ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ,  হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর  ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম – ২২

সংখ্যা: ১১৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

আর কিছু লোক রয়েছে এমন, যারা কারো বাড়ীতে গেলে অনুমতি না পেলে গোস্বা করে এই বলে যে, ‘আমাকে অনুমতি দিল না কেন?’ অথচ এমনও হতে পারে যে, তার হয়তো কোন জরুরী কাজ রয়েছে।  অনেক ছাহাবা-ই-কিরাম, তাবিয়ীন, তাবে’ তাবিয়ীন, ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়া-ই-কিরাম; উনারা উনাদের জীবনে আফসুস করেছেন, কি আফসুস করেছেন? যে কুরআন শরীফের একটা আয়াত শরীফ আমার পক্ষে আমল করা সম্ভব হল না। জিজ্ঞাসা করা হলো, হুযূর! কোন আয়াত শরীফ আমল করা সম্ভব হলনা? উনারা বললেন, দেখ আল্লাহ্ পাক বলেছেন,

وان قيل لكم ارجعوا فارجعوا.

“(কারো বাড়ীতে গেলে) যদি তোমাদেরকে বলে, আপনারা চলে যান (এখন সাক্ষাৎ হবেনা, আল্লাহ্ পাক বলেন) তোমরা চলে যেও। ”

এ আয়াত শরীফের আমল আমি অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু আমার পক্ষে করা সম্ভব হয়নি। আমি যার বাড়ীতে গিয়েছি সে অনুমতি দিয়েছে, আমি প্রবেশ করেছি, কেউ একথা বলেনি আমাকে কখনও যে, আপনি আজকে চলে যান, অন্য সময় আসবেন। এ আয়াত শরীফের আমলটা আমার পক্ষে করা সম্ভব হয়নি। সেজন্য আমার একটা আফসুস রয়ে গেল।

কাজেই কেউ যদি কোন জরুরতে কাউকে ফিরিয়ে দেয় সেটা অসন্তুষ্ট হওয়ার কিছুই নেই। কারণ এটাই আল্লাহ্ পাক-এর নির্দেশ। মানুষের সুবিধা অসুবিধা রয়েছে, কাজের ব্যস্ততা রয়েছে। যদি কাউকে ফিরিয়ে দেয় তাহলে তার পক্ষে যদি সম্ভব হয় তাহলে যেন সময়টা বলে দেয় যে, এখন তো সম্ভব হচ্ছেনা, পরবর্তী সময় আপনি যোগাযোগ করুন বা অমুক সময় আসুন। এটা যেন বলে দেয়া হয়, সেটা আল্লাহ্ পাক-এর নির্দেশ, আল্লাহ্ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নির্দেশ। কাজেই এটা  হচ্ছে মানুষের পর্দার জন্য সহায়ক।

পর্দার যে সমস্ত আয়াত শরীফ নাযিল হয়েছে ‘সূরা আহযাব’ এবং ‘সুরা নূরের’ মধ্যে। এখন যে আয়াত শরীফ আলোচনা করা হলো তা তৃতীয় নম্বর আয়াত শরীফের সঙ্গে তার আনুষাঙ্গিক আয়াত শরীফ আলোচনা করা হলো। আল্লাহ্ পাক তাওফীক দান করলে আমরা আরো আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ্।

এর যেহেতু অনেক গুরুত্ব রয়েছে, তাৎপর্য রয়েছে। আর পর্দা করা ফরয করে দেয়া হয়েছে আল্লাহ্ পাক-এর তরফ থেকে, সেজন্য তার জরুরত আন্দাজ অর্থাৎ ফরয পরিমাণ ইল্ম অর্জন করা প্রত্যেকের জন্যই ফরয। সে ফরয পরিমাণ ইল্ম যাতে অর্জিত হয়, সেদিকে লক্ষ্য করে আমরা পর্যায়ক্রমে পর্দার হুকুম-আহ্কাম সম্পর্কে আলোচনা করছি।

আল্লাহ্ পাক এই পর্দা সম্পর্কে অনেক আয়াত শরীফ নাযিল করেছেন এবং আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক হাদীস শরীফে ইরশাদ করেছেন।

এর গুরুত্ব-তাৎপর্য, হুকুম-আহকাম সম্পর্কে আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন,

