ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম

সংখ্যা: ১১৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

       (ধারাবাহিক)

এরপর বলা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি যদি এমন কোন স্থানে যায় যেখানে জনসমাগম সব সময় থাকে। মসজিদ, মাদ্রাসা, লঙ্গরখানা, খানকা শরীফ, মানুষের যেখানে বিশ্রামাগার অর্থাৎ যেমন বলা হয়েছে, রেল স্টেশন বা কোন গুদাম, গোডাউন এ ধরণের কোন ঘর যেখানে মাল-সামানা রেখে থাকে তার কি হুকুম?

সে প্রসঙ্গে আল্লাহ্ পাক কালাম পাকে ইরশাদ করেন,

ليس عليكم جناح ان تدخلوا بيوتا غير مسكونة فيها متاع لكم.

“তোমাদের কোন গুণাহ্ হবেনা ঐ সমস্ত ঘর-বাড়িতে প্রবেশ করতে, যে সমস্ত ঘর-বাড়িতে মাল-সামানা থেকে থাকে। গুদাম-গোডাউন অথবা যে সমস্ত জায়গায় মানুষ সব সময় চলাচল করে থাকে। এ সমস্ত ঘরে বা এ সমস্ত স্থানে প্রবেশ করার জন্য কারো কোন অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন নেই সাধারণভাবে। আর সেটা যদি কারো অধীনে থাকে সেখানে প্রবেশ করার জন্য অনুমতি নিতে হবে, সেটার আলাদা হুকুম। তবে স্বাভাবিকভাবে যেখানে মানুষ চলাচল করে অর্থাৎ এমন কোন স্থানে যেখানে মানুষের বসবাসের অর্থাৎ শোয়ার স্থান নেই, বিশ্রামের স্থান নেই- সাধারণ চলাচলের স্থান, মানুষ জমা হয়ে থাকে। এমন কোন স্থানে যদি কেউ আসে তাহলে তাকে সাধারণভাবে অনুমতি নিতে হবে না।

উপরোক্ত আয়াত শরীফের শানে নুযূল সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আফযালুন্ নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সেই পর্দার আয়াত শরীফ যখন নাযিল হলো যে, সালাম দিতে হবে এবং অনুমতি নিতে হবে, এরপর গৃহে প্রবেশ করতে হবে।

এ আয়াত শরীফ নাযিল হলে গেল, তখন আফযালুন্ নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুসহ আরো অনেকেই বলেছিলেন যে, আমরা অনেক স্থানে সফরে যেয়ে থাকি। সেই মক্কা শরীফে, মদীনা শরীফ থেকে ইয়ামেনে এবং সিরিয়া উভয় দিকেই হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ সফর করতেন ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য। আরজ করলেন, আফযালুন্ নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, “ইয়া রসূলাল্লাহ্, ইয়া হাবীবাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সেখানে আমরা মাল-সামানা নিয়ে যাই, মালের ঘর রয়েছে, গোডাউন রয়েছে, গুদাম রয়েছে, সেখানে মাল-সামানা রেখে থাকি, অনেক মানুষ রেখে থাকে। ঐ সমস্ত ঘরে প্রবেশ করতে হলে কি অনুমতি নিতে হবে?”          তখন আল্লাহ্ পাক আয়াত শরীফ নাযিল করলেন,

ليس عليكم جناح ان تدخلوا بيوتا غير مسكونة فيها متاع لكم والله يعلم ما تبدون وما تكتمون.

আল্লাহ্ পাক জানেন, তোমরা যেটা প্রকাশ করে থাক এবং যেটা চুপিয়ে রেখে থাক, আল্লাহ্ পাক সে সম্পর্কে জানেন। কাজেই ঐ সমস্ত ঘর-বাড়িতে প্রবেশ করতে সালাম দিয়ে অনুমতি নেয়ার দরকার নেই। আর তাতে গুণাহ্ও হবেনা।        কিন্তু যেখানে মানুষ অবস্থান করে থাকেন, বসবাস করে থাকেন সেখানে প্রবেশ করতে হলে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হবে। আর অনুমতির প্রথম হচ্ছে সালাম দেয়া। সালাম দিয়ে অনুমতি নিতে হবে এরপর সে প্রবেশ করবে।

