ورع (অরা’) উনার মাক্বাম এবং সেই মাক্বাম হাছিলের উপায় (২)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, খ্বালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يا عبدى اد ما افترضت عليك تكن من اعبد الناس وانته عما نهيتك عنه تكن من اورع الناس واقنع بما رزقتك تكن من اغنى الناس.
অর্থ: “হে আমার বান্দা! আমি তোমার জন্য যা ফরয করেছি তা যথাযথভাবে পালন করো তাহলে তুমি সকল মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ ইবাদতকারীরূপে গণ্য হবে। আমি যে বিষয়-বস্তু থেকে বিরত থাকতে বলেছি তা থেকে তুমি বিরত থাকো তাহলে সকল মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ পরযেহগাররূপে পরিগণিত হবে। তোমাকে যা রিযিক দিয়েছি তাতেই তুষ্ট থাকো তাহলে তুমি সকল মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা ধনী বলে বিবেচিত হবে।” (লুববুল লুবাব, তাফসীরে ইয়াশী-১/২১২)
পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফে আরো বর্ণিত আছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اما الوارع فانى استحى ان احاسبهم
অর্থ: “যারা পরহেযগার আমি উনাদের হিসাব গ্রহন করতে লজ্জাবোধ করি।” সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
الورع ملاك الدين
অর্থ: “অরাই হলো সম্মানিত দ্বীন উনার মূল।”
আফদ্বালুল আউলিয়া, ইমামে রব্বানী, হযরত মুজাদ্দিদে আলফেছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, পরহেযগারিতার দুটি দিক রয়েছে। (১) নিষিদ্ধ বিষয়- বস্তু হতে বিরত থাকা। (২) অধিক পরিমানে নেক আমল করা। তবে প্রথমটিই শ্রেষ্ঠ। যদিও সকলের জন্য তা সম্ভব নয়। অতএব নিষিদ্ধ বিষয়-বস্তু হতে বিরত থাকতে হলে কোন কামিল শায়েখ উনার নিকট বাইয়াত হয়ে, উনার নির্দেশিত অযীফা এবং সুন্নত উনার ইত্তিবা অর্থাৎ যিকির-ফিকির, রিয়াদ্বত-মাশাক্কাত করে, নিয়মিত উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে সাধ্য-সামর্থানুযায়ী উনার খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দেয়া, তাহলে শায়েখ উনার খাছ ফায়িয-তাওয়াজ্জুহ লাভ করতে পারবে। আর তখনই গোনাহের প্রতি বিকর্ষন পয়দা হবে। তখন হাক্বীক্বী ফরহেযগার, মুত্তাক্বী হবে। তখন অরা’ উনার মাক্বাম হাছিল হবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
والذين امنوا وعملوا الصالحات لندخلنهم فى الصالحين.
অর্থ: “যাঁরা ঈমান আনবে এবং আমলে ছালিহ (সম্মানিত সুন্নতের ইত্তিবা) করবেন, তাঁদেরকে অবশ্যই আমি ছালিহীন তথা ওলীআল্লাহগণ উনাদের অন্তর্ভুক্ত করবো।” (পবিত্র সূরা আনকাবুত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৯)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
والذين امنوا وعملوا الصالحات لنكفرن عنهم سياتهم ولنجزينهم احسن الذى كانوا يعملون.
অর্থ: “যারা ঈমান আনবে এবং আমলে ছালিহ (সম্মানিত সুন্নত উনার ইত্তিবা) করবে, আমি অবশ্যই অবশ্যই তাদের গুনাহগুলোকে মিটিয়ে দিবো। আর তাদের সেই আমলের উত্তম প্রতিদান দিবো। (পবিত্র সূরা আনকাবুত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ০৭)
অতীতে এমন অনেক হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম অতীত হয়েছেন যে, উনারা উনাদের পূর্বজীবনের গোনাহ-খাতা থেকে তওবার করার পর সেই গোনাহের পূনারাবৃত্তি করেননি। ফলে উনাদের পূর্বজীবনের সমস্ত গুনাহখাতা নেকীতে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি নেক আমলের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়, অবিচল, অটল।
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১০৭)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১০৯)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১১০)
মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১১১)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১১২)