তাফসীরুল কুরআন তাফসীরুল কুরআন হক্ব ও বাতিলের মাপকাঠি (৩) -পীরে কামিল, হাফিয, ক্বারী, মুফতী, আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুহম্মদ শামসুদ্দোহা

সংখ্যা: ১২০তম সংখ্যা | বিভাগ:

 يايها الذين امنوا ان تتقوا الله يجعل لكم فرقانا ويكفر عنكم سياتكم ويغفرلكم والله ذوالفضل العظيم.

অর্থঃ- “হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহ্ পাককে ভয় কর, তবে আল্লাহ্ পাক তোমাদেরকে ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার শক্তি দিবেন, তোমাদের পাপ মোচন করবেন আর তোমাদের ক্ষমা করবেন এবং আল্লাহ্ পাক অতিশয় অনুগ্রহশীল।” (সূরা আনফাল/২৯)  তৃতীয় পুরস্কারঃ ويغفرلكم. অর্থঃ- “এবং তোমাদের ক্ষমা করবেন। يغفر কলেমাটি غفر কলেমা থেকে এসেছে। এর অর্থ ক্ষমা করা। এর مفعول বা কর্ম ذنوب অথবা سيئات উহ্য আছে। ২য় ও ৩য় পুরস্কারের মধ্যে পার্থক্য এরূপে হতে পারে যে, তাক্বওয়ার ন্যায় মহান ও শক্তিশালী গুণ অর্জন করার জন্য (১) দুনিয়াতে তোমাদের গুণাহ্ গোপন করে রাখব এবং আখিরাতে ক্ষমা করে দিব। (২) গুণাহে কবীরা গোপন করে রাখব আর ছগীরা ক্ষমা করে দিব, (৩) পুরাতন গুনাহ্ গোপন করে নতুন গুণাহ্ ক্ষমা করে দিব। (রুহুল মায়ানী) পরিশেষে নতুন বাক্য والله ذو الفضل العظيم.  অর্থঃ- “আল্লাহ্ তায়ালা অতিশয় অনুগ্রহশীল” দ্বারা পূর্বকৃত ওয়াদা বা প্রতিশ্রুতির দৃঢ়তা ঘোষণা করেছেন। অর্থাৎ মহীয়ান, গরীয়ান আল্লাহ্ পাক এত বেশী মেহেরবাণী দেখিয়ে থাকেন যে, বান্দার দাবী-দাওয়ার পূর্বেই প্রচুর ও অঢেল এমনিতেই দিয়ে থাকেন। এরপরও এটা কি করে সম্ভব যে, তিনি ওয়াদা করা সত্ত্বেও তিনি তা পূরণ করবেন না। মনে হচ্ছে যেন আল্লাহ্ পাক তাঁর বিশাল ফযল-করমের ফল্গুধারা বর্ষণে বলছেন যে, বান্দা! তুমি গ্রহণকারী হও, আমি তো প্রদান করার জন্য প্রস্তুত আছি।      আলোচ্য আয়াত শরীফের লতীফা বা সুক্ষ্মতা ঃ –         (১) কাফিরের উপর নেক আমল অর্থাৎ নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি ফরয নয় এবং বদ আমল অর্থাৎ শরাব পান, শুকর ভক্ষণ ইত্যাদি হারামও নয়। কারণ এগুলো তাক্বওয়ার হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। আর তাক্বওয়ার স্থান ঈমানের পরে। এ জন্যই কাফির ঈমানদার হলে তার কুফরী অবস্থার নামায, রোযা ক্বাযা করতে হয়না এবং শরাব পান ও শুকর ভক্ষণের শাস্তিও ভোগ করতে হয়না। তবে, এটা দুনিয়ার সাথে সম্পর্কিত শরয়ী বিধান। তওবা না করলে আখিরাতে কুফরীর জন্য ও বদ আমলের জন্য শাস্তিভোগ করতে হবে।  যেমন, আল্লাহ্ পাক বলেন, قالوا لم نك من المصلين ولم نك نطعم المسكين.  অর্থঃ- “তারা বলবে, আমরা নামায পড়তাম না, অভাবগ্রস্তকে খাদ্য দিতাম না।” (সূরা মুদ্দাছ্ছির/৪৩, ৪৪)        (২) মহান আল্লাহ্ পাক মু’মিন-মুত্তাক্বী বান্দার অন্তরে একটা নূর দান করেন যার প্রভাবে ঐ বান্দা ভাল-মন্দ কাজ ও মানুষকে প্রথম দর্শনেই পার্থক্য করে নিতে পারে। যদি সাধারণ মু’মিন-মুত্তাক্বীই এই যোগ্যতা লাভ করতে পারেন তাহলে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি কেন মুখলিছ ও মুনাফিকদেরকে চিনতে পারবেন না? অবশ্যই পারেন বৈ কি!

সাইয়্যিদুনা হযরত উমর ফারুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে “ফারুক” অর্থাৎ ভাল-মন্দ কাজ ও মানুষের মধ্যে পার্থক্যকারী লক্বব মুবারক প্রদান এই আয়াত শরীফের উদাহরণ বটে। অর্থাৎ যেন মু’মিন-মুত্তাক্বীর অন্তরই হচ্ছে কিতাব বা মুফ্তী।

(৩) কোন কোন ভাগ্যবান বান্দা এমনও আছেন যাদেরকে আল্লাহ্ পাক ঈমানের সাথে সাথে বরং আগে আগে ফুরক্বান দান করেন। যেমন, সাইয়্যিদুনা হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যিনি ইসলাম কবুলের পূর্বে কখনো শরাব, জুয়া, ব্যভিচার ইত্যাদির ধারে কাছেও যাননি। তিনি নিজেই বলেন, আমার অন্তর বলত যে, এসব মন্দ কাজ। আর কেনই বা তা হবে না- তাঁকে তো আল্লাহ্ পাক তাঁর জামীলুশ্ শিয়াম, হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খলীল বা সাথী হিসেবে রোজে আযল থেকেই গ্রহণ করে রেখেছিলেন।

বলাবাহুল্য যে, (الست) ‘আলাস্তু’ দিবসেই (يايها الذين امنوا) ‘ইয়া আইয়্যূহাল লাযীনা”-এর খেতাবে মর্যাদা ম-িত হয়ে গিয়েছিলেন।

 তাফসীরুল কুরআন হক্ব ও বাতিলের মাপকাঠি (৪)

তাফসীরুল কুরআন : মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল

তাফসীরুল কুরআন: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল

তাফসীরুল কুরআন ক্বমীছ বা কোর্তা মুবারকের বুযুর্গী

তাফসীরুল কুরআন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল