হযরত শায়খ সালাহুদ্দীন দরবেশ রহমতুল্লাহি আলাইহি
হযরত শায়খ সালাহুদ্দীন দরবেশ রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত শায়খ ছদরুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মুরীদ, খলীফা এবং উচ্চ মর্যাদা-মর্তবা সম্পন্ন বুযূর্গ ছিলেন। তিনি হযরত শায়খ নাসিরুদ্দীন চেরাগ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সম সাময়িক এবং তাঁর প্রতিবেশী ছিলেন। যে সমস্ত মাশায়িখ-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ সুলতান মুহম্মদ তুঘলকের তরফ থেকে নিদারুণ কষ্ট, লাঞ্ছনা পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে মীর সাইয়্যিদ নাসিরুদ্দীন চেরাগ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি একজন। তিনি (কেবলমাত্র) আপন শায়খ মাহবুবে ইলাহী হযরত নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ওছীয়তের কারণে সকল দুঃখ, কষ্ট, তাকলীফ বরদাশ্ত করে নিয়েছেন। কিন্তু শায়খ হযরত সালাহুদ্দীন দরবেশ রহমতুল্লাহি আলাইহি সুলতান বা বাদশাহ্র সাথে সকল সময় শক্ত ও কড়া ভাবে কথা বলতেন। তিনি মুলতান থেকে স্বীয় অবস্থান দিল্লীতে ঠিক করলেন এবং সেখানেই তাঁর বেছাল শরীফ হয়। হযরত নাসিরুদ্দীন চেরাগ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মাযার শরীফের পার্শ্বেই তাঁর পবিত্র মাযার শরীফ। প্রতি বৎসর ২২শে ছফর তাঁর ঈছালে ছওয়াব মাহ্ফিল অনুষ্ঠিত হয়। তাঁর একটি মশহুর মুনাজাত বর্ণিত রয়েছে, যেটাকে লোকজন মুনাজাতে ছালাহ্ বলে অভিহিত করে থাকেন। সেটার মধ্যে তাঁর মুনাজাতের কথা এভাবে বর্ণিত আছে, “আয় আল্লাহ্ পাক! আমার ঐ সময় এবং ঐ মুহূর্তটির কসম, যে সময় আপনি সালাহুদ্দীন দরবেশকে শ্বেত হস্তি বা সাদা হাতি বলে অভিহিত করেছেন। আয় আল্লাহ্ পাক! আমার ঐ সময়টির জন্য কসম, যে সময়টিতে আপনি আমাকে আমরুহার একটি জায়গায় একটি বৃদ্ধ গাছের নিচে বলেছেন, “আপনি (আল্লাহ্ পাক) স্বয়ং আমাকে সালাম জানাচ্ছেন।” এই ধরণের আরো বিবিধ বাক্য সম্বলিত কথা ঐ মুনাজাতে বর্ণিত আছে। (আমরুহা ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি জায়গার নাম।)
বর্ণিত রয়েছে, একদা কোন এক নওজোয়ান ঘোড়ার উপর সওয়ার হয়ে কোথাও যাচ্ছিলেন। ঘোড়াটি ছিল খুবই সুন্দর এবং তেজস্বী ও দ্রুত গতি সম্পন্ন। হঠাৎ সেই নওজোয়ান ঘোড়ার শরীরে কোড়া, চাবুক মারা শুরু করলো। যার দরুন ঘোড়ার সামনের মাথার দিকটায় জখমের চিহ্ন পরিস্ফুটিত হয়ে উঠলো; এবং এটা দেখে হযরত শায়খ সালাহুদ্দীন দরবেশ রহমতুল্লাহি আলাইহি নওজোয়ানের উপর ভীষণ অসন্তুষ্ট ও রাগান্বিত হলেন এবং তাঁকে ভীষণ কমজোর বললেন।
হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর রাগান্বিত হওয়া এবং নওজোয়ানের উপর অসন্তুষ্টি প্রকাশ হওয়ার দরুণ অবস্থা এই দাঁড়ালো যে, সে ঘোড়া থেকে পড়ে গেল। মানুষ দেখতে গেল ঘোড়ার শরীরে কোড়া মারার আঘাতের চিহ্ন হযরত শায়খ সালাহুদ্দীন দরবেশ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর পবিত্র জিস্ম (শরীর) মুবারকে অংকিত হয়ে আছে। (সুবহানাল্লাহ)
হযরত শায়খ বদরুদ্দীন ইসহাক
রহমতুল্লাহি আলাইহি
হযরত শায়খ বদরুদ্দীন ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত শায়খ আলী বিন ইসহাক দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ফরজন্দ এবং হযরত বাবা ফরিদুদ্দীন মাসউদ গন্জে শোকর রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর খাদিম, খলীফা এবং মেয়ের জামাতা ছিলেন। তিনি স্বীয় যামানায় বড় দরজার শায়খ ছিলেন। যুহ্দ, তাক্বওয়া, দারিদ্রতা এবং ইশ্কে ইলাহীতে নিজেই নিজের মেছাল ছিলেন। শৈশবেই তিনি দিল্লীতে ইল্ম হাছিল করেছেন। শিক্ষার্থী তুলাবাদের মধ্যে তাঁর উপস্থিতি, খোশ মেজাযী মশহুর হয়ে আছে। ইল্ম হাছিল করার পর (সাধারণতঃ) উলামায়ে হক্কানী-রব্বানীগণ যে বিষয় শিখে থাকেন তিনিও সেই সমস্ত শিক্ষা সমাপ্ত করলেন। অতঃপর বুখারার দিকে রুজু হলেন। বুখারা যেতে রাস্তায় পাকপাঠান শরীফ পড়ে। সেখানে হযরত বাবা ফরিদুদ্দীন মাসউদ গন্জে শোকর রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কামালত (বিলায়েতের) সংবাদ শ্রবণ করে তাঁর দীদার হাছিলের জন্য অন্তরে উৎসাহের ঝড় বইতে শুরু করলো। এরপর তিনি একজন লোক নির্ধারণ করলেন যে নাকি তাঁকে বাবা গনজে শোকর রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সাথে মুলাকাত করিয়ে দিবেন।
অতঃপর তিনি বাবা গন্জে শোকর রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সাথে সাক্ষাৎ করলেন তখন তাঁর স্বীয় (যাবতীয়) জাহিরী ইল্ম ফুনুন (পবিত্র) পা মুবারকের নিচে দাফন করে দিলেন। এবং তাঁর জামাল ও কামালিয়াতের সৌন্দর্য্যরে মধ্যে ফানা হয়ে গেলেন।
বিশ্ব সমাদৃত,হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার
বিশ্ব সমাদৃত,হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-৮১