ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম -২০

সংখ্যা: ১১৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

(ধারাবাহিক)

হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

وقد قال لى رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا استأذن احدكم ثلثا فلم يؤذن له فليرجع.

হযরত আবু মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, ‘হে হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি তো আমাকে জিজ্ঞাসা করতেছেন, আমি কেন আসলাম না। আমি তো এসেছিলাম, শুধু এসেছিলাম তাই নয়? এসে আপনার দরজায় দাঁড়িয়ে আমি তিনবার সালামও দিয়েছিলাম। আপনার বাড়ী থেকে আমি কোন জবাব পাইনি সেজন্য আমি চলে গিয়েছি।’ এরপরেও হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, ‘তাহলে তারপরেও তুমি কেন প্রবেশ করলেনা?’ আমিতো আসতে বলেছিলাম। উনি বললেন, ‘হে হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কি বলেছেন?

وقد قال لى رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا استأذن احدكم ثلثا فلم يؤذن له فليرجع.

“তোমাদের কেউ যদি কারো বাড়ীতে গিয়ে তিনবার অনুমতি প্রার্থনা করে আর তিনবার অনুমতি প্রার্থনা করার পরও যদি অনুমতি না পায় সে যেন ফিরে আসে।” আমি সে জন্য ফিরে এসেছি। সেটা শুনে হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, اقم عليه البينة. তুমি দলীল  পেশ  করো? তুমি যে বললে, হাদীস শরীফে রয়েছে আল্লাহ্ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন। হযরত আবু মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন- ‘হ্যাঁ, আমার দলীল রয়েছে।’ তিনি বললেন, ‘তাহলে দলীল পেশ কর।’ হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, ‘আমি তার সাক্ষী ছিলাম, যখন আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ হাদীস শরীফ ইরশাদ করেন আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। সেটাই হযরত আবু মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জানতেন, উনি সেটা শুনে হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কাছে এসে বললেন যে, হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু দলীল তলব করেছেন, এখন আপনাকে সাক্ষী দিতে হবে। সেটা শুনে হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কাছে গেলেন এবং সাক্ষী দিলেন যে- হ্যাঁ, আমি এটা শুনেছি, আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোন ব্যক্তি যদি কারো বাড়ীতে যায়, গিয়ে তিনবার সালাম দিয়ে অনুমতি প্রার্থনা করবে, এরপরও যদি অনুমতি সে না পায় তাহলে সে যেন চলে আসে। এটাই তার জন্য উত্তম। আল্লাহ্ পাক কুরআন শরীফে উল্লেখ করেছেন,

وان قيل لكم ارجعوا فارجعوا هو اوكى لكم

“যদি তোমাদের বলা হয়, ফিরে যাও তাহলে তোমরা ফিরে যেও। এটাই তোমাদের জন্য পবিত্রতা।” অর্থাৎ আল্লাহ্ পাক বলে দিয়েছেন অনুমতি না পেলে তো প্রবেশ করবেই না।

فان لم تجدوا فيها احدا فلا تدخلوها حتى يؤذن لكم.

“যদি কাউকে না পাও, তোমার সালামের জবাব কেউ না দেয়, অনুমতি যদি কেউ না দেয় তাহলে সে ঘরে প্রবেশ করনা, ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ তুমি অনুমতি না পাবে, আল্লাহ্ পাক এই অনুমতির কথাটা আবারও উল্লেখ করেছেন যে, অনুমতি ব্যতীত ঘরে প্রবেশ করবেনা এবং এরপর বলেছেন, যদি তারা থাকা সত্ত্বেও বলে যে, তোমরা ফিরে যাও, তাহলে ফিরে চলে যাবে।”

সেটাই হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বলা হলো। উনি দলীল তলব করলেন। এর অর্থ এটা নয় যে, হযরত আবু মুসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সঠিক হাদীস শরীফ বলেননি বরং উনি সঠিক হাদীস শরীফই বলেছেন তবে হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আর একজন সাক্ষী তলব করলেন, এই হেতু মুহাদ্দিসীন-ই-কিরামগণ বলেন, যাতে পরবর্তীতে কোন লোক আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে কোন ঝুটা-মিথ্যা কথা না বলতে পারে, সেজন্য তিনি দলীল তলব করলেন।

কাজেই অনুমতি নিয়েই প্রবেশ করতে হবে। বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করা যাবেনা। এখানে আল্লাহ্ পাক স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, ‘যদি বলেন তোমরা ফিরে যাও তাহলে ফিরে যেতে হবে।’

আর একটা হাদীস শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে,

عن عطاء بن يسار رضى الله تعالى عنه ان رجلا سأل رسول الله صلى الله عليه وسلم.

হযরত আতা ইবনে ইয়াসার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, এক লোক এসে রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলো, ‘ইয়া রসুলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! استأذن على امى আমি কি আমার মা’র নিকট অনুমতি প্রার্থনা করব ঘরে প্রবেশ করার সময়? আমি কি আমার মা’র নিকট অনুমতি প্রার্থনা করব ঘরে প্রবেশ করার সময়?’

قال النبى صلى الله عليه وسلم نعم.

তিনি বললেন- ‘হ্যাঁ, তোমার মা’র ঘরে প্রবেশ করতেও তুমি অনুমতি নিও।’ فقال الرجل انى معها فى البيت. সে বললো, আমি উনার সাথে থাকি ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! انى معها فى البيت আমি উনার সঙ্গে একই ঘরে বসবাস করি এরপরও কি অনুমতি নিব?’

আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন যে- ‘হ্যাঁ, এরপরও তুমি অনুমতি নিবে। استأذن عليها তার থেকে অনুমতি নিও।’

فقال الرجل يا رسول الله صلى الله عليه وسلم انا خادمها.

সে লোকটি বললো, ‘আমি তো উনার খাদিম, আমার মা’র খাদিম, এরপরও কি আমি অনুমতি নিব?’

فقال النبى صلى الله عليه وسلم استأذن عليها.

অতঃপর তিনি বললেন- ‘হ্যাঁ, এরপরও তুমি অনুমতি নিও।’ যখন সে ব্যক্তি বারবার বলতে লাগল ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আমি তো আমার মা’র সঙ্গে একই ঘরে থাকি, আমি তো উনার খাদিম উনাকে দেখাশুনা করে থাকি ইত্যাদি ইত্যাদি; এরপরও কি অনুমতি নিব?

আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন যে, ‘হ্যাঁ। তখন আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,

اتحب ان تراها عريانة قال لا فقال فاستاذن عليها اتحب ان تراها عريانة.

“তুমি কি পছন্দ কর তোমার মা’কে তুমি বস্ত্রহীন অবস্থায় দেখবে?’ قال لا সে ব্যক্তি বলল যে, ইয়া রসূলাল্লাহ্, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ‘আমি তো সেটা পছন্দ করিনা।’

فقال فاستاذن عليها. ‘তাহলে অনুমতি নিয়েই ঘরে প্রবেশ করবে। সালাম দিবে, অনুমতি নিবে, এরপর প্রবেশ করবে। (অসমাপ্ত)

ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন  শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম

`ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম -১৯

    ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ, হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম – ২১

ইমামুল আ’ইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদুয্ যামান, সুলতানুল ওয়ায়েজীন, গাউসুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আফযালুল আউলিয়া, সুলতানুন্ নাছির, গরীবে নেওয়াজ,  হাবীবুল্লাহ্, আওলার্দু রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর  ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম – ২২