আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত সংবাদ

সংখ্যা: ১১০তম সংখ্যা | বিভাগ:

          গত আগস্ট মাসে, দিনাজপুর জেলা ছাত্র আঞ্জুমানে আল বাইয়িনাত-এর সভাপতি, আরিফুল খবীর-এর বরাতে, দিনাজপুরে আওলাদুর রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর অনেক কারামতের মধ্যে একটি পত্রস্থ হয়। এটা পড়ে সারা দেশ থেকে, আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাত-এর অনেক প্রতিনিধি এরূপ অজস্র কারামতের সংবাদ প্রেরণ করেছেন।

এ সংখ্যায় পূনঃ পূনঃ অনুরোধের প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জ মাধবদী শাখার সভাপতি মাওলানা আব্দুল মজিদ সাহেবের বিবৃত কারামত ব্যক্ত করা হলো। তিনি এর প্রতক্ষ্যদর্শী ও স্বাক্ষী।

হবিগঞ্জ সংবাদ   

১৪২২ হিজরীর শা’বান মাসের শেষার্ধে দ্বীন প্রচারের জন্য ইমামুল আইম্মা, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয যামান, আওলাদুর রসূল হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী সিলেট বিভাগ ও বৃহত্তর মোমেনশাহী জেলা সফর করেন। তারমধ্যে একদিন হবিগঞ্জ নতুন পৌর ভবনের সামনের মাঠে ওয়াজ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। হযরত হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী এলজিইডি রেষ্ট হাউসে অবস্থান করে। বাদ আসর থেকে মাহফিলের কার্যক্রম শুরু হয়। গাউসুল আ’যম, দস্তগীর, সুলতানুল ওয়ায়েজীন হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী উনার মহা মূল্যবান নছীহত পেশ করার আগে সাধারণতঃ মুফতীয়্যূল আ’যম হযরতুল আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ ছাহেব ওয়াজ করে থাকেন। ঐ সফরের মাহফিল সমূহে হযরত হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী রাত ৮টা থেকে ৮.৩০মিঃ এর মধ্যেই মঞ্চে তাশরীফ রাখতেন। প্রতিদিনের মত হবিগঞ্জেও মুফতী আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ ছাহেব ওয়াজ করছিলেন। এমন সময় একটি অপরিচিত ছেলে একটি কালো পলিথিন ব্যাগে কি যেন নিয়ে এসে হবিগঞ্জের মাওলানা মুহম্মদ আব্দুল মজিদ ছাহেবকে দিয়ে বলল, হুযূরের জন্য নাস্তা আছে, ব্যাগটি রাখুন। কালো পলিথিন ব্যাগটি মাওলানা ছাহেবকে দিয়ে ছেলেটি দ্রুত চলে গেলো। সরল বিশ্বাসী মাওলানা ছাহেব ব্যাগটি মঞ্চের একপাশে সযতেœ রেখে দিলেন।

