ছবর উনার মাক্বাম উনার ফযীলত-সম্মান-২
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো বলেন-
وَاصْبِرْ عَلٰى مَا يَـقُوْلُوْنَ وَاهْجُرْهُمْ هَجْرًا جَمِيْلًا
অর্থ: হে আমার মহাসম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তারা (কাফির-মুনাফিকরা) যা কিছু বলে, আপনি তার উপর ছবর মুবারক (ধৈর্য্যধারণ) করুন। আর সদ্ভাবের সাথে তাদেরকে ত্যাগ করুন। (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুয্যাম্মিল শরীফ: সম্মানিত পবিত্র আয়াত শরীফ ১০)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমার যে বান্দা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়, যদি সে তাতে ছবর বা ধৈর্য্যধারণ করতে পারে এবং লোক-সমাজে আমার প্রতি কোন অভিযোগ-অনুযোগ না করে, তাহলে আমি তাকে উক্ত রোগ-ব্যধি থেকে সুস্থ করলে পূর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট গোস্ত ও চামড়া দান করি। আর যদি তাকে পৃথিবী থেকে তুলে নেই, তাহলে আমার রহমত মুবারকের মধ্যে তাকে তুলে নেই। সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি একদিন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, “হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! যে ব্যক্তি দৃষ্টি শক্তি হারায়, তার বিনিময়ে আমি তাকে মহাপুরস্কারে পুরস্কৃত করি।” (কিমিয়ায়ে সাআদাত-৪/৫১)
সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত ফতেহ মুসেলী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আহলিয়া (স্ত্রী) তিনি একদিন পা মুবারক পিছলে পড়ে যান। এতে উনার একটি আঙ্গুল মুবারক ভেঙ্গে যায়। তিনি তাতে বিন্দুমাত্র ব্যথিত হলেন না। বরং আনন্দে হাসতে লাগলেন। এ অবস্থা দেখে সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত ফতেহ মুসেলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, তোমার আঙ্গুলে কি ব্যাথা হচ্ছে না? তিনি আনন্দচিত্তে জবাব দিলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত মুবারকে বিভোর আছি। তাই ব্যাথা-বেদনা কিছুই টের পাচ্ছি না। সুবহানাল্লাহ! (কিমিয়ায়ে সাআদাত-৪/৫২)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি হুসনে যন বা সুধারণা রাখার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে- রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে, মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি কোন অভিযোগ না করা। আর বিপদ-আপদে পতিত হলে ছবর বা ধৈর্যের সাথে তা গোপন রাখা।
বুযুর্গানে দ্বীন রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেছেন, কারো উপর বিপদ-আপদ নাযিল হলে যদি তার বাহ্যিক আকৃতি ও অবস্থা দেখে তাকে পাশ্ববর্তী লোকজন থেকে পার্থক্য করা না যায় অর্থাৎ বিপদ আপদে সে এমনভাবে ছবর করে যে, তার মুখমণ্ডলে কিংবা বাহ্যিকভাবে দুঃখ ও শোকের কোন ছায়াপাত না হয়, তাহলে তার সেই ছবরকে ‘ছবরে জামীল’ (সর্বাঙ্গ সুন্দর ছবর) বলা হয়।
ছাহিবে রসূলিল্লাহ হযরত আবূ তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আহলিয়া হযরত উম্মে সালিক রুমাইয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, আমার আহাল (স্বামী) কোন একদিন কাজ উপলক্ষে বাইরে গেলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার বিধানে আমাদের একজন ছেলে ইন্তিকাল করেন। আমি মরহুম ছেলের আপাদমস্তক চাদরে আবৃত করে রাখলাম।
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৭)
-ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার- মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৮)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৯)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩০)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩১)