তাফসীরুল কুরআন: আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং নায়েবে  নবী, ওয়ারাছাতুল আম্বিয়াগণকে সাধারণ মানুষের মত আহবান করা নিষেধ

সংখ্যা: ১০৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

 -হাফিযে হাদীস, হযরতুল আল্লামা, মুফতী, মাওলানা মুহম্মদ ফযলুল হক

لاتجعلوا دعاء الرسول بينكم كدعاء بعضكم بعضا قد يعلم الله الذين يتسللون منكم لواذا فليحذر الذين يخالفون عن امره ان تصيبهم فتنة اويصيبهم عذاب اليم.

তরজমাঃ তোমরা পরস্পর পরস্পরকে যেরূপ আহবান করে থাক, ডেকে থাক, রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুরূপভাবে আহবান করনা। যারা (রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দরবার শরীফ থেকে অনুমতি ব্যতীত) চুপিসারে বের হয়ে যায় তাদের সম্পর্কে আল্লাহ্ পাক অবগত রয়েছেন। কাজেই যারা রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদেশের খিলাফ করে তারা যেন সতর্কতা অবলম্বন করে যে, ফিৎনা ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে স্পর্শ করবে।” (সূরা নূর/৬৩) তাফসীরঃ আলোচ্য আয়াতে কারীমায় বিশেষভাবে নিম্নোক্ত বিষয়াবলী আলোকপাত করা হয়েছে। যেমন,  (১) রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আহবানকে নিজেদের আহবানের মত মনে করনা।           (২) রসূলে খোদা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মত শব্দাবলী দ্বারা ডেকোনা বা সম্বোধন করনা।

            প্রথমতঃ সাইয়্যিদুল আম্বিয়া, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিজেদের মত সাধারণ মানুষ মনে করে তাঁর আহবানকে নিজেদের আহবানের মত মনে করনা। অর্থাৎ আল্লাহ্ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদেশ, নিষেধকে নিজেদের সাধারণ মানুষের আদেশ-নিষেধের মত মনে করোনা। এটা এমন যে, কোন সাধারণ লোক যদি অন্য কাউকে ডাকে বা কোন আদেশ-নিষেধ করে তাহলে উভয়েই সাধারণ লোক হওয়ার কারণে ডাকে সাড়া দেয়ার ব্যাপারে ইখতিয়ার রয়েছে। কিন্তু আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব, সরওয়ারে কায়িনাত, ফখরে মওজুদাত, সরদারে দোজাহাঁ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি কাউকে ডাকেন বা কোন আদেশ-নিষেধ করেন তাহলে তার জন্য তৎক্ষনাৎ তাতে সাড়া দেয়া ফরয-ওয়াজিব হয়ে যায়। এক্ষেত্রে বিন্দু থেকে বিন্দুতমও কারো পক্ষে বিলম্ব করা জায়িয হবেনা; এবং ডাকে সাড়া দেয়া বা না দেয়ার কোন ইখতিয়ার থাকবে না। কারণ রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আহ্বান বা আদেশ-নিষেধ প্রকারান্তরে আল্লাহ্ পাক-এরই আহ্বান বা আদেশ-নিষেধের নামান্তর।

কারণ হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,

     انى اوتيت القران ومثله معه.

অর্থঃ- “নিশ্চয়ই আমি কুরআন শরীফ ও এর অনুরূপ হাদীস শরীফসহ প্রেরিত হয়েছি।” অর্থাৎ রসূলে আক্বদাস ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদেশ-নিষেধকে নিজেদের বা পরস্পরের আদেশ-নিষেধের মত মনে করা যাবেনা বরং ফরয-ওয়াজিব মনে করে, গুরুত্ব দিয়ে সে অনুযায়ী আমল করতে হবে।   এ সম্পর্কে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, একবার ইমামুল আইম্মা হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি ফতওয়া দিলেন যে, রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আহবান, আদেশ-নিষেধ  বা সুন্নতগুলো পালন করা ফরয।” এতদ্বশ্রবণে সমসাময়িক ইমাম-মুজতাহিদগণ তাঁকে এ কথার দলীল জিজ্ঞাসা করলেন। উত্তরে তিনি বললেন যে, “এর দলীল কালামুল্লাহ্ শরীফের ঐ আয়াত শরীফ যা আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন,

وما اتكم الرسو فخذوه وما نهكم عنه فانتهوا.

অর্থঃ- “রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা নিয়ে এসেছেন তোমরা তা আঁকড়ে ধর এবং তিনি যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাক।” (সূরা হাশর/৭)

(১২ পৃষ্ঠায় দেখুন)

তাফসীরুল কুরআন: 

তাফসীরুল কুরআন : আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং নায়েবে  নবী, ওয়ারাছাতুল আম্বিয়াগণকে সাধারণ মানুষের মত আহবান করা নিষেধ

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’ বা ইলমধারী মুনাফিকদের পরিচয় ও পরিণতি

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’ বা ইলমধারী মুনাফিকদের পরিচয় ও পরিণতি

তাফসীরুল কুরআন : উলামায়ে ‘ছূ’ বা ইল্মধারী মুনাফিকদের পরিচয় ও পরিণতি