কালের আবর্তে ছবি তুলে ও বেপর্দা হয়ে পবিত্র হজ্জ করা জায়িয নয়। তাছাড়া সৌদী ওহাবী ও ইহুদী বংশোদ্ভূত সরকার প্রতিবছর সম্মানিত হজ্জের তারিখ পরিবর্তন করে। যেন নির্দিষ্ট তারিখে হজ্জ করতে না পারে তার জন্য নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে। চাঁদ না দেখেই মাস গণনা করে থাকে। সেহেতু হক্কানী-রব্বানী আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বর্তমান প্রেক্ষাপটে জাহিরীভাবে পবিত্র হজ্জ আদায় করেন না। তবে বাতিনীভাবে সেই প্রতিবন্ধকতা থাকেনা বলে উনারা প্রতিবছর পবিত্র হজ্জ সম্পাদন করেন। সে বিষয়টি অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই।
সুলত্বানুল আউলিয়া, কাবীরুল আউলিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত শায়েখ জালালুদ্দীন রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার মনে একদিন একথা উদয় হলো যে, “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইজাজত মুবারক বা অনুমতি মুবারক পেলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফে গিয়ে প্রত্যেক পবিত্র জুমুয়া শরীফ উনার নামায আদায় করতাম।”
তিনি পরের রাতে স্বপ্ন দেখলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে বিশেষ সাক্ষাত মুবারক হলো। তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, জালাল! আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ আপনার নিকটেই রয়েছে। আমার সম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদ মাহমুদ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হচ্ছেন আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ। তিনিই হচ্ছেন আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদে নববী শরীফ। সুবহানাল্লাহ!
এই স্বপ্ন দেখার পর থেকে তিনি পবিত্র জুমুয়া শরীফ উনার নামায আওলাদে রসূল সাইয়্যিদ মাহমুদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্মানিত মাজার শরীফ নিকটস্থ মসজিদে নামায আদায় করা শুরু করলেন। পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পূর্ব পর্যন্ত সেখানেই পবিত্র জুমুয়া শরীফ উনার নামায আদায় করছিলেন। সুবহানাল্লাহ! পানিপথ শহরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে এই সম্মানিত মসজিদ অবস্থিত। (তাযকিরাতুল আউলিয়া-৪/২৫৯)
উল্লেখ্য যে, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা স্বপ্নেও যদি ফায়সালা পান তার উপরই সন্তুষ্ট থাকেন। সে ফায়সালা অনুযায়ী আমল করে থাকেন।
সাাইয়্যিদুল মুতাওয়াক্কিল, উলুল আযম মিন আউলিয়ায়িল্লাহ, আলিমুল জালিল সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল হাসান বুশঙ্গী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও “রিদ্বা বর কাযা” উনার মাক্বামে অত্যন্ত দৃঢ়পদ ছিলেন। একবার তিনি সূফীগণ উনাদের পোষাক পরে কোথাও যাচ্ছিলেন। হঠাৎ জনৈক তুর্কি ব্যক্তি এসে উনার পিছন দিক থেকে উনার ঘাড় মুবারকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে চলে গেলেন। অথচ সাইয়্যিদুল মুতাওয়াক্কিল সাইয়্যিদুনা হযরত বুশঙ্গী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি তাকে কিছুই বললেন না। এই দৃশ্য দেখে কিছু লোক উক্ত তুর্কি ব্যক্তিকে বললেন, উনি বিখ্যাত ওলীআল্লাহ। আমাদের সম্মানিত শায়েখ ও মুর্শিদ। তুমি উনার সাথে এরূপ বেয়াদবি করলে কেন? একথা শুনে লোকটি তার ভুল বুঝতে পারলো। সে উনার নিকট ফিরে গেল। আজিজী-ইনকেসারী (অনুনয়-বিনয়) করে উনার ক্বদম মুবারকে লুটিয়ে পড়লো। বার বার ক্ষমা প্রার্থনা করতে লাগলো। সাইয়্যিদুল মুতাওয়াক্কিল সাইয়্যিদুনা হযরত বুশঙ্গী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, যাও তুমি নিশ্চিন্ত থাক। কেননা এ কাজটি তোমার কাজ বলে আমি মনে করি না। যেখান থেকে এ কাজটি এসেছে, সেখানে কখনো কোন ভুল হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই। সুবহানাল্লাহ! (তাযকিরাতুল আওলিয়া ৩)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৭)
-ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার- মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৮)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১২৯)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছারল মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩০)
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে- (১৩১)