সালামের কারণে মুহব্বতের সৃষ্টি হয়, ঈমানের মজবুতি আসে। আল্লাহ্ পাক কুরআন শরীফ নাযিল করেছেন। এর নুযূল খাছ হুকুম আম। প্রত্যেকটা আয়াত শরীফ একটা বিশেষ কারণে নাযিল করা হয়েছে কিন্তু তার হুকুমটা আম, ব্যাপক। অনেক বিষয় সংশ্লিষ্ট রয়েছে।         যেমন বলা হয়ে থাকে, আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন যে- দেখ, হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যিনি আফযালুন্ নাস বা’দাল আম্বিয়া, নবীদের পরে আল্লাহ্ পাক-এর যমীনে শ্রেষ্ঠ মানুষ উনার এই শ্রেষ্ঠত্ব শুধু এজন্যেই নয় যে, উনি বেশী নামায পড়ে থাকেন, রোযা করে থাকেন, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি আদায় করে থাকেন, শুধু এ জন্যেই নয়। এটাতো অবশ্যই উনার গুণ। উনি নামায-কালাম, যিকির-ফিকির অন্যান্য অবশ্যই বেশী করে থাকেন। এরপরও উনার মধ্যে দু’টা গুণ বেশী রয়েছে। এক নম্বর হচ্ছে ‘আল্লাহ্ পাক-এর প্রতি মুহব্বত।’ আর দুই নম্বর হচ্ছে ‘মাখলুকাতের প্রতি দয়া।’

যেটা হাদীস শরীফে এসেছে,

الخلق عيال الله احبكم الى الله احسنكم الى عياله.

“সমস্ত কায়েনাত, মাখলুকাত আল্লাহ্ পাক-এর পরিবার। আল্লাহ্ পাক-এর পরিবারের কাছে যে প্রিয় বা উত্তম সে আল্লাহ্ পাক-এর কাছে উত্তম বা প্রিয়।” (সুবহানাল্লাহ্) আফযালুন্ নাস বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন আল্লাহ্ পাক-এর মুহব্বত এবং মাখলুকাতের প্রতি দয়া-ইহ্সান করে। ঠিক এই সালামের দ্বারা যেমন অনুমতি নেয়া হয়, পর্দার জন্য সহায়ক, ঠিক তার সাথে ঈমান বৃদ্ধির এটা সহায়ক। এটা তার ঈমান বৃদ্ধিরও সহায়ক।       এরপর আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন যে, অনুমতি নিবে সালাম দিয়ে। প্রথমে সালাম দিবে এরপর অনুমতি নিবে। এর মধ্যে যেন ত্রুটি না হয়। আল্লাহ্ পাক স্পষ্ট  করে বলে দিয়েছেন।

এরপর আল্লাহ্ পাক বলেন, فاذا دخلتم بيوتا.

“যখন তোমরা কোন ঘরে প্রবেশ করবে,

فسلموا على انفسكم.

“এমনকি যখন নিজের ঘরে প্রবেশ করবে তখনও নিজ গৃহবাসীদেরকে সালাম দিয়ে প্রবেশ কর।” তাহলে কি হবে? একে তো সালাম দেয়া হলো, দ্বিতীয়তঃ অনুমতি নেয়া হলো, আর আল্লাহ্ পাক-এর আদেশ পালন করা হলো, সুন্নত পালন করা হলো, পর্দার সহায়ক হলো, গুণাহ্ থেকে বাঁচা গেলো। এরপর কি হবে?

تحية من عند الله مباركة طيبة.

‘এই সালাম দেয়ার কারণে কি হবে?’ “আল্লাহ্ পাক-এর তরফ থেকে তোমাদের প্রতি মুহব্বত, তোমাদের গৃহবাসীদের উপর বরকত, সাকীনা নাযিল হবে।” (সুবহানাল্লাহ্) অর্থাৎ আল্লাহ্ পাক-এর তরফ থেকে রহমত, বরকত, সাকীনা নাযিল হবে এই সালামের কারণে।

كذلك يبين الله لكم الايت لعلكم تعقلون.

এভাবে আল্লাহ্ পাক তাঁর আদেশ-নির্দেশ বর্ণনা করে থাকেন। আল্লাহ্ পাক বলেন, আশা করা যায়, তোমরা আক্বল খাটাবে অর্থাৎ ফিকির করবে, চিন্তা করবে।

এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

عن قتادة رضى الله تعالى عنه قال قال النبى صلى الله عليه وسلم اذا دخلتم بيونا فسلموا على اهله واذا خرجتم فاودعوا اهله بالسلام.

“আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন আয়াত শরীফের প্রেক্ষিতে যে, তোমরা যখন ঘরে প্রবেশ করবে, فسلموا على اهله. ঘরে যারা অধিবাসী রয়েছে প্রত্যেককে সালাম করে তোমরা প্রবেশ কর। সালাম করে প্রবেশ কর। আবার যখন বের হবে, واذا خرجتم فاودعوا اهله بالسلام. বের হওয়ার সময়ও অধিবাসীদেরকে সালাম দিয়ে বের হয়ো। যাওয়ার সময়, আসার সময় সালাম দিলে অবশ্যই রহমত, বরকত, সাকীনা নাযিল হয়। (অসমাপ্ত)

ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম

`ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম -১৯

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম -২০

    ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম – ২১

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ,  হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর  ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম – ২২