মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, মাহবূব নূরে মজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ছবরকারীগণকে মুহব্বত করেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি একদিন সাইয়্যিদুনা হযরত দাঊদ আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওহী মুবারক করেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত দাঊদ আলাইহিস সালাম! আপনি আমার স্বভাব মুবারকে অনুকরণ করুন। আমার মুবারক স্বভাব সমূহের মধ্যে একটি স্বভাব মুবারক এই যে, আমি ছাবুর অর্থাৎ অত্যন্ত ধৈর্য্যশীল।
সাইয়্যিদুনা হযরত ঈসা রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি স্বীয় সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে বললেন, হে লোকসকল! যে পর্যন্ত তোমরা নিজেদের অকৃতকার্যতার উপর ছবর করতে না পারবে সে পর্যন্ত তোমরা কোন উদ্দেশ্যেই সফলকাম হতে পারবেনা। (কিমিয়ায়ে সায়াদাত-৪/৪১)
একদিন নূরে মজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কয়েকজনের উদ্দেশে ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনারা কি মুসলমান? উনারা নিবেদন করলেন, হঁ্যা, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা মুসলমান। তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, আপনারা যে মুসলমান তার প্রমাণ আছে কি? উনারা নিবেদন করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করি, বিপদ-আপদ আসলে ছবর করি এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ফয়সালা মুবারক উনার উপর সন্তুষ্ট থাকি। তা শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
مُؤْمِنُـوْنَ وَرَبُّ الْكَعْبَةُ
অর্থ: মহাসম্মানিত কা’বা শরীফ উনার যিনি রব তা’য়ালা উনার শপথ! অবশ্যই আপনারা সম্মানিত মুসলমান।
আমীরুল মু’মিনীন হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, দেহের সাথে মাথা যেমন সম্মানিত ঈমানের সাথে ছবর তেমন। (কিমিয়ায়ে সায়াদাত-৪/৪১)
একজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত অন্যের দেয়া দুঃখ-কষ্টে সম্মানিত ঈমানের সাথে ছবর করতে না পারবে ততদিন আমরা তাকে ঈমানদার মনে করিনা। আর এ কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খিতাব বা সম্বোধন করে ইরশাদ মুবারক করেন-
دَعْ أَذَاهُمْ وَتَـوَكَّلْ عَلَى اللهِ
অর্থ: আপনি তাদের (কাফির ও মুনাফিকদের) দেয়া দুঃখ-কষ্টের দিকে ভ্রম্নক্ষেপ করবেন না। আর আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার উপরই তাওয়াক্কুল মুবারক (ভরসা) করুন। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৮)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো বলেন-
وَاصْبِرْ عَلٰى مَا يَـقُوْلُوْنَ وَاهْجُرْهُمْ هَجْرًا جَمِيْلًا
অর্থ: হে আমার মহাসম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তারা (কাফির-মুনাফিকরা) যা কিছু বলে, আপনি তার উপর ছবর মুবারক (ধৈর্য্যধারণ) করুন। আর সদ্ভাবের সাথে তাদেরকে ত্যাগ করুন। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুয্যাম্মিল শরীফ: সম্মানিত পবিত্র আয়াত শরীফ ১০)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি আমার যে বান্দাকে রোগ-ব্যাধি দান করি, যদি সে তাতে ছবর বা ধৈর্য্যধারণ করতে পারে এবং লোক-সমাজে আমার প্রতি কোন অভিযোগ-অনুযোগ না করে, তাহলে আমি তাকে উক্ত রোগ-ব্যধি থেকে সুস্থ করলে পূর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট গোস্ত ও চামড়া দান করি। আর যদি তাকে পৃথিবী থেকে তুলে নেই, তাহলে আমার রহমত মুবারকের মধ্যে তাকে তুলে নেই। সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি একদিন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, “হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! আমি যার দৃষ্টি শক্তি ছিনিয়ে নেই তার বিনিময়ে আমি তাকে মহাপুরস্কারে পুরস্কৃত করি।” (কিমিয়ায়ে সাআদাত-৪/৫১)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৭)
-ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার- মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৮)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৯)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩০)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩১)