قل للمؤمنين يغضوا من ابصارهم ويحفظوا فروجهم ذلك ازكى لهم ان الله خبير بما يصنعون وقال للمؤمنت يغضضن من ابصارهن ويحفظن فروجهن ولايبدين زينتهن الا ماظهر منها وليضربن بخمرهن على جيوبهن ولايبدين زينتهن الا لبعولتهن او ابائهن او اباء بعولتهن او ابنائهن اوابناء بعولتهن اواخوانهن او بنى اخوانهن او بنى اخوتهن او نسائهن او ما ملكت ايمانهن او التبعين غير اولى الاربة من الرجال اوالطفل الذين لم يظهروا على عورت النساء ولايضربن بارجلهن ليعلم ما يخفين من زينتهن وتوبوا الى الله جميعا ايه المؤمنون لعلكم تفلحون.

আয়াত শরীফের মধ্যে আল্লাহ্ পাক অনেকগুলি হুকুম-আহকামের নির্দেশ করেছেন। এর পূর্বে আমরা এর পূর্ববর্তী আয়াত শরীফ সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এখানে আল্লাহ্ পাক পর্দার কিছু হুকুম-আহকাম, আদেশ-নিষেধ সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন। পূর্বে যে সমস্ত  আয়াত শরীফ আলোচনা করা হয়েছে সেটা পর্দা ফরয করা সম্পর্কে নাযিল করা হয়েছিল এবং তার আনুষঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছিল। এখানে পর্দার হুকুম আহ্কাম সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে।

আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন এর অর্থ হচ্ছে যে, আল্লাহ্ পাক বলেন, “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন,

قل للمؤمنين يغضوا من ابصارهم ويحفظوا فروجهم.

আপনি বলে দিন, হে মু’মিন-মুসলমানরা! যারা পূরুষ রয়েছ, يغضوا من ابصارهم. তোমাদের দৃষ্টিকে তোমরা অবনত রাখ। ويحفظوا فروجهم. তোমাদের লজ্বাস্থানকে হিফাযত কর। ذلك ازكى لهم. এটা তোমাদের জন্য পবিত্রতা। ان الله خبيرم بما يصنعون. নিশ্চয়ই তোমরা যা করে থাক সে সম্পর্কে আল্লাহ্ পাক খবর রাখেন।”

এরপর ইরশাদ করেন,

قل للمؤمنت يغضضن من ابصارهن.

এরপর আল্লাহ্ পাক যারা মু’মিন মুসলমান নারী রয়েছেন, মহিলা রয়েছেন তাদেরকে উল্লেখ করে বলেন, হে মহিলারা! তোমরা তোমাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখ। ويحفظن فروجهن. তোমাদের লজ্জাস্থানকে তোমরা হিফাযত কর।

ولايبدين زينتهن الا ما ظهر منها.

তোমরা তোমাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করনা, প্রকাশ করনা। তবে অবশ্য যেটা আপছে আপ বের হয়ে যায় সেটা ব্যতীত।

وليضربن بخمرهن على جيوبهن.

তোমরা অবশ্যই ওড়না বা আবরণ মাথার উপর থেকে সীনা পযর্ন্ত ঢেলে দিবে। وليضربن بضمرهن. তোমাদের ওড়না, পর্দা-আবরণ সেটা মাথা থেকে শুরু করে على جيوبهن. সীনা পর্যন্ত ঢেলে দিবে, ঢেকে দিবে।

এরপর আল্লাহ্ পাক বলছেন, ولايبدين زينتهن. ঐ সমস্ত লোক ব্যতীত কারো সামনে তোমরা তোমাদের কোন প্রকার সৌন্দর্য প্রকাশ করতে পারবেনা, করবেনা।            আল্লাহ্ পাক ‘সূরা নূরের’ মধ্যে এখানে বার প্রকার লোকের কথা বলেছেন, এর পূর্বে আল্লাহ্ পাক নাযিল করেছেন ‘সূরা আহযাব।’ যার আয়াত শরীফ সম্পর্কে আমরা আগেও আলোচনা করেছি। সেখানে আল্লাহ্ পাক সাত প্রকার লোকের কথা উল্লেখ করেছেন। যাদের সামনে মহিলাদের সৌন্দর্য যদি প্রকাশ পেয়ে যায় বা করে, সেটা জায়িয রয়েছে। তবে তারও একটা সীমারেখা রয়েছে।

এখানে বার প্রকার লোকের কথা বলা হয়েছে যে, তোমরা তাদের সামনে সৌন্দর্য প্রকাশ যদি কর তবে তাতে কোন অসুবিধা নেই। তবে ক্ষেত্র বিশেষে করার দরকার রয়েছে, আর ক্ষেত্র বিশেষে সর্তকতা অবলম্বন করলে সেটা উত্তম, আফযল হবে।

সেটা বলা হয়েছে, ولايبدين زينتهن الا لبعولتهن.

