে এখন তাদেরকে বিতাড়িত করার যে সম্ভাবনাটুকু আছে, পরে সেটাও থাকবে না। তখন আক্ষেপ ও অনুতাপ করা ছাড়া কোনো গত্যন্তর থাকবে না।

এদিকে কুতুবুল মাশায়িখ, সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার মুরীদগণকে নিয়ে বহাল তবিয়তে আনা সাগরের তীরে জঙ্গলঘেরা ছোট একটি টিলার উপর অবস্থান করছেন। একটা কুঁড়ে ঘর তৈরী করে অবস্থান মুবারক করতে লাগলেন। উল্লেখ্য, উটের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজমীর শরীফের ঘরে ঘরে প্রচার হয়ে গেলো যে, একদল যাদুকর এসেছেন যাঁরা অসম্ভব রকমের যাদুর ক্ষমতা রাখেন ও বিরাট শক্তিধর। নাঊযুবিল্লাহ!

আজমীর শরীফ উনার অনেক বাসিন্দা কৌতূহলী হয়ে নবাগত মহাপুরুষ উনাকে এক নজর দেখার জন্য কুঁড়ে ঘরে আসতে লাগলো। কিন্তু উনার নূরানী চেহারা মুবারক দেখার পর তাদের ধারণা বদলে গেলো। তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলো যে, এ কেমন মহাপুরুষ? উনার মধ্যে না আছে কোন বেশভূষা আর না আছে কোনো যাদুর প্রভাব। উনার নিকট কোনো মূর্তি নেই, নেই কোন দেব দেবীর ফটো। গায়ে নেই কোন ছাই ভস্ম, কপালে নেই কোন চন্দন চর্চা ও সিঁদুরের তিলক। না, না, তিনি সাধুও নন আর কোনো যাদুকরও নন। উনারা তো সাধারণ মানুষের দলভুক্ত ভিনদেশী ফকীর দরবেশ। কিন্তু তিনি এমন ক্ষমতা পেলেন কোথা থেকে যে, উনার একটি কথায় রাজার সমস্ত উটগুলোকে মাটি কামড়ে ধরে রেখেছিলো। তারা দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খাদিম উচ্চস্বরে পবিত্র মাগরিব নামায উনার আযান দিতে লাগলেন। আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার এবং লা ইলাহা ইল্লাহ বলে আযান শেষ করলেন। সম্মানিত আযানের ধ্বণি শুনে তারা বুঝতে পারলো যে এ ভিনদেশী লোকগুলো অবশ্যই মুসলমান হবেন। পবিত্র আযানের ধ্বণিতে তাদের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠেছিলো।

স্মর্তব্য যে, পৃথ্বিরাজ অতি গোপনে তার একান্ত বাধ্যগত সৈন্যকে পাঠিয়েছিলো কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে শহীদ করার জন্য। নাঊযুবিল্লাহ! কিন্তু বার বার সে নিষ্ফল হয়ে ফিরে যাচ্ছিলো। তবে ঘরে কিংবা রাজদরবারে ফিরতে পারছিলো না রাজার ভয়ে। কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট বার বার আসা যাওয়া এবং উনার যবান মুবারক থেকে নিঃসৃত বাণী মুবারক শুনতে শুনতে হিন্দু ধর্মের প্রতি তার বিতৃষ্ণা জন্মেছিলো। একদিন সে কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র ক্বদম মুবারকে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে বললো, “আমি আপনার পবিত্র ও সম্মানিত ধর্ম গ্রহণ করার জন্য নিয়ত করেছি। দয়া করে আমাকে আপনার সম্মানিত দ্বীনের মধ্যে সামিল করুন। আমার বাইয়াত কবুল করুন। কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তাকে গ্রহণ করলেন এবং পবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করিয়ে নিজের ছোহবত মুবারকে রেখে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!

আজমীর শরীফে অনেকের কানে এখবর পৌঁছে গেলো যে, যে লোকটিকে রাজা পাঠিয়েছিলো কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা গরীবে নেওয়াজ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে শহীদ করার জন্য, সে লোকটি উনার নিকট আত্মসমর্পণ করে নিজ ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়ে গেছে। এমনকি উনার ছোহবত মুবারকে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! এ ঘটনা শুনে অসংখ্য লোক সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহন করলেন। তারা সবাই মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান এনে মুসলমান হলেন। যদিও তখনও মুসলমান উনাদের সংখ্যা হাতে গনা যেতো, তবুও পৃথ্বিরাজের ধর্মে মর্যাদায় ফাটল ধরেছিলো।

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছহিবে কাশফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছহিবে ইসমে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদুর রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে- একজন কুতুবুজ্জামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- ৬৪

 ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশ্ফ ওয়া কারামত, ফখরুল আউলিয়া, ছুফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলার্দু রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুজ্জামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান- ৬৪

ক্বায়িম মাক্বামে আবূ রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাখ্দূমুল কায়িনাত, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মহাসম্মানিত হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-৪০

উম্মু মুর্শিদিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আমাদের- মহাসম্মানিত হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনার সীমাহীন ফাদ্বায়িল-ফদ্বীলত, বুযূর্গী-সম্মান, মান-শান, বৈশিষ্ট্য এবং উনার অনুপম মাক্বাম মুবারক সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত-৯০

ইমামুল মুসলিমীন, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইউস সুন্নাহ ইমামে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-৮৬ (বিলাদাত শরীফ- ৮০ হিজরী, বিছাল শরীফ- ১৫০ হিজরী)