النساء حبائل الشيطن.
“মেয়েরা হচ্ছে শয়তানের ফাঁদ।” (শিহাব)
হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, একদা আমি এবং হযরত ফাতিমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দরবার শরীফে গেলাম; দেখলাম রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাঁদছেন। আমরা সবিনয়ে আরয করলাম, ইয়া রসুলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি এভাবে কাঁদছেন কেন? জাওয়াবে তিনি বললেন, আমি মি’রাজের রাত্রিতে মহিলাদেরকে কঠিন আযাবে দেখেছিলাম। আজ হঠাৎ সেই ভয়াবহ আযাবের দৃশ্য মনে পড়ায় আমার চোখ থেকে অশ্রু ঝরছে। তাঁর উক্তি শুনে হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সবিনয়ে আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মি’রাজ রজনীতে আপনি কি কি ভয়াবহ দৃশ্য দেখেছেন? হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ১। আমি জনৈকা মহিলাকে তার চুলে বেঁধে লটকিয়ে রাখতে দেখেছি। এ সময় তার মাথা থেকে মগজ বের করা হচ্ছিল। ২। অপর এক মহিলাকে দেখলাম, তার জিহ্বা বেঁধে তাকে লটকিয়ে রাখা হয়েছে এবং তার হাত দু’টি পিছনের দিকে বেরিয়ে রয়েছে। ৩। অন্য এক মহিলাকে দেখলাম, তার বক্ষের বিশেষ স্থান বেঁধে তাকে লটকিয়ে রাখা হয়েছে এবং তার হস্তদ্বয়কেও পিছনের দিকে নিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। আর এ সময় বিষাক্ত ‘যাক্কুম’ (এক প্রকার কাঁটাযুক্ত ফলদ্বার বৃক্ষের রস) ফলের রস নিংড়িয়ে তা ফোঁটা ফোঁটা করে তার গলায় দেয়া হচ্ছে। ৪। আরেকজন মহিলাকে দেখলাম, তার হাত, পা ও কপাল বরাবর বেঁধে তাকে লটকিয়ে রাখা হয়েছে এবং তার প্রতি বিষাক্ত সাপ-বিচ্ছুকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা তাকে দংশন করছে। ৫। অপর এক মহিলাকে দেখলাম, সে নিজেই নিজের দেহ ছিঁড়ে ফেঁড়ে ভক্ষণ করছে এবং তার নীচে আগুন প্রজ্জ্বলিত রয়েছে। ৬। অন্য এক মহিলাকে দেখলাম, তার দেহকে আগুনের কাঁচি দ্বারা কেটে টুকরো টুকরো করা হচ্ছে। ৭। কালো চেহারাধারী আরেক মহিলাকে দেখলাম, সে তখন স্বীয় নাড়ি-ভূঁড়ি খাচ্ছিল। ৮। আমি একজন বোবা, অন্ধ ও বধির মহিলাকে দেখলাম, তাকে আগুনের সিন্দুকের মাঝে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তার মাথা থেকে তখন মগজ গলে গলে বের হচ্ছিল। আর তার দুর্গন্ধ, শ্বেত এবং কুষ্ঠরোগীর চেয়েও উৎকট ছিল। ৯। অপর মহিলাকে দেখলাম শুকরের ন্যায় মাথা বিশিষ্ট এবং গাঁধার ন্যায় দেহ বিশিষ্ট, তাকে হাজারো রকমের আযাব-গযব প্রদান করা হচ্ছে। ১০। কুকুরের দেহ বিশিষ্ট জনৈকা মহিলাকে দেখলাম, বিষাক্ত সাপ-বিচ্ছু তার মুখ দিয়ে প্রবেশ করে তা তার শরমগাহ কিংবা পিছনের রাস্তা দিয়ে বের হচ্ছে। আর আযাবের ফেরেশতারা তখন আগুনের গুর্জ দ্বারা তাকে বেদমভাবে প্রহার করছে। প্রিয় নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুখে মহিলাদের ভয়াবহ আযাবের ঘটনা শুনে হযরত ফাতিমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা দাঁড়িয়ে গেলেন এবং সবিনয়ে আরয করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্, ইয়া হাবীবাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উপরোক্ত মহিলাদেরকে কোন বদ্ আমলের কারণে কঠিন শাস্তি দেয়া হচ্ছিল? রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “প্রথম যে মহিলাকে আযাব দেয়া হচ্ছিল তার কারণ হচ্ছে, সেই মহিলা পর-পুরুষদের সামনে নিজের মাথার চুলকে খুলে রাখত। ফলে তা পর-পুরুষদের দৃষ্টিগোচর হত। দ্বিতীয় মহিলা হচ্ছেঃ সেই মহিলা স্বীয় জিহ্বা বা বাকযন্ত্রের সাহায্যে নিজের স্বামীকে কষ্টদায়ক কথা-বার্তা বলত। তৃতীয় মহিলা হচ্ছেঃ স্বামীর অনুমতি ছাড়া অন্যের শিশু বাচ্চাকে নিজের বুকের দুধ পান করাত। চতুর্থ মহিলা হচ্ছেঃ স্বামীর বিনা অনুমতিতে ঘরের বাইরে চলে যেত এবং স্বাভাবিক মাজুর ও সন্তান হওয়ার কারণে মাজুর অবস্থায় গোসল করতনা। পঞ্চম মহিলা হচ্ছেঃ পরপুরুষকে দেখাবার জন্যে নিজেকে সুসজ্জিত করত এবং মানুষের কাছে পরনিন্দা করে বেড়াত। ষষ্ঠ মহিলা হচ্ছেঃ পর-পুরুষকে নিজের দৈহিক সৌন্দর্য ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দেখিয়ে বেড়াত। সপ্তম মহিলা হচ্ছেঃ শক্তি-সামর্থ থাকা সত্ত্বেও রীতিমত ওযূ ও গোসল করতনা এবং নামাযও পড়তনা। অষ্টম মহিলা হচ্ছেঃ মিথ্যা কথা বলত এবং অন্যের দোষ বলে বেড়াত। নবম মহিলা হচ্ছেঃ নিজের মনে স্বীয় স্বামীর প্রতি হিংসা বিদ্বেষ পোষণ করত। দশম যে মহিলার শাস্তি হচ্ছিল তা হচ্ছেঃ বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও পর পুরুষের সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হত।” (দুররাতুন নাসিহতন)
-সাইয়্যিদা মুছাম্মত মুহসিনা হুমায়রা