(ধারাবাহিক)
সুওয়ালঃ- হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “মৃত্যু হচ্ছে গুণাহ্র কাফ্ফারা স্বরূপ।”
যখন মৃত্যু দ্বারা গুণাহসমূহের কাফ্ফারা আদায় হয়ে যায় তখন আখিরাতের দিনে অপমান, লজ্জা, অনুশোচনার কি অর্থ হতে পারে?
জাওয়াবঃ- কোন কোন গুণাহ্ সমূহ এমন যে, শুধু মৃত্যুই ঐ গুণাহ্র কাফ্ফারা স্বরূপ। আবার কোন কোন গুণাহ্র কাফ্ফারা হচ্ছে কবরের আযাব এবং কোন কোন গুণাহ্সমূহ এমন যে, যার কাফ্ফারা দোযখের আগুনে প্রবেশ করা এবং তাতে সাজা বা শাস্তি ভোগ ব্যতীত অন্য কিছু নয়। এই শাস্তির মধ্যে কোন ভালাই-কল্যাণ নেই। প্রত্যেক মর্দে মুসলমানের জন্য এটা জানা বা করা জরুরী যে, সে দুনিয়া থেকে বিদায়ের সময় এমন এক নূর নিজের সাথে নিয়ে যাবে যে নূরের মুকাবিলায় দোযখের আগুন ঠান্ডা ও শীতল হয়ে যাবে। এ জন্য প্রত্যেক মুসলমানের জন্য এটা জরুরী যে, সে দুনিয়াবী জিন্দেগীতে ভাল ও নেক কাজ করবে। যাতে এ নেক কাজের মাধ্যমে জাহান্নামের উত্তপ্ত, প্রজ্বলিত আগুনকে প্রতিরোধ করতে পারা যায়।
সুওয়ালঃ- পার্থিব ক্ষুধা দারিদ্রের মধ্যে আমরা এমন ভাবে জড়িত হয়ে পড়েছি (এবং উদরের চাহিদার জন্যে এমন সব কাজ করছি যার দরুণ) মনে হয় দোযখ আমাদের অদৃষ্টের লিখা বা আমরা দোযখের নিকটবর্তী হয়ে আছি।
“আমি বিরিয়ানী (এক প্রকার খাদ্য), আমি প্রজ্বলিত হয়েছি। (এবং কানুন হচ্ছে) জ্বলন্ত ব্যক্তিকে দ্বিতীয়বার জ্বালানো হয় না।” অর্থাৎ দুনিয়াবী অভাব, নিঃস্বতা, দৈন্য ইত্যাদির আগুনে আমাকে পোড়ানো হয়েছে, তাহলে দ্বিতীয়বার দোযখে আমাকে পুনরায় কেন জ্বালানো হবে? কেননা জ্বলন্ত বস্তুকে দ্বিতীয়বার জ্বালানো মানুষ নিরর্থক মনে করে। জাওয়াবঃ- সুস্বাদু খাদ্য, যেমন বিরিয়ানী, জর্দা এবং আরো অন্যান্য খাদ্য যা আগুন বা আতেশের (দাহিকা শক্তির মাধ্যমে সমাধা হয়) বাস্তবিক পক্ষে এগুলোর কোনই মূল্য বা কদর খোদা তাআ’লার দরবারে নেই।
কিন্তু ইশকের বাজীতে জ্বলাটা আল্লাহ্ পাক-এর জন্য এবং আল্লাহ্ পাক-এর (মুহব্বত-মারিফাত) ভাবনা-চিন্তায় হয়ে থাকে; এবং এই জ্বলাটার উপরই দোযখের আগুন হারাম এবং একথাও মনে রাখতে হবে দুনিয়ার আগুনে পতিত ব্যক্তিদের মেছাল হচ্ছে এই সমস্ত ভস্মীভূত, জ্বলন্ত বস্তু যেগুলোকে আগুন তড়িৎ গতিতে গ্রাস করে ফেলে। আর ইশকের আগুনে দগ্ধিভূত ঐ ব্যক্তি যাকে দেখা মাত্রই দোযখের আগুনের শীতলতাই বাড়তে থাকবে।
সুওয়ালঃ- দোযখের আগুনের সাথে, দরবেশের কি সম্পর্ক রয়েছে? দোযখ দাম্ভিক, তাকাব্বুর এবং ফিরআউনী সিফাত সম্পন্ন লোকদের জন্য। যেমন, এ সম্পর্কে ইরশাদে “দোযখ হচ্ছে অহংকারী, উদ্ধত ব্যক্তিদের ঠিকানা।” জাওয়াবঃ- দরবেশদের সাথে দোযখের আগুনের কোন জায়গারই কোন রকম দোস্তী নেই, দুশমনীও নেই।
আগুনের কি ক্ষমতা রয়েছে যে, সে দরবেশদেরকে কোন রকম তাকলীফ-কষ্ট দিবে। যেখানে তাঁরা পার্থিব আরাম আয়েশের সাথে কোন সম্পর্ক রাখেনা সেখানে দোযখের আগুন তাঁদের নিকট কি প্রকারে এবং কিভাবে আসবে? ফকর কার নিকট এবং ফকিরী কোথায়? অভাব হচ্ছে দুনিয়াদার লোকদের কষ্টের কারণ; দুনিয়ার রুটি থেকে দরবেশদের পলায়ন করা চাই। কারণ এ দরবেশীই তার সীনা বা ক্বালবের জ্যোতি প্রসারনে (দ্রুত সহায়তা করবে)।
এটা ব্যতীত দরবেশকে বাতিনী সিফাতের অধিকারী হওয়া জরুরী। কেননা দরবেশীর হাসান ও জামাল তার পথ প্রদর্শক। অভাব ও দারিদ্রতা সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে,
كاد الفقر ان يكون كفرا.
অর্থ- “অতি দরিদ্রতা থেকে কুফরীর গন্ধ আসে।” য (অসমাপ্ত)
বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আওলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার