তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’ বা ইল্মধারী মুনাফিকদের পরিচয় ও পরিণতি- ৪

সংখ্যা: ১১৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

-পীরে কামিল, হাফিয, ক্বারী, মুফতী, আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুহম্মদ শামসুদ্দোহা

          আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো ইরশাদ করেন,

ان اهون الخلق على الله العالم يزور العمال.

অর্থঃ- “আল্লাহ্ পাক-এর নিকট সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট ও ঘৃণিত সেই ব্যক্তি, যে আলিম হওয়া সত্ত্বেও সরকারের সাথে মেলামেশা করতে থাকে।” (কানযুল উম্মাল) হাদীস শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে,

ما من عالم اتى صاحب سلطان طوعا الا كان شريك فى كل يعذب بما به فى نار جهنم.

অর্থঃ- “যে কোন আলিম নিজের ইচ্ছায় সরকারের দুয়ারে ধর্ণা দিবে সে নিশ্চয়ই জাহান্নামের প্রত্যেক প্রকার আযাবে শরীক হবে।”

অর্থাৎ সরকার যেসব শরীয়তের বরখিলাফ কাজ করে জাহান্নামের আযাবের উপযুক্ত হবে এ আলিমও সেসব আযাবে সরকারের সাথে শরীক হবে। কারণ, এ আলিম তার চোখের সামনে হারাম কাজ হতে দেখেও বোবা শয়তানের মতো চুপ করেছিলো এমনকি, ঐ হারামকে সমাজে প্রতিষ্ঠার জন্য মিথ্যা জায়িয ফতওয়া (যুক্তি) তালাশ করে বেড়াত। কেননা, হারামের পক্ষে কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, ইজ্মা ও ছহীহ্ ক্বিয়াসের ফতওয়া পাওয়া অসম্ভব।

হাদীস শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে,

ان فى النار اطحى تطحان علماء السوء طحنا. (ابن عساكر)

অর্থঃ- “জাহান্নামের মধ্যে খাছ এক প্রকার যাতা থাকবে, উলামায়ে ‘ছূ’ অর্থাৎ অসৎ অর্থলোভী সরকার ঘেষা, উম্মতের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিকারী আলিম, যারা হবে তাদেরকে সেই যাতার দ্বারা নিষ্পেষণ করা হবে।”

মোটকথা, আলিম ভাল ও উত্তম হলে যেমন তার চেয়ে ভাল ও উত্তম চরিত্রবান আর নেই তেমনি আলিম মন্দ ও নিকৃষ্ট হলে অর্থাৎ লোভী হলে তার চেয়ে মন্দ ও নিকৃষ্টও আর কেউ নেই।      তাদের সর্ম্পকেই হাদীস শরীফে বলা হয়েছে,

علماء هم شر من تحت اديم السماء من عندهم تخرج الفتنة وفيهم تعود.

অর্থঃ- “ঐসব আলিমরা হবে আকাশের নীচে সর্বাপেক্ষা মন্দলোক, তাদের থেকেই (দ্বীন সংক্রান্ত) ফিৎনা প্রকাশ পাবে; অতঃপর সেই ফিৎনা তাদের প্রতিই প্রত্যাবর্তন করবে।” (বায়হাক্বী শরীফ)

“আবূ দাউদ শরীফ” ও “তিরমিযী শরীফে” বর্ণিত হয়েছে, انما اخاف على امتى الائمة المضلين.

অর্থঃ- “আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি আমার উম্মতের ব্যাপারে পথ ভ্রষ্টকারী নেতাদের খুব বেশী ভয় করছি।” “মুসলিম শরীফের” রেওয়ায়েতে বর্ণিত আছে, আখিরী রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

يكون بعدى ائمة لايهتدون بهدى و لايستنون بسنتى وسيقوم فيهم رجال قلوبهم قلوب الشياطين فى جثمان انس.

অর্থঃ- “আমার (ইন্তিকালের) পরে এমন কতিপয় নেতার (নামধারী মাওলানার) আবির্ভাব ঘটবে, যারা আমার নির্দেশিত পথে চলবেনা এবং আমার সুন্নত ও তরীক্বানুযায়ী আমল করবেনা। আবার তাদের মধ্যেও এমন কিছু লোকের আবির্ভাব ঘটবে যারা গড়নে-গঠনে এবং চেহারা-অবয়বে মানুষের মতই হবে; কিন্তু তাদের অন্তরসমূহ হবে শয়তানের ন্যায়।”   অন্য হাদীস শরীফে রয়েছে,

قولهم كقول الانبياء وفعلهم كفعل الفراعنة.

অর্থঃ- “তাদের কথা হবে নবীগণের ন্যায় কিন্তু কাজ হবে ফিরাউনের মতো।” (অসমাপ্ত)

তাফসীরুল কুরআন : উলামায়ে ‘ছূ’ বা ইল্মধারী মুনাফিকদের পরিচয় ও পরিণতি

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’ বা ইল্মধারী মুনাফিকদের পরিচয় ও পরিণতি

তাফসীরুল কুরআন উলামায়ে ‘ছূ’ বা ইল্মধারী মুনাফিকদের পরিচয় ও পরিণতি- ৪

তাফসীরুল কুরআন: মানুষ ও জ্বীনের মধ্যে যারা শয়তান; তারাই  নবী-রসূল ও আউলিয়া-ই-কিরামগণের শত্রু

তাফসীরুল কুরআন: মানুষ ও জ্বীনের মধ্যে যারা শয়তান; তারাই নবী-রসূল ও আউলিয়া-ই-কিরামগণের শত্রু (২)