পূর্ব প্রকাশিতের পর
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
يَاۤ أَيُّـهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا كُلُوْا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْـنَاكُمْ وَاشْكُرُوْا لِلّٰهِ
হে ঈমানদারগণ! তোমরা হালাল খাদ্য থেকে খাও এবং মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব উনার শোকরগুযার করো।
إِنْ كُنْـتُمْ إِيَّاهُ تَـعْبُدُوْنَ
তুমি যদি মহান আল্লাহ পাক যিনি খ¦লিক যিনি মালিক যিনি রব উনার ইবাদত করেই থাকো, যদি বান্দা হয়েই থাকো তাহলে উনার শুকরিয়া আদায় করো। শোকরগুযার বান্দা হওয়ার জন্য কোশেশ করো।
এজন্য মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে এর ব্যাখ্যায়-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيْقِ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ جَسَدٌ غُذِيَ بِحَرَامٍ
আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ جَسَدٌ غُذِيَ بِحَرَامٍ
ঐ শরীর জান্নাতে প্রবেশ করবে না যেটা হারাম দিয়ে তৈরী হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! এটা প্রতিক্ষেত্রে শর্ত হালাল টাকা-পয়সা হওয়াটা। হারাম টাকা-পয়সা দিয়ে যদি করে তাহলে তার হজ্জ কবুল হবে না, আদায় হবে না। করা এবং না করা একই হয়ে গেলো। বরং হারামের জন্য আলাদাভাবে সে গুনাহগার হবে। আলাদাভাবে সে গুনাহগার হবে। সেজন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনার অনেক জায়গায় এই হালালের জন্য যথেষ্ট তাকীদ করেছেন। যাতে কোন অবস্থাতেই মানুষ হারামে লিপ্ত না হয়। মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেছেন-
كُلُوْا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْـنَاكُمْ
মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, আমি তোমাদেরকে যে হালাল খাদ্য দিয়েছি, সেখান থেকে খাও। সে বিষয় তোমরা সীমালঙ্ঘন করো না। সীমালঙ্ঘন করলে কি হবে? নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
وَلَا تَطْغَوْا فِيْهِ
এ বিষয় সীমালঙ্ঘন করোনা, মহান আল্লাহ পাক তিনি নিষেধ করে দিয়েছেন।
এজন্য উনার ব্যাখ্যায় পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنِ اشْتَـرَى ثَـوْبًا بِعَشَرَةِ دَرَاهِمَ وَفِيْهِ دِرْهَمٌ حَرَامٌ لَمْ يَقْبَلِ اللهُ لَهٗ صَلَاةً مَا دَامَ عَلَيْهِ
হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, কেউ একটা কাপড় কিনলো দশ দিরহাম দিয়ে। তার মধ্যে এক দিরহাম যদি হারাম হয়,
لَمْ يَقْبَلِ اللهُ لَهٗ صَلَاةً مَا دَامَ عَلَيْهِ
ঐ কাপড়টা পরে সে যতক্ষণ নামায পড়বে ততক্ষণ কিন্তু তার কোন নামায মহান আল্লাহ পাক তিনি কবুল করবেন না। তার কোন ইবাদত-বন্দেগী সেটা পরে করলে আদায় হবে না। এখানে স্পষ্ট করে বিষয়টা বলে দেয়া হয়েছে। কাজেই হালাল এবং হারামের বিষয়টা খুব ফিকিরের বিষয়। যারা হজ্জ করবে এদের টাকা পয়সাগুলো হালাল কি না, সেটা আগে দেখতে হবে। এখন কিন্তু বিষয়টা খুব কঠিন হয়েছে। যারা হজ্জ করতে যাচ্ছে, এদের টাকা পয়সা যদি হালাল না হয় তাহলে হারামে তাদের ক্ষতি হওয়াটা স্বাভাবিক। মহান আল্লাহ পাক তিনি যেটা বলেছেন-
وَالَّذِيْ خَبُثَ لَا يَخْرُجُ إِلَّا نَكِدًا
অর্থাৎ হারাম থেকে হারাম ছাড়া কিছু বের হয় না। হারাম থেকে হারাম ছাড়া কিছু বের হয় না, এটা মনে রাখতে হবে। এখানে যার পয়সার মধ্যে হারাম তার সমস্ত আমলগুলো বরবাদ হবে। আর সেই হজ্জ করে আসার কারণে সে লা’নতগ্রস্ত হবে। এখন যেটা আমরা অনেকবার বলেছি অনেক লোক হজ্জ করতে যায়। এখন কার হজ্জ কবুল হলো অথবা হলো না সে বিষয়টার জন্য। আভ্যন্তরিন বিষয় সকলের জন্য বুঝা সম্ভব না, তবে বাহ্যিক যে বিষয় বুঝার সেটা হচ্ছে, কেউ হজ্জ করে আসার পর যদি তার আমলটা শুদ্ধ হয়ে যায় আস্তে আস্তে সে আমলটা ভালো করতে থাকে, সে পরহেযগার হতে থাকে তাহলে বুঝা যাবে, তার হজ্জ কবুল হয়েছে। আর যদি তার আমলটা আবার খারাপ হয়ে যায় আস্তে আস্তে তাহলে বুঝতে হবে এই লোকটার হজ্জ কবুল হয়নি। এর মধ্যে কোন সমস্যা রয়েছে তার। টাকা পয়সাতে হোক বা অন্যান্য আমলের দ্বারা সে হারাম কাজে সংশ্লিষ্ট ছিলো যার জন্য তার হজ্জ কবুল হয়নি। এই জন্য তার আমলটা আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! কাজেই এ বিষয়টা ফিকির করতে হবে। এখন আমভাবে হচ্ছে, পুরুষ হোক মহিলা হোক সকলের জন্য হালাল টাকা পয়সা দিয়ে হজ্জ করতে হবে। হারাম টাকা পয়সা দ্বারা হজ্জ করলে, হজ্জ আদায় হবে না। এরপর যেটা বলা হয়েছে, এখন পয়সাতো হালাল হতে হবে এটা শর্ত, পুরুষ হোক মহিলা হোক। পয়সাতো পুরুষরা কামাই করে থাকে। অথবা কোন মহিলার যদি অনেক টাকা পয়সা থাকে নানান মাধ্যমে সেটাও হালাল হতে হবে। এরপর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে যা বলা হয়েছে তা হলো-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِيْ أُمَامَةَ رَضِيَ اللهُ تَـعَالٰى عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ لَمْ يَـمْـنَـعْهُ مِنَ الْحَجِّ حَاجَةٌ ظَاهِرَةٌ، سُلْطَانٌ جَائِرٌ، مَرَضٌ حَابِسٌ
হযরত আবূ উমামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি এখানে তিনটা বিষয় উল্লেখ করেছেন। যেটা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦তামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, যে তিনটা বিষয় মানুষকে হজ্জে বাধা দিয়ে থাকে। সেটা যদি না থাকে তাহলে তাকে হজ্জ করতেই হবে। এক নম্বর হচ্ছে,
حَاجَةٌ ظَاهِرَةٌ
বাহ্যিক কোন বাধা।
سُلْطَانٌ جَائِرٌ
জালিম বাদশা
مَرَضٌ حَابِسٌ
কঠিন অসুস্থতা। কঠিন অসুস্থতা। এখন যদি কেউ অসুস্থ না হয় তাহলে তাকে হজ্জ করতে হবে। (অসমাপ্ত)
ওয়াজ শরীফ কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ্ শরীফের আলোকে- পর্দার গুরুত্ব-তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও হুকুম-আহ্কাম