এক নম্বর হচ্ছে, তেমাদের স্বামীর সম্মুখে।

او ابائهن. দুই নম্বর হচ্ছে, তোমাদের পিতা।

او اباء بعولتهن. তিন নম্বর হচ্ছে, শ্বশুর (স্বামীর পিতা)।

او ابنائهن. চার নম্বর হচ্ছে, তোমাদের যারা ছেলে রয়েছে।

او ابناء بعولتهن. পাঁচ নম্বর হচ্ছে, তোমাদের স্বামীর যদি কোন ছেলে থেকে থাকে সে।

او اخوانهن. ছয় নম্বর হচ্ছে, তোমাদের ভাই অর্থাৎ আপন ভাই যারা রয়েছে।

او بنى اخوانهن. সাত নম্বর হচ্ছে, তোমাদের ভ্রাতুষ্পুত্র যারা রয়েছে, আপন ভাইয়ের যে ছেলে রয়েছে।

او بنى اخوتهن. আট নম্বর হচ্ছে, ভগ্নীপুত্র যারা রয়েছে। অর্থাৎ আপন ভগ্নীপুত্র তাদের কথা বলা হয়েছে।

او نسائهن. নয় নম্বর হচ্ছে, অন্যান্য যারা মহিলা রয়েছে, সঙ্গিনী-সাথী যারা রয়েছে তোমাদের।

او ما ملكت ايمانهن. দশ নম্বর হচ্ছে, তোমাদের যারা বাঁদী রয়েছে। এখানে যদিও বলা হয়েছে, তোমাদের হাতের অধিকারী যারা বাঁদী এবং দাসী। এর অর্থ হচ্ছে, যারা তোমাদের দাসী রয়েছে, বাঁদী রয়েছে তারা।

او التبعين غير اولى الاربة من الرجال.

এগার নম্বর হচ্ছে, এখানে বলা হয়েছে ঐ সমস্ত পুরুষ, যারা নির্বোধ, আলাবোলা, যাদের বিয়ে-শাদীর কোন চাহিদা নেই এবং সে সম্পর্কে কোন জ্ঞানও নেই, সমঝও নেই। আলাবোলা, নির্বোধ পুরুষ এবং মহিলার মাঝে কি পার্থক্য রয়েছে তারা সেটা বুঝেনা, এ ধরণের যদি পুরুষ হয়।

اوالطفل الذين لم يظهروا على عورت النساء.

বার নম্বর হচ্ছে, ঐ সমস্ত শিশু যারা পূরুষ এবং মহিলার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে বা ব্যবধান রয়েছে, সে সম্পর্কে জ্ঞান নেই বা আক্বল এখনো হয়নি, সমঝ হয়নি; এ সমস্ত অবুঝ শিশু যারা রয়েছে, তাদের কথা বলা হয়েছে।

এরপর আল্লাহ্ পাক উল্লেখ করেন,

ولايضربن بارجلهن ليعلم ما يخفين من زينتهن.

তোমরা এমনভাবে রাস্তা চলনা, তোমাদের পদাঘাতের কারণে, পায়ে হাঁটার কারণে তোমাদের সৌন্দর্য প্রকাশ হয়ে যায়, বের হয়ে যায়, গুপ্ত সৌন্দর্য সেটা প্রকাশ হয়ে যায়, এমনভাবে তোমরা হেঁটনা, আওয়াজ করে, হৈ-চৈ, থৈ-থৈ করে তোমরা হেঁটনা।

وتوبوا الى الله جميعا. তোমরা সকলেই আল্লাহ্ পাক-এর কাছে তওবা কর।

ايه المؤمنون لعلكم تفلحون. হে ঈমানদাররা! আশা করা যায়, তোমরা কামিয়াবী হাছিল করবে, অবশ্যই কামিয়াবী হাছিল করবে।

এখানে আল্লাহ্ পাক বলেছেন ‘সূরা নূরের’ মধ্যে বার প্রকার লোকের কথা। আর ‘সূরা আহযাবে’ আগেই বলেছি, আল্লাহ্ পাক সাতজন লোকের কথা উল্লেখ করেছেন।

সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে,

لاجناح عليهن فى ابائهن ولا ابنائهن ولا اخوانهن ولا ابناء اخوانهن ولا ابناء اخوتهن ولا نسائهن ولا ما ملكت ايمانهن واتقين الله ان الله كان على كال شئ شهيدا.

