মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফে বর্ণিত আছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে বান্দা! যদি তুমি অল্প রিযিক পেয়েই আমার প্রতি সন্তুষ্ট থাকো তাহলে আমি তোমার অল্প আমলেই তোমার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবো। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফে আরো বর্ণিত আছে-
اِذَا اَحَبَّ اللهُ تَـعَالٰى عَبْدًا اِبْتِلَاهُ فَاِنْ صَبَّـرَ اِجْتَـبَاهُ فَاِنْ رَضِىَ اِصْطَفَاهُ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি কোন বান্দাকে মুহব্বত করেন তখন তাকে বালা-মুছীবতগ্রস্ত করেন। যদি সে ধৈর্য্যধারণ করে তাহলে মহান আল্লাহ পাক তাকে মুহব্বত-মা’রিফাত মুবারক দানের জন্য মনোনীত করেন। আর যদি তাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে খাছ নিয়ামত (সন্তুষ্টি-রেযামন্দি) দানের জন্য লক্ষ্যস্থল বানিয়ে নেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্বিয়ামতের দিন আমার একদল উম্মতকে পাখির ন্যায় পাখা ও পালক দান করবেন। উনারা তার উপর ভর করে সমস্ত জান্নাতে উড়ে বেড়াবেন। হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের এই অবস্থা দেখে উনাদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন, আপনাদের পাপ-পূন্যের আমলের হিসাব-নিকাশ হয়েছে কি? দাড়ি-পাল্লায় আপনাদের আমল ওজন করা হয়েছে কি? আপনারা পুলসিরাত পার হয়েছেন কি? জাহান্নাম দেখেছেন কি? উনারা উত্তরে বলবেন আমরা এসব বিষয়ের কোন কিছুই দেখতে পাইনি।
হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারা পুনরায় জিজ্ঞাসা করবেন আপনারা কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনার উম্মত?
উনারা বলবেন, আমরা আখিরী রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত।
তখন হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা বলবেন, আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার কসম দিয়ে বলছি, বলুন! দুনিয়াতে আপনারা কি কি নেক আমল করেছেন? যার ফলে আজ আপনাদেরকে এমন সৌভাগ্য ও মর্যাদা দান করা হয়েছে।
উনারা বলবেন, আমাদের দুটি আদত বা অভ্যাস ছিল।
১। মহান আল্লাহ পাক উনার ভয় ও লজ্জায় আমরা নির্জন স্থানেও কোন পাপ কাজে লিপ্ত হতাম না।
২। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে যে রিযিক দান করতেন আমরা তাতেই সন্তুষ্ট ও পরিতৃপ্ত থাকতাম। সুবহানাল্লাহ!
এ কথা শুনে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা বলবেন, অবশ্যই এই সৌভাগ্য ও মর্যাদা আপনাদেরই প্রাপ্য। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন-
يَا مَعْشَرَ الْفُقَرَاءِ اَعْطُوا اللهَ الرِّضَا مِنْ قُـلُوْبِكُمْ تَظْفَرُوْا بِثَـوَابِ فَـقْرِكُمْ وَاِلَّا فَلَا
অর্থ: হে দরবেশগণ! তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আন্তরিকভাবে সন্তুষ্ট থাকো। তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাদের দরবেশীর পরিপূর্ণ ফযীলত দান করবেন। অন্যথায় তোমরা এই নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হবে। (দায়লামী শরীফ)
হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘মুকাশাফাতুল কুলূব’ কিতাবে উল্লেখ করেছেন। বণী ইসরাঈলের লোকেরা একদিন সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে বলেছিলেন, আপনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে জিজ্ঞাসা করুন, কোন আমল করলে তিনি আমাদের উপর সন্তুষ্ট হবেন। আমরা সেই আমল করতঃ মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক হাছিল করবো।
সাইয়্যিদুনা হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে সেই বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি জানালেন, তোমরা আমার ফায়সালা বা বিধানের উপর সন্তুষ্ট থাকো। তাহলে আমিও তোমাদের উপর সন্তুষ্ট থাকবো। সুবহানাল্লাহ!
মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১৯২) ক্বলবের ফানা এবং নফসের ফানা হাছিলের উপায়
মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১৯৩) ক্বলবের ফানা এবং নফসের ফানা হাছিলের উপায়