সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদ যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চিশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-২৬ (বিলাদত শরীফ ৫৩৬ হিজরী, বিছাল শরীফ ৬৩৩ হিজরী)

সংখ্যা: ২৫৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার প্রতি আদব (৩)

উল্লেখ্য যে, মু’মিনগণ, মুহসিনগণ উনারা উনাদের আমলের প্রতিদান পাবেন। কিন্তু বেয়াদবী করলে আমল বিনষ্ট হবে। তার কোন প্রতিদান পাবেন না।

তাফসীরে রুহুল বয়ানে উল্লেখ আছে যে, আলোচ্য পবিত্র আয়াত শরীফখানা এবং অনুরূপ অন্যান্য পবিত্র আয়াত শরীফসমূহ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে নাযিল হলেও হক্কানী-রব্বানী আলিম তথা ওলীআল্লাহগণ উনাদের ক্ষেত্রেও একই হুকুম প্রযোজ্য। অর্থাৎ উনাদের সাথে আদব রক্ষা না করলেও আমলসমুহ বিনষ্ট হয়ে যাবে। সেই আমলের কোন প্রতিদান দেয়া হবে না।

সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার শায়েখ শায়খুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত উসমান হারূনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার প্রতি সবসময় আদব ইহতিরাম বজায় রেখেছেন। উনার আদেশ নিষেধগুলো পরিপূর্ণভাবে পালন করতেন। কখনো চু-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করেননি। যা কিছু নিয়ামত পেয়েছেন, পাচ্ছেন এবং পাবেন সবই উনার শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার মাধ্যমে পাবেন বলে মনে করতেন। অন্য কোন মাধ্যমে পাওয়ার চিন্তাও করতেন না। উনার কাজ কর্ম, কথা-বার্তা, আমল-আখলাক্বের কখনো অগ্রবর্তী হতেন না। মাল, জান, সময়, শ্রম সবকিছু দিয়েই সবসময় উনার খিদমত মুবারকে আঞ্জাম দিতেন। উনার প্রতি পরিপূর্ণরূপে ফানা ছিলেন। কখনো অন্য কারো প্রতি দৃষ্টি দেননি। আলোচ্য ঘটনা দ্বারা সে বিষয়টি পরিষ্ফুটিত হয়েছে।

সুলতানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহতুল্লাহি আলাইহি উনার শায়েখ শায়খুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ হযরত উসমান হারূনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি একদিন উনাকে ডেকে বললেন, মুঈন্দ্দুীন! আপনাকে নিয়ে পবিত্র মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ সফর করবো।

তিনি মুর্শিদ ক্বিবলা উনার সফরের সমস্ত জিনিষপত্র প্রস্তুত করতঃ নিজের মাথা মুবারকে বহন করে মুর্শিদ ক্বিবলা উনার পিছনে পিছনে চলতে লাগলেন।

যথাসময়ে পবিত্র মক্কা শরীফে পৌঁছলেন। প্রথমে দু’রাকায়াত শোকরানা নামায আদায় করলেন। তারপর পবিত্র কা’বা শরীফ সাত বার তাওয়াফ করলেন। তাওয়াফ শেষ করে হাজরে আসওয়াদ বরাবর দাঁড়ালেন। কুতুবুল মাশায়িখ সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ডান হাত মুবারক ধরে আকাশের দিকে তুলে বললেন, “আয় বারে ইলাহী! আপনি আমার মুঈনুদ্দীনকে কবুল করুন।”

সাথে সাথে আওয়াজ মুবারক আসলো, “আমি মুঈনুদ্দীনকে কবুল করলাম।” সুবহানাল্লাহ!

শায়খুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ হযরত উসমান হারূনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি অত্যন্ত খুশি হলেন। সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন। বললেন, মুঈনুদ্দীন! মহান আল্লাহ পাক আপনাকে আখাছছুল খাছভাবে কবুল করেছেন।

চলুন, পবিত্র মদীনা শরীফে চলে যাই। ৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পবিত্র মদীনা শরীফে পৌঁছলেন। গোসল করে পবিত্র মসজিদে নববী শরীফে দু’ রাকায়াত নামায আদায় করলেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ক্বদম মুবারকের দিকে দাঁড়িয়ে শায়খুল উলামা ওয়াল মাশায়িখ খাজা উসমান হারূনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি সালাম মুবারক পেশ করলেন। কিন্তু সাইয়্যিদুনা হযরত গরীবে নেওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি সালাম মুবারক পেশ করলেন না। বিষয়টি উনার মুর্শিদ ক্বিবলা উনার দৃষ্টিগোচর হলো। তিনি বললেন,

معین تم نے حضور اکرم صلی اللہ علیہ وسلم کو سلام نہیں دیا؟

অর্থ: মুঈনুদ্দীন! আপনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সালাম দিলেন না? তিনি উত্তরে বললেন-

حضور  معین میں معین ہے کہا؟  جو سلام پیش کرے. میں نے خود کو  اپکے قدم پر سپرد کر دیا. اب اپ اگر حکم کرے تو میں سلام پیش کرونگا.

অর্থ: “মুঈনুদ্দীনের মধ্যে মুঈনুদ্দীন আছে কোথায় যে সালাম পেশ করবে? আমি তো আমার সত্তাকে আপনার ক্বদম মুবারকে সমর্পন করেছি। এখন আপনি যদি আদেশ মুবারক দান করেন তাহলে সালাম পেশ করতে পারি।”

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১১৯

ওলীয়ে মাদারজাদ, মুসতাজাবুদ্ দা’ওয়াত, আফযালুল ইবাদ, ছাহিবে কাশফ্ ওয়া কারামত, ফখরুল আওলিয়া, ছূফীয়ে বাতিন, ছাহিবে ইস্মে আ’যম, লিসানুল হক্ব, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, আমাদের সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর স্মরণে- একজন কুতুবুয্ যামান-এর দিদারে মাওলার দিকে প্রস্থান-১২০

ক্বায়িম মাক্বামে আবূ রসূলিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাখ্দূমুল কায়িনাত, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মহাসম্মানিত হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার দীদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-২৩৫

উম্মু মুর্শিদিনা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে উম্মু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মালিকুদ দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা আমাদের- মহাসম্মানিত হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা কা’বা আলাইহাস সালাম উনার সীমাহীন ফাদ্বায়িল-ফদ্বীলত, বুযূর্গী-সম্মান, মান-শান, বৈশিষ্ট্য এবং উনার অনুপম মাক্বাম মুবারক সম্পর্কে কিঞ্চিৎ আলোকপাত-৮৫

হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৫৪) ছবর উনার মাক্বাম এবং তা হাছিলের পন্থা-পদ্ধতি