তাদের গুনাহ্ হবেনা, যদি গমন করে বা সৌন্দর্য প্রকাশ পায় পিতার নিকট, সন্তানের নিকট, ভাইয়ের নিকট, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে এবং ঐ সমস্ত মহিলা যারা তাদের সাথে চলাচল করে থাকে; আর ঐ সমস্ত বাঁদী যারা তাদের অধীন রয়েছে।

واتقين الله. তোমরা আল্লাহ্ পাককে ভয় কর, তাক্বওয়া অবলম্বন কর।

ان الله كان على كل شئ شهيدا.

নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক সব বিষয়ে দেখে থাকেন, অবগত রয়েছেন।”

এখানে মূল যে বিষয়টা বলা হয়েছে, পুরুষ এবং মহিলা তাদের পর্দা কতটুকু রক্ষা করবে? এ আয়াতসমূহের মধ্যে কয়েকটি বিষয় বিশেষ উল্লেখযোগ্য তারমধ্যে প্রথম হচ্ছে আল্লাহ্ পাক যেটা বলেছেন,

قل للمؤمنين يغضوا من ابصارهم.

قل للمؤمنت يغضضن من ابصارهن.

আপনি বলে দিন, যারা মু’মিন নর এবং নারী রয়েছে তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত করে বা রাখে। অর্থাৎ তাদের দৃষ্টিকে যেন তারা হিফাযত করে, এদিকে সেদিকে যেন তারা দৃষ্টি না করে।  এ প্রসঙ্গে ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে,

 عن جرير بن عبد الله رضى الله تعالى عنه قال سألت رسول الله صلى الله عليه وسلم ان نظر الفجائة فامرنى ان اصرف بصرى.

হযরত জারীর বিন আব্দুল্লাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, যখন এ সম্পর্কে বলা হলো তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ্, ইয়া হাবীবাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ان نظر الفجائة. যে দৃষ্টিটা নিজের অজান্তে, অনিচ্ছা সত্ত্বে, হঠাৎ কারো প্রতি যদি পড়ে যায় সেটা পুরুষের পক্ষ থেকেও পড়তে পারে অথবা মহিলার পক্ষ থেকেও পড়তে পারে; অনিচ্ছায়, হঠাৎ, আচানক যদি দৃষ্টি পড়ে যায় তাহলে সেটার কি হুকুম হবে? فامرنى. আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে নির্দেশ করলেন, আদেশ করলেন, ان اصرف بصرى. আমি যেন দৃষ্টিকে ফিরিয়ে নেই। অর্থাৎ যদি কারো দৃষ্টি পড়ে যায় হঠাৎ করে, অজান্তে, বেখেয়ালে তাহলে সে যেন সাথে সাথে তার দৃষ্টিটা ফিরিয়ে নেয়, সেটা আদেশ করা হয়েছে। ঠিক অনুরূপ আরেকটা হাদীস শরীফ উল্লেখ করা হয়েছে,

عن بريدة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لعلى رضى الله تعالى عنه يا على لاتتبع النظرة فان لك الاولى ليست لك الاخرة.

হযরত বুরাইদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন যে, একদিন আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে লক্ষ্য করে বললেন, “হে আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! দৃষ্টিকে অনুসরণ করনা। যদি কোথাও দৃষ্টি পড়ে যায়, শরীয়তের খিলাফ কোন স্থানে যদি তোমার দৃষ্টি পড়ে যায় সেটাকে অনুসরণ করনা। প্রথম দৃষ্টি ক্ষমা করে দেয়া হবে; কিন্তু পরবর্তী দৃষ্টি ক্ষমা করা হবেনা।”

এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়, মুহাদ্দিসীন-ই-কিরাম ও মুফাস্সিরীন-ই-কিরামগণ, ইমাম-মুজতাহিদ, যারা ফক্বীহ্ অনেক কিছু উল্লেখ করেছেন, সাধারণভাবে যদি কারো দৃষ্টি কারো উপর পড়ে যায়, যদি তার বদ খেয়াল না থাকে, সেটা জায়িয হবে অথবা হবে না? আর যদি কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কেউ দৃষ্টি করে তাহলে সেটাই বা কতটুকু শরীয়তের হুকুম? এখানে যদিও কেউ কেউ বলেছেন, কোন খারাপ উদ্দেশ্য ব্যতীত যদি কেউ দৃষ্টি করে সে হোক পুরুষ বা মহিলা সেটা তার জন্য মাকরূহ্।

