তাফসীরুল কুরআন: গীবতকারী ও চোগলখোর ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবেনা এবং তাদের দোয়াও কবুল হয়না

সংখ্যা: ১০৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

-পীরে কামিল, হাফিয, ক্বারী, মুফতী, আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুহম্মদ শামসুদ্দোহা

(ধারাবাহিক)

          বর্ণিত আছে, একবার একজন বেটে  মহিলা আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মহান খিদমতে হাযির হন। ফিরে যাওয়ার সময় তাঁকে উদ্দেশ্য করে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বললেন, “মহিলাটা কত বেটে!” তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “হে আয়িশা (রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা)! এভাবে বললে গীবত হবে।

          এ বক্তব্যের দ্বারা আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা ও অন্যান্য উম্মুল মু’মিনীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্নাকে গীবতের প্রকৃতি বর্ণনা করলেন।

          সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ হাফ্স কবীর রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “এক রমাদ্বান মাসে রোযা না রাখা এতটুকু জঘন্য নয় যতখানি জঘন্য একজন লোকের গীবত করা।”

          তিনি আরো বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোন হক্কানী-রব্বানী আলিম-এর গীবত করবে, সে ক্বিয়ামতের দিন এমনভাবে উত্থিত হবে যে, তার চেহারায় লিখা থাকবে, এ ব্যক্তি আল্লাহ্ পাক-এর রহমত থেকে বঞ্চিত। কেননা, আল্লাহ্ পাক-এর রহমত তো হক্কানী-রব্বানী তথা মুহ্সিন বা নেক্কার ব্যক্তিদের নিকটবর্তীই ছিলো। আর ঐ গীবতকারী হতভাগা, হতচ্ছাড়া নেক্কারদের নিকটবর্তী নিজেতো হয়নি, অপর কেউ যাতে তাদের নিকটবর্তী হয়ে আল্লাহ্ পাক-এর মহান রহমতের নীচে আসতে না পারে সেই অপচেষ্টাই করেছিলো।

          তাই হাদীস শরীফে রয়েছে, “ক্বিয়ামতের দিন গীবতকারী ব্যক্তির চেহারা পিছন দিকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। (সম্ভবতঃ পার্থিব জীবনে আল্লাহ্ পাক-এর রহমতের খাজিনা ওলী আল্লাহ্দের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখার ফল প্রদান স্বরূপ ঐরূপ পরিস্থিতি হবে)” হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে,

عن انس بن مالك رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لما عرج بى مررت بقوم لهم اظفار من نحاس يخمشون وجوههم وصدورهم فقلت من هؤلاء ياجبريل؟ قال: هؤلاء الذين يأكلون لحوم الناس ويقعون فى اعراضهم.

অর্থঃ- “সাইয়্যিদুনা হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, মি’রাজ রাতে আমি এমন কিছু লোকের নিকট দিয়ে পথ অতিক্রম করেছিলাম যারা (কঠিন শাস্তিস্বরূপ) নিজেদের মুখমন্ডল ও বক্ষদেশ বিরাটকায় ধারালো তামার নখের দ্বারা খামচাচ্ছিলো। হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস্ সালামকে তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, এরা দুনিয়াতে গীবত করে মানুষের মরা লাশের গোশ্ত ভক্ষণ করতো এবং তাদের মান-ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলতো।” (আবূ দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ৩২১ পৃষ্ঠা)

হিকায়েত ঃ যদি প্রশ্ন করা হয়, “মাছের মুখে কোন জিহ্বা নেই কেন?” তাহলে এর উত্তর বলা হয়, “আল্লাহ্ পাক সাইয়্যিদুনা হযরত আদম আলাইহিস্ সালামকে সৃষ্টি করার পর ফেরেশ্তাদের আদেশ করলেন তাঁকে সিজ্দা করতে। তখন একমাত্র ইবলিস শয়তান ব্যতীত সকলেই তাঁকে সিজ্দা করলেন। আল্লাহ্ পাক ইবলিসকে শাস্তিস্বরূপ দুনিয়াতে বিতাড়িত করলেন। অতঃপর ইবলিস সমুদ্রের দিকে গমন করলে সর্বপ্রথম মাছের সাথে তার সাক্ষাত হয়। তখন মাছকে সাইয়্যিদুনা হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম-এর সৃষ্টির সংবাদ শুনিয়ে ইবলিস বললো, “তিনি সমুদ্র এবং স্থলভাগের প্রাণীদেরকে শিকার করবেন।” ইবলিসের মুখে একথা শুনে সমুদ্রের অপরাপর প্রাণীদেরকে উক্ত সংবাদ জানিয়ে দেয়ার ফলে আল্লাহ্ পাক সব মাছকে জিহ্বা থেকে বঞ্চিত করে দেন। (অসমাপ্ত)

তাফসীরুল কুরআন: গীবতকারী ও চোগলখোর ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবেনা এবং তাদের দোয়াও কবুল হয়না

তাফসীরুল কুরআন: সাইয়্যিদুনা হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামগণ ইলমে গায়েব উনার মূরিস (যাঁর নিকট হতে উত্তারিধার প্রাপ্ত হওয়া গেছে) আর সাইয়্যিদুনা আউলিয়া উল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ হলেন উনাদের ওয়ারিস বা উত্তারাধিকারী

তাফসীরুল কুরআন

তাফসীরুল কুরআন: 

তাফসীরুল কুরআন: আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং নায়েবে  নবী, ওয়ারাছাতুল আম্বিয়াগণকে সাধারণ মানুষের মত আহবান করা নিষেধ