সনদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রিসালতে পানাহ, ছাহিবু কা’বা কাওসাইন আওআদনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিমল হাসি-খুশি

সংখ্যা: ১০৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

-মুহম্মদ সাইফুল হাবীব

لقد كان لكم فى رسول الله اسوة حسنة.

অর্থঃ- “তোমাদের জন্য তোমাদের রসূল (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যেই রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ।” (সূরা আহ্যাব/২১)

বিশ্ব জাহানের সর্বাপেক্ষা সুন্দরতম বাশার হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পূর্ণ জীবন মুবারকই হলো গোটা মানবজাতির জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শ। মানব জীবনের এমন কোন দিক নেই, যেখানে তাঁর অনুপম আদর্শের পদরেখা পড়েনি। জীবনের সকল ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন নিপুণতায় সমুজ্জ্বল, আপন মহিমায় ভাস্বর। তাইতো আমরা তাঁর পবিত্র সীরত মুবারকে কিছু অনাবিল হাসি-খুশির সন্ধান পাই। কিন্তু তাঁর এই নির্মল হাসি-খুশির মধ্যে কোন রঙ্গ-রস, তামাশা, চটুলতা, উদ্দমতা, অশালীনতা,  মিথ্যাচারিতার বিন্দুমাত্র ঠাঁই ছিলোনা।           এ প্রসঙ্গে হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, একদিন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ আরজ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্, ইয়া হাবীবাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনিও কি হাসি-খুশি করেন? জবাবে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “হ্যাঁ, আমিও মাঝে মাঝে হাসি-খুশি করি। তবে তা কেবল সত্য কথা ও সত্য বিষয় অবলম্বনে করে থাকি।” (শামায়েলে তিরমিযী)          নিম্নে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কতিপয় হাসি-খুশিমূলক ওয়াকেয়া উল্লেখ করা হলো।          (১) একদা রসূলে আকরাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কয়েকজন ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের সাথে বসে খেজুর খাচ্ছিলেন। হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুও এ মজলিসে ছিলেন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং অন্যান্য ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ খেজুর খেয়ে বীচি গুলো হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সামনে রাখলেন। খাওয়া শেষে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “দেখ আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কতবড় পেটুক; সে কতগুলো খেজুর খেয়েছে,” হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ব্যাপারটি বুঝতে পেরে হাসি দিয়ে বললেন, “আমার সামনে তো বীচি আছে, কিন্তু আপনার সম্মুখে তো তাও নেই।” (২) একদিন রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে হঠাৎ করে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার মামার বোন তোমার কে হয়?” সরলমতি লোকটি মাথা নিচু করে ভাবতে শুরু করলেন। তার নিকট থেকে কোন জবাব না পেয়ে শেষ পর্যন্ত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই মুচকি হেসে বললেন, “কি আশ্চর্য! তুমি তোমার মাকেই ভুলে গেলে?”     (৩) হযরত আব্দুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নামক জনৈক ছাহাবী একটি বিড়াল ছানা পুষতেন। বিড়ালছানাটিকে তিনি প্রায়শঃই জামার আস্তিনের মধ্যে লুকিয়ে রাখতেন। এমনকি অনেক সময় বিড়াল ছানাটিকে তিনি ঐ ভাবে মসজিদে নিয়ে আসতেন। বিড়াল ছানাটির সাথে তার এ রকমভাব  লক্ষ্য করে একদা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “হে আবু হুরাইরা!” অর্থাৎ হে বিড়াল ছানার পিতা! এরপর থেকেই তিনি ‘আবু হুরাইরা’ নামে মশহুর হয়ে যান।      (৪) শের-ই-খোদা হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু একবার মাটিতে শুয়েছিলেন। এতে তাঁর মুখমন্ডলে কিছু ধুলা-বালি লেগে যায়। এমতাবস্থায় হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে দেখে বললেন, “হে আবু তুরাব! অর্থাৎ হে ধুলি কণার পিতা!”        (৫) একবার এক বেদুঈন ছাহাবী রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমতে হাযির হলো। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন কারণে ক্ষুব্ধ ও বিমর্ষ ছিলেন। হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ তাঁর এ ক্ষোভের অবস্থাটি আঁচ করে নিয়েছিলেন। তাই বেদুঈন লোকটি কিছু বলার ইচ্ছা প্রকাশ করলে উপস্থিত হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম বললেন, এখন কিছু বলো না। আমরা তাঁর চেহারা মুবারকে ক্ষোভের চিহ্ন দেখতে পাচ্ছি। সে লোকটি বললো, আল্লাহ্ পাক-এর কছম! যিনি তাঁকে সত্য নবীরূপে প্রেরণ করেছেন। আমি তাঁকে হাসাবোই। অতএব, আপনারা আমাকে বাঁধা দিবেননা। এরপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট গিয়ে আরজ করলেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ্, ইয়া হাবীবাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! শুনেছি দাজ্জাল মানুষের জন্য ছরীদ নিয়ে আসবে। আমি তার ছরীদ খাব, না ক্ষুধার জ্বালায় মৃত্যুকে বরণ করে নিব, না তার ছরীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ব এবং খুব পেট ভরে ছরীদ খেয়ে নিব? এরপর বলে দিব যে, আমি আল্লাহ্ পাক-এর প্রতি বিশ্বাস করি এবং তোকে অস্বীকার করি, এ ব্যাপারে  আপনার পরামর্শ কি?”

          কথাগুলো শুনে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এত হাসলেন যে, তাঁর মুখ মুবারকের ভিতরের অংশ পর্যন্ত দেখা গেল। এরপর তিনি বললেন, যে বিষয় দ্বারা আল্লাহ্ পাক মু’মিনগণকে দাজ্জাল থেকে বেপরোয়া করে দিবেন তা দ্বারা তোমাকেও বেপরোয়া করে দিবেন। অতএব, এ মুহূর্তে তোমাকে এ ব্যাপারে মাথা ঘামাতে হবে না।      মহানবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ধরণের  হাসি-খুশি করেছেন তা বাস্তবিকই আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। তাঁর এই হাসি-খুশির মধ্যে ফুটে উঠতো তাঁর নিষ্কলুষ চরিত্র, স্নেহ, ভালবাসা, মমতা, মুহব্বত, উজ্জল আভাদীপ্ত প্রতিভা, মানব প্রেমের অপরূপ দৃষ্টান্ত।

সাইয়্যিদুল জিননি ওয়াল ইনস, ইমামুল আউয়ালীন ওয়াল আখিরীন, খতীবুল আম্বিয়া হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হায়াতুন নবী

ইমামুল মুরসালীন, রহমতুল্লিল আলামীন, খাতামুন নাবিয়্যীন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মযদা-মতবা, শান-মান সকল নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণের চেয়ে অনেক উর্দ্ধে

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ছাহিবু মাক্বামি মাহমূদ, শাফউল উমাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়া সাল্লাম উনার শ্রেষ্ঠত্ব

সাইয়্যিদুল কাওনাইন, শাফিউল মুজনিবীন, ইমামুন নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলে বাইতগণের ফযীলত

সাইয়্যিদুল বাররি ওয়াল বাহর, ইমামুস সাক্বালাইন, তাজেদারে মদীনা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আওলাদগণের ফযীলত