আর উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে কেউ যদি দৃষ্টি করে সেটা হারাম। কিন্তু মূল সর্বসম্মত মত যেটা সেটা হচ্ছে, উদ্দেশ্য ভাল থাকুক অথবা খারাপ থাকুক, ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অর্থাৎ যদি সে একাধিক দৃষ্টি করে তাহলে অবশ্যই সেটা হারাম হবে। এবং যদি উঁকি-ঝুঁকিও কেউ দেয় ইচ্ছাকৃত সেটাও তার হারাম, কবীরাহ্ গুনাহ্র অন্তর্ভুক্ত হবে।          আর যদি এমন অবস্থা হয় কারো রোগ হয়েছে, রোগিনী হয়েছে, এখন ডাক্তার দেখাতে হবে, সে বিষয়ে যদি কোন মহিলা ডাক্তার না থাকে তাহলে এক হুকুম আর যদি মহিলা ডাক্তার পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই তাকে মহিলা ডাক্তার দেখাতে হবে। সেখানে পুরুষ ডাক্তার দেখালে তার কবীরাহ্ গুনাহ্ হবে।

আর যদি কোন মহিলা ডাক্তার না পাওয়া যায় সে বিষয়ে, তাহলে সে পুরুষ ডাক্তার দেখাতে পারবে। তবে শর্ত হচ্ছে, যে স্থানটা তার অসুস্থ হয়েছে বা যেখানে তার রোগ-বিমার হয়েছে শুধু সে স্থানটা সে দেখাতে পারবে। তার চেয়ে বেশীও নয়, কমও নয়। এবং ডাক্তারের জন্য সেটা জায়িয হবেনা তার অতিরিক্ত দেখা। সেটা দেখলে তার জন্য কবীরাহ্ গুনাহ্ হবে।

আর এরপর ডাক্তারেরও মাসয়ালা রয়েছে, সে যদি দৃষ্টি করে রোগিনীকে দেখার জন্য, সে যেন কোন খারাপ উদ্দেশ্যে দৃষ্টি না করে। যদি সে কোন খারাপ উদ্দেশ্যে দৃষ্টি করে সেটাও তার গুনাহ্র কারণ হয়ে যাবে। তাকেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ তার প্রতিটি দৃষ্টি তার নিয়ত অনুযায়ী ফায়সালা করা হবে। ডাক্তারের যে ব্যাপারটা রয়েছে সেটা যতটুকু দেখা দরকার ও যত সময় দরকার ঠিক ততটুকু দেখবে ও প্রয়োজন মাফিক সময় সে ব্যয় করবে। এর চাইতে বেশী নয়।         আর যদিও ফতওয়া দেয়া হয়ে থাকে যে, মেয়েদের জন্য জরুরী পড়ালেখা ব্যতীত অন্য কোন পড়ালেখা করাই অর্থাৎ অন্যান্য যা রয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং, ওকালতি ইত্যাদি অন্যান্য যে বিষয়গুলি রয়েছে তা প্রয়োজন নেই। একমাত্র ডাক্তারী ব্যতীত সেগুলি পড়া সম্পূর্ণই নিষিদ্ধ। যেহেতু সেখানে পর্দার খিলাফ হবে। শরীয়তসম্মত কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, ইজমা, ক্বিয়াসসম্মত ইল্ম তারা অর্জন করবে। তাদের সংসার সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য। আর দুনিয়াবী যতটুকু শিক্ষা করা দরকার সেটা গ্রহণ করবে পর্দার সহিত। তবে ডাক্তার হওয়ার জন্য যদিও বলা হয়েছে, ডাক্তারী পড়া মেয়েদের জন্য জায়িয রয়েছে। তবে যারা মুত্তাক্বী, পরহেযগার তাদের জন্য নয়। যারা আম, সাধারণ রয়েছে তাদের জন্য। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই আলাদা আলাদা ফতওয়া দেয়া হয়েছে। অবস্থা বিশেষে সে ফতওয়া গ্রহণযোগ্য ও কার্যকরী হবে।

ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম

`ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম -১৯

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম -২০

    ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম – ২১