-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ শোয়াইব আহমদ
যেসব কাজ করলে গুণাহ্ হয়, ছওয়াব কমে যায়, অবশ্য নামায নষ্ট হয়না, সেসব কাজ পরিহার করা উচিত। অন্যথায় নামায মাকরূহের সাথে আদায় হবে। নামাযের মাকরূহগুলো দু’প্রকার, তাহ্রীমী ও তানযীহী। নামাযে মাকরূহ তাহ্রীমী কাজ সংঘটিত হলে নামায দোহ্রিয়ে পড়া ওয়াজিব আর মাকরূহ তানযীহী কাজ সংঘটিত হলে নামায দোহরিয়ে পড়া মুস্তাহাব। নিম্নে মাকরূহ্ তানযীহীসমূহ উল্লেখ করা হলো-
(ধারাবাহিক)
(৩৪) সিজদার সময় এক পা যমীন থেকে উপরে উঠানো।
(৩৫) কান পযর্ন্ত হাত উঠানোর সময় মাথা নীচু করা বা পিচনের দিকে ঘাড় বাঁকা করা কিংবা ঘাড়ের দু’সীমার উপরে হাত না উঠিয়ে তাকবীর বলা।
(৩৬) সিজদার সময় বোগলের সাথে বাহু মিলিয়ে রাখা।
(৩৭) ইমাম অনুপস্থিত থাকা সত্বে ইক্বামত বলে তাঁর জন্য দাঁড়িয়ে বিলম্ব করা।
(৩৮) নামাযের মধ্যে বা নামাযের পর কপালে ধুলা-বালি, ঘাম মুছে ফেলা।
(৩৯) নামাযের মধ্যে থেকে থুথু ফেলা। মুছল্লীর কাশি আসার কারণে যদি মুখে থুথু আসে অথবা নাসিকা হতে কফ বের হয় তবে পরিধানের কাপড়ে মুছে ফেলবে।
(৪০) যে ফরয নামাযের পর সুন্নত ও নফল আছে সে ফরয নামায আদায় করে ইমাম স্থান ছেড়ে ডানে-বামে, সামনে-পিছনে কিংবা অন্যত্র গিয়ে বাকী সুন্নত নামায আদায় করবে। অন্যথায় মাকরূহ হবে।
(৪১) যে ফরয নামাযের পর সুন্নত ও নফল নামায নেই তা পড়ার পর ইমাম ক্বিবলামুখী বসে থাকলে মাকরূহ্ তানযীহী হবে। এক্ষেত্রে ইমামকে মুক্তাদীর দিকে ফিরে দোয়া-মুনাজাত করতে হবে।
(৪২) সকল নামাযে প্রথম রাক্য়াত হতে দ্বিতীয় রাক্য়াতে তিন আয়াত বা তার অধিক দীর্ঘ করা । (৪৩) ফরয নামাযে একই সূরা উভয় রাক্য়াতে পাঠ করা।
(৪৪) নামাযের মধ্যে সিজদার স্থান ব্যতীত অন্য দিকে দৃষ্টি করা।
(৪৫) যে ফরয নামাযের পর সুন্নত নামায আছে সে নামাযের সালাম ফিরানোর পর ইমামের দীর্ঘ মুনাজাত করা মাকরূহ। সেখানে নিম্নোক্ত দোয়া-মুনাজাত করা মুস্তাহাব সুন্নত।
দোয়া-
اللهم صل على سيدنا محمد وسيلتى اليك واله وسلم. ربنا اتنا فى الدنيا حسنة وفى الاخرة حسنة وقنا عذاب النار. رب ارحم هما كما ربيانى صغيراسبحن ربك رب العزة عما يصفون وسلم على المرسلين والحمد لله رب العلمين.
উচ্চারণঃ “আল্লাহুম্মা ছল্লি আলা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিঁও ওয়াসীলাতী ইলাইকা ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লিম। রব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাঁও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতাঁও ওয়াক্বিনা আযাবান্নার। রর্ব্বি হামহুমা কামা রব্বাইয়ানী ছগীরা। সুবহানা রব্বিকা রব্বিল ইজ্জাতি আম্মা ইয়াছিফুন ওয়া সালামুন আলাল মুরসালীনা ওয়াল হামদু লিল্লাহি রব্বিল আলামীন।” অর্থঃ- “আয় আল্লাহ্ পাক! আপনি ছলাত (খাছ রহমত) ও সালাম (খাছ শান্তি) নাযিল করুন আমাদের আঁকা হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপর যিনি আপনার প্রতি আমার উসীলা এবং তাঁর আল আওলাদগণের উপরও ছলাত-সালাম নাযিল করুন। আয় আমাদের বর! আমাদেরকে দুনিয়া এবং আখিরাতে ভালাই দান করুন এবং জাহান্নামের আযাব থেকে নাযাত দান করুন। আয় রব! আপনি আমার পিতা-মাতার উপর এরূপ রহম করুন যেভাবে ছোট থাকতে আমার উপর তাঁরা দয়াপরবশ ছিলেন। সমস্ত পবিত্রতা আপনার রবের তিনি সম্মানিত ও পবিত্র যা তারা বর্ণনা করে তা থেকে। নবী-রসূলগণের পতি সালাম বর্ষিত হোক। সমস্ত প্রশংসা তামাম আলমের রব আল্লাহ্ পাক-এর নিমিত্তে।”
শুধুমাত্র আরবী জানলেই কুরআন শরীফ বোঝা যায়না (৩)
ফিক্বহুস্ সুনান পুরুষ ও মহিলার নামাযের পার্থক্যের বয়ান
ফিক্বহুস্ সুনান- মুসাফিরের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়ার বয়ান
ফিক্বহুল হাদীছ ওয়াল আছার মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (১২৩)