মূলতঃ ‘আল বাইয়্যিনাত শরীফ’ সম্পর্কে ইমাম-মুজতাহিদ, আউলিয়া-ই-কিরামগণের প্রশংসামূলক বর্ণনা এবং বাইয়্যিনাত শরীফের প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক ইমামুল আইম্মা, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, কুতুবুল আলম, মুযাদ্দিদুয্ যামান, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর নাম মুবারকের পূর্বে ও পরে সন্নিবেশিত সম্মানসূচক লক্বব মুবারক, মহান আল্লাহ্ পাক এবং তাঁর প্রিয় হাবীব সাইয়িদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ফজল-করম ও ইহ্সান এবং চরম সন্তুষ্টি রেযামন্দির সুসংবাদ। যা তাঁর পরম কামিয়াবী বা সফলতার বহিঃপ্রকাশ। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন,
يبشرهم ربهم برحمة منه ورضوان وجنت لهم فيها نعيم مقيم.
অর্থঃ- “তাদেরকে সু-সংবাদ দিচ্ছেন তাদের মহান প্রতিপালক স্বীয় দয়া ও সন্তুষ্টির এবং সেই জান্নাতের যেখানে তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী শান্তি।” (সূরা তওবা/২১)
আরো ইরশাদ করেন,
الا ان اولياء الله لاخوف عليهم ولاهم يحزنون الذين امنوا وكانوا يتقون لهم البشرى فى الحياة الدنيا وفى الاخرة لاتبديل لكلمت الله ذلك هو الفوز العظيم.
অর্থঃ- “সাবধান! যারা আল্লাহ্ পাক-এর ওলী বা বন্ধু তাঁদের কোন ভয়-ভীতি নেই এবং তাঁদের চিন্তা-পেরেশানীর কারণ নেই। যারা ঈমান এনেছে এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করেছে তাঁদের জন্য সু-সংবাদ রয়েছে দুনিয়াতে এবং আখিরাতে। আর আল্লাহ্ পাক-এর কালাম পাকে (ওয়াদার) মধ্যে কোন পরিবর্তন নেই। এটাই হচ্ছে তাঁদের জন্য মহা সফলতা।” (সূরা ইউনূছ/ ৬২-৬৪)
হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আবু যর গিফারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, একদা আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, “ইয়া রসূলাল্লাহ্, ইয়া হাবীবাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সেই ব্যক্তি সম্পর্কে আপনি কি বলেন, যে ব্যক্তি নেক আমল করে অথচ মানুষ সেই কারণে তাঁর প্রশংসা করেন?” সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জাওয়াবে বলেন, ‘এটা হচ্ছে মু’মিনদের পার্থিব সুসংবাদ যা তাৎক্ষনিক প্রদান করা হয়।”(তাফসীরে খাযিন- ২/৩০৫, লুবাব- ১০/৩৬৭, মাযহারী- ৫/৪৩, মুসলিম শরীফ- ৪/২০৩৪, ইবনু মাজাহ্- ২/১৪১৭)
“তাফসীরে কুরতুবী”-এর ২য় খ-ের ৩৫৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, “হযরত আবু ইছহাক ছালাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, আমি হযরত আবু বকর মুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ্ জাওয়াকী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে বলতে শুনেছি, “একদা আমি হযরত আবু আব্দুল্লাহ্ হাফিয রহমতুল্লাহি আলাইহিকে স্বপ্নে দেখলাম, তিনি পাগড়ী এবং রুমাল পরিহিত অবস্থায় একটি সাওয়ারীর উপর আরোহণ করেছেন। আমি তাঁকে সালাম করতঃ বললাম, ‘আপনাকে স্বাগতম। আমরা এখনো আপনাকে স্মরণ করছি এবং আপনার উত্তম গুণাবলী আলোচনা করছি।’ তখন তিনি বললেন, ‘আমরাও আপনাকে স্মরণ করছি এবং আপনার চারিত্রিক গুণাবলী সম্পর্কে আলোচনা করছি।’ আর আল্লাহ্ পাক বলেছেন, তাঁদের (আউলিয়া-ই-কিরাম) জন্য রয়েছে সু-সংবাদ দুনিয়া ও আখিরাতে।” মূলতঃ হক্ব ওলী আল্লাহ্র ক্ষেত্রে ছানা-ছিফত, মর্যাদা, মর্তবার আলোচনা অব্যাহত থাকা আল্লাহ্ পাক-এর তরফ হতে আউলিয়া-ই-কিরামগণের প্রতি সু-সংবাদ যা আল্লাহ্ পাক-এর চরম সন্তুষ্টি পাওয়ার পূর্বাভাষ এবং কামিয়াবী লাভের আলামত।” (তাফসীরে খাযিন- ২/৩০৫, যাদুল মাছির- ৪/৩৯, মাযহারী- ৫/৪৩, রুহুল বয়ান- ৪/৬১, লুবাব- ১০/৩৬)