আল্লামা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
পূর্ব প্রকাশিতের পর
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّـمَا الدُّنْيَا لِأَرْبَعَةِ نَفَرٍ عَبْدٍ رَزَقَهُ اللَّهُ مَالًا وَعِلْمًا فَهُوَ يَتَّقِيْ فِيْهِ رَبَّه وَيَصِلُ فِيْهِ رَحِمَهُ وَيَعْلَمُ لِلّٰهِ فِيْهِ حَقًّا فَهٰذَا بِأَفْضَلِ الْمَنَازِلِ وَعَبْدٍ رَزَقَهُ اللهُ عِلْمًا وَلَـمْ يَرْزُقْهُ مَالًا فَهُوَ صَادِقُ النِّيَّةِ يَقُوْلُ لَوْ أَنَّ لِـيْ مَالًا لَعَمِلْتُ بِعَمَلِ فُلَانٍ فَهُوَ بِنِيَّتِهٖ فَأَجْرُهُمـَا سَوَاءٌ وَعَبْدٍ رَزَقَهُ اللهُ مَالًا وَلَـمْ يَرْزُقْه عِلْمًا فَهُوَ يَـخْبِطُ فِيْ مَالِهٖ بِغَيْرِ عِلْمٍ لَا يَتَّقِيْ فِيْهِ رَبَّه وَلَا يَصِلُ فِيْهِ رَحِمَهُ وَلاَ يَعْلَمُ لِلّٰهِ فِيْهِ حَقًّا فَهٰذَا بِأَخْبَثِ الْمَنَازِلِ وَعَبْدٍ لَـمْ يَرْزُقْهُ اللهُ مَالًا وَلَا عِلْمًا فَهُوَ يَقُوْلُ لَوْ أَنَّ لِيْ مَالًا لَعَمِلْتُ فِيْهِ بِعَمَلِ فُلَانٍ فَهُوَ بِنِيَّتِهٖ فَوِزْرُهُمَا سَوَاءٌ
অর্থ: নিশ্চয়ই দুনিয়া চার শ্রেণী লোকের জন্য। (১) এমন বান্দা, মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে ধন সম্পদ ও ইলিম উভয়টি দান করেছেন। তবে সে খরচ করতে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করে অর্থাৎ হালাল পন্থায় খরচ করে। হারাম পথে ব্যয় করে না। আত্মীয় স্বজনদের সাথে সদাচরণ করে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি-রেযামন্দি লাভের লক্ষ্যে মালের হক্ব আদায় করে। এই ব্যক্তির মর্যাদা সর্বোত্তম। (২) এমন বান্দা, মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে ইলিম দান করেছেন কিন্তু সম্পদ দান করেননি। তবে সে সত্য ও সঠিক নিয়তে বলে, যদি আমার ধন-সম্পদ থাকতো তাহলে আমি অমুক ব্যক্তির ন্যায় নেক পথে খরচ করতাম। এই দু’ব্যক্তির ছাওয়াব একই সমান। (৩) এমন বান্দা, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে ধন-সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু ইলিম দান করেননি। তার ইলিম না থাকার কারণে সে নিজের সম্পদের ব্যাপারে স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে সে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করে না। নাঊযুবিল্লাহ! আত্মীয়-স্বজনদের সাথে আর্থিক দিক দিয়ে সৎ ব্যবহার করে না এবং নিজ সম্পদ মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি-রেযামন্দির পথে ব্যয় করে না। এই ব্যক্তি হলো সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট। (৪) এমন বান্দা, যার কাছে মালও নেই ইলিমও নেই। সে আকাঙ্খা করে বলে, যদি আমার কাছে মাল থাকতো, তাহলে আমি তা অমুক ধনাঢ্য ব্যক্তি- যে পাপ পথে খরচ করে তার মত খরচ করতাম। নাউযুবিল্লাহ! এই বান্দাও তার নিকৃষ্ট নিয়তের কারণে গুনাহের মধ্যে তৃতীয় ব্যক্তির সমান। (তিরমিযী শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قَدْ أَفْلَحَ مَنْ أَسْلَمَ وَرُزِقَ كَفَافًا وَقَنَّعَهُ اللهُ بِـمَا اٰتَاهُ
অর্থ: বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সেই ব্যক্তিই সফলকাম হয়েছে যে, পবিত্র সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছে এবং প্রয়োজন মাফিক ধন-সম্পদ দেয়া হলো। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে যা দিয়েছেন তাতেই তাকে পরিতৃপ্ত থাকার তাওফীক্ব দিয়েছেন। (মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
اِتَّقِ الْمَحَارِمَ تَكُنْ أَعْبَدَ النَّاسِ وَاَرْضَ بِمَا قَسَمَ اللهُ لَكَ تَكُنْ أَغْنَى النَّاسِ وَأَحْسِنْ إِلٰى جَارِكَ تَكُنْ مُؤْمِنًا وَأَحِبَّ لِلنَّاسِ مَا تُـحِبُّ لِنَفْسِكَ تَكُنْ مُسْلِمًا وَلَا تُكْثِرِ الضَّحِكَ فَإِنَّ كَثْرَةَ الضَّحِكِ تُـمِيْتُ الْقَلْبُ.
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি যা হারাম করেছেন তা থেকে বেঁচে থাক, এতে তুমি সর্বোত্তম ইবাদতকারীরূপে গণ্য হবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমার ভাগ্যে যা নির্ধারণ করেছেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকো। এতে তুমি সর্বাপেক্ষা ধনবানরূপে বিবেচিত হবে। প্রতিবেশীর সাথে সদ্ব্যবহার করবে, এতে তুমি পূর্ণ মু’মিনরূপে অভিহিত হবে। নিজের জন্য যা পছন্দ করো মানুষের জন্য তাই পছন্দ করবে। এতে তুমি হাক্বীক্বী মুসলমান বলে গণ্য হবে। তুমি অধিক পরিমানে হাসবে না। কেননা অধিক হাসির কারণে দিল মুর্দা হয়ে যায়। (আহমদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৭)
-ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার- মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৮)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৯)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩০)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩১)