সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিস সালাম, সমস্ত জিন-ইনসান, সমস্ত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম, সমস্ত মাখলূক্বাতের নবী ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এক মহানতম বৈশিষ্ট্য হলো যে, তিনি পরিপূর্ণরূপে ছিলেন ওহীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। মূলত এ মহানতম শান সমস্ত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরও। এ মর্মে খালিক্ব, মালিক, রব আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা তিনি ইরশাদ করেন-
وما ارسلنا من قبلك من رسول الا نوحى اليه
অর্থ: “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার পূর্বে আমি যে রসূলই প্রেরণ করেছি, উনাকেই আমি ওহী করেছি।” (সূরা আম্বিয়া : আয়াত শরীফ ২৫)
তিনি আরো ইরশাদ করেন-
كذلك نوحى اليك والى الذين من قبلك الله العزيز العليم
অর্থ: এমনিভাবে পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় আল্লাহ পাক তিনি আপনার প্রতি ও আপনার পূর্ববর্তী নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি ওহী প্রেরণ করেন। (সূরা শূরা, আয়াত শরীফ-৫১)
অনুরূপ আরো আয়াত শরীফ রয়েছে যার মাধ্যমে সুস্পষ্টরূপে প্রতিভাত যে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই ওহীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিলেন।
আর যিনি নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাইয়্যিদ ও ইমাম, যিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, যিনি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্ষেত্রে তো বিষয়টি বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই উনার ওহী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়া বা থাকার বিষয়টিও একাধিক আয়াত শরীফ-এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
যেমন ইরশাদ হয়েছে-
وما ينطق عن الهوى ان هو الا وحى يوحى
অর্থ: “হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ওহী ব্যতীত নিজ থেকে কোন কথা বলেননি।” (সূরা নজম: আয়াত শরীফ ৩ ,৪)
আরো ইরশাদ হয়েছে-
فاوحى الى عبده ما اوحى
অর্থ: অতঃপর আল্লাহ পাক তিনি উনার প্রিয় হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যা ওহী করার তা করেছেন। (সূরা নজম: আয়াত শরীফ ১০)
আরো ইরশাদ হয়েছে-
قل انما يوحى الى
অর্থ: হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন যে, আমার প্রতি ওহী নাযিল হয়ে থাকে। (সূরা আম্বিয়া, আয়াত শরীফ: ১০৮)
এভাবে আরো অনেক আয়াত শরীফ-এর মাধ্যমে কুল-কায়িনাতকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিলেন পরিপূর্ণরূপে ওহী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অর্থাৎ তিনি যা কিছু বলতেন বা যা কিছু করতেন সবই ছিল ওহীর অন্তর্ভুক্ত। শুধু তাই নয় যিনি নবী ও রসূল, উনার সম্পূর্ণ যিন্দেগীর প্রতিটি মুহূর্তই ওহীর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। যে কারণে উনাদের ঘুমের মধ্যেও উনাদের প্রতি ওহী নাযিল হয়েছে এবং উনাদের স্বপ্নও ওহীর অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চলা-ফেরা, উঠা-বাস, খাওয়া-দাওয়া, নিদ্রা-জাগরণ, আলাপ-আলোচনা, ওয়ায-নছীহত, তা’লীম-তরবিয়ত, কাজ-কর্ম, এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসও ওহীর অন্তর্ভুক্ত।
অতএব, অনিবার্যভাবে এ আক্বীদা রাখতে হবে যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিসহ কোন নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের ব্যক্তিগত যিন্দেগী বলতে কোন যিন্দেগী ছিলো না। উনাদের পুরো যিন্দেগী মুবারকই ছিলো নুবুওওয়াতী ও রিসালতী যিন্দেগী মুবারক।
কাজেই, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যারা তাদের মতো বলছে, তাদের প্রতি কি ওহী নাযিল হয়? এবং তারা কি ওহী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত? কস্মিনকালেও নয়।
অতএব, আবারো প্রমাণিত হলো যে, তাদের উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণরূপে কুফরী এবং কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ।
আর তারা যদি তাদের প্রতি ওহী নাযিল হওয়ার দাবি করে বা স্বীকার করে তাহলে তারা আরেক কাদিয়ানী হিসেবে গণ্য হবে এবং এ কারণেও তারা কাট্টা কাফির ও চিরজাহান্নামী হিসেবে পরিগণিত হবে।
তাফসীরুল কুরআন ক্বমীছ বা কোর্তা মুবারকের বুযুর্গী
তাফসীরুল কুরআন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল
তাফসীরুল কুরআন ক্বমীছ বা কোর্তা মুবারকের বুযুর্গী
তাফসীরুল কুরআন: হিদায়েত আসার পরও অহংকারবশতঃ যারা হিদায়েত গ্রহণ করলনা তারা জাহান্নামী
তাফসীরুল কুরআন: হিদায়েত আসার পরও অহংকারবশতঃ যারা হিদায়েত গ্রহণ করলনা তারা জাহান্নামী