এদিকে সময় অতিক্রান্ত হয়েগেছে অনেক আগেই। কিন্তু হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী মাহফিলে তাশরীফ আনছেন না। শ্রোতাগণ সকলেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। ভাবছেন ব্যাপার কি? দেরী হচ্ছে কি কারণে? মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর কম্পিউটার অপারেটর ছূফী মুহম্মদ নূরুল ইসলাম ও মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর সহকারী প্রচার সম্পাদক ছূফী মুহম্মদ জয়নুল আবেদীন ছাহেবও মাঠের গেটে দাঁড়িয়ে রাস্তার দিকে বারবার তাকাচ্ছেন আর ঘড়ি দেখছেন। এমনি ভাবে এক ঘন্টারও বেশি সমর পার হয়ে যায়। তবুও হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আসছেন না।  এমন সময় ৭/৮ বছর বয়সের একটি ছোঁ ছেলে এসে মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর কম্পিউটার অপারেটর ছূফী মুহম্মদ নূরুল ইসলামকে বলে, ‘আপনাদের মঞ্চে একটি খারাপ জিনিস রাখা আছে সেটি সরিয়ে ফেলুন।’ ছূফী মুহম্মদ জয়নাল আবেদীন ও ছূফী মুহম্মদ নূরুল ইসলাম উনারা দু’জনেই প্রথমতঃ বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছিলেন না। বরং ছেলেটিকে হালকা ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু ছেলেটি বারবার একই কথা বলছে। তখন ছূফী মুহম্মদ নুরুল ইসলাম একরকম বিরক্ত হয়েই মঞ্চ চেক করার জন্য গেলেন। তখন রাত প্রায় ১০টা। হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তখনও আসেননি। মঞ্চের চার পার্শ্ব খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করলেন। মঞ্চের এক পাশে দেখতে পেলেন একটি কালো পলিথিন ব্যাগ। তিনি ব্যাগটিতে কি আছে পরীক্ষা করতে লাগলেন। মাওলানা আব্দুল মজিদ সাহেব তখন বললেন, একটি ছেলে এই ব্যাগটি আমার কাছে দিয়ে গেছে। এতে হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর জন্য নাকি নাস্তা আছে। ছূফী মুহম্মদ নূরুল ইসলাম ‘কি নাস্তা’ বলে ব্যাগ খুলে দেখতেই তার সন্দেহ ঘণীভূত হলো। ওজন প্রায় ৫/৬ কেজির মত হবে। লাল টেপ দিয়ে মোড়ানো একটি প্যাকেট। উনার বুঝতে আর বাঁকি থাকল না খারাপ জিনিসটি কি? দ্রুত ব্যাগটি মাঠের বাইরে রাস্তার ধারে একটি প্রাচীরের পাশে রেখে দিলেন। মাঠে সি আই ডি পুলিশ ছিল। তাকে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি তৎক্ষনাৎ পুলিশে খবর দেন। ব্যাগটি মঞ্চ থেকে সরানোর ৫ মিনিট পরই সুলতানুল নাছির হযরত হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী মাহফিলে তাশরীফ আনেন। গাউছূল আ’যম, দস্তগীর, কুতুবুল আলম, সুলতানুন নাছির হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তাশরীফ আনার অল্প কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে ব্যাগটি পরীক্ষা করার জন্য তা থানায় নিয়ে যায়।

মাহফিলের শেষের দিকে থানার ও.সি.সহ একদল পুলিশ মাহফিলের মাঠে এসে শেষ পর্যন্ত হযরত হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর নছীহত শ্রবণ করেন। মাহফিল শেষে থানার ও.সি এবং গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তাসহ পুলিশের দল হযরত হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর সাথে বিশেষভাবে সাক্ষাৎ করে খাছভাবে বাইয়াত হন। তারা বিশেষভাবে স্বীকার করেন যে, ব্যাগটিতে একটি শক্তিশালী টাইম বোমা ছিল যা মঞ্চসহ পুরো প্যান্ডেলে ধ্বংস লিলা চালাতে সক্ষম ছিল। টাইম বোমাটি বিস্ফোরিত হওয়ার কথা ছিল রাত ৮.৩০ মিনিটে। কিন্তু এটি আপনা-আপনি নিস্ক্রিয় হয়ে যায়।

আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ মাহফুজ। উনাদের কারামত সত্য। উনাদের উছীলায় মানুষের জান মালের হিফাজত হয়ে থাকে। গাউছূল আ’যম, দস্তগীর, গরীবে নেওয়াজ, লিসানুল উম্মত, সুলতানুন নাছীর হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী -এর এক বিশেষ কারামতে ওয়াজ শুনতে আসা মানুষের জান-মাল হিফাজত হলো। বোমাটি বিস্ফোরিত হয়নি। তাই পুলিশ কর্মকর্তাগণ আবেগে আপ্লুত হয়ে হুযূর ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহু আলী-এর নিকট বাইয়াত হন। তারা জোর দিয়ে বলেন, “হুযূর নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উনার মস্তবড় ওলী, অন্যথায় এরূপ একটি তাজা বোমা এমনিতে কখনোই নিস্ক্রিয় হতে পারেনা। হুযূরের উছীলাতেই বোমাটি বিস্ফোরিত হয়নি।” পুলিশ নিজ দায়িত্বে সারারাত রেষ্ট হাউসে ডিউটি দেয়। ঘটনাটি হবিগঞ্জ শহরে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ জনতার মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আলোড়ন সৃষ্টি করে।

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহ্ফিল সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহ্ফিল সংবাদ

আনজুমানে আল বাইয়্যিনাত ও মাহফিল